মস্কোয় উষ্ণ বার্তা দিয়ে নীতি-নথিতে স্বাক্ষর জয়শঙ্করের
২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৬ পিএম | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৬ পিএম
যুদ্ধের জেরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক গত দু’বছর ঘটেনি। কিন্তু নয়াদিল্লি-মস্কোর সম্পর্ক তাতে আদৌ ক্ষুণ্ণ হয়নি, বছরের শেষে শীতার্ত মস্কোর মাটি থেকে সেই উষ্ণ বার্তাই দিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
বৃহস্পতিবার রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠকের পর তার বক্তব্য, ‘দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী এবং সুস্থির। বিশেষ কৌশলগত সহযোগী দুই দেশের যে রকমটা হওয়া উচিত সে রকমই। বহুপাক্ষিকতা, বহুমেরু বিশ্ব, দক্ষিণের গরিব দেশগুলির সামনে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে আমাদের।’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘জাতিসংঘ, এসসিও এবং ব্রিকস-এ আমাদের নেয়া অবস্থান ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ককে আরও পোক্ত করেছে। ভারত এবং রাশিয়া চায়, উদার এবং ন্যায্য এক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা।’ এর সঙ্গে ল্যাভরভ যোগ করেছেন, ‘ভারত ও রাশিয়া সম্পর্কের ভিত্তি হল পারস্পরিক সম্মান যা রাজনৈতিক ওঠাপড়ার সঙ্গে বদলায় না।’
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, জয়শঙ্কর আজ সাউথ ব্লকের স্বভাবসিদ্ধ নীতি অনুযায়ী ভারসাম্যের নীতিকেই সামনে নিয়ে আসতে চেয়েছেন আলোচনায়। সংলাপ এবং কূটনীতিই যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে থামাতে পারে সে কথা এক দিকে বলেছেন তিনি। অন্য দিকে, মস্কোর সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, মহাকাশ এবং পরমাণু ক্ষেত্রগুলিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য যথেষ্ট উদ্যোগী হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে আমেরিকা ও ইউরোপের রক্তচক্ষু তথা নিষেধাজ্ঞাকে আপাতত আমল দেননি তিনি।
আগামী চার বছর দ্বিপাক্ষিক নীতি কোন অভিমুখে যাবে, তার জন্য কূটনৈতিক আলোচনার একটি নথিতে উভয়ে সই করেছেন। আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ সংযোগ করিডর-এর ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো, পারস্পরিক বিনিয়োগের সুরক্ষায় আইনি কাঠামো তৈরি করার মতো বিষয়গুলিতে ঐকমত্য হয়েছেন জয়শঙ্কর এবং লাভরভ।
বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নয়াদিল্লি সম্পর্কে উদার মনোভাব নিতেই দেখা গিয়েছে। পশ্চিমের প্রবল চাপের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী দেশটির নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতা মস্কো পেয়ে এসেছে ইউক্রেনে হামলার পর থেকে। ভারত রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা তো কমায়নি, উল্টে বাড়িয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে রাশিয়ার থেকে সর্বাধিক অশোধিত তেল আমদানি করেছে ভারত গত দেড় বছরে। জাতিসংঘে শত চাপ সত্ত্বেও রাশিয়ার নাম করে ইউক্রেন হামলার জন্য আনা কোনও প্রস্তাবে ভোট দেয়নি মোদী সরকার। একবারই প্রধানমন্ত্রী মোদী সরাসরি পুতিনকে বলেছেন ‘এই সময় যুদ্ধের নয়।’ কিন্তু এই আপ্তবাক্যকে কাজে পরিণত করার জন্য মস্কোকে চাপ দিতে ভাতে মারার কোনও চেষ্টা মোদী সরকার করেনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে আজ ল্যাভরভ দরাজ ভাবে জানিয়েছেন, ভারতের সামরিক ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি এবং বিভিন্ন নতুন রাস্তা খোলার যে প্রয়োজন রয়েছে তা রাশিয়া বোঝে। মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতিকে সমর্থন করার পাশাপাশি আধুনিক অস্ত্র তৈরির প্রকল্পগুলিতেও মস্কো যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন ল্যাভরভ। দক্ষিণ ভারতে কুড়ানকুলাম পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সইসাবুদও সেরেছেন দু’দেশের এই দুই নেতা।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইত্তিহাদেই সিটিকে রুখে দিল ইন্টার
রোনালদোদের নতুন কোচ পিওলি
দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুড়িয়ে আফগানদের ঐতিহাসিক জয়
যেই গৌরব কেবল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের
রিট করে ‘খেলাপি ঋণ স্থগিত’ বন্ধ চান ব্যাংক-মালিকরা
বিদেশি ঋণ ফের ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
টাকা উদ্ধারের নামে ‘ঘুষ’ চাওয়ার অভিযোগ জিএম শাহজাহান চৌধুরীর’র বিরুদ্ধে
জাতীয় ঐক্য বিনষ্টকারী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে
৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার কিনবে সরকার, ব্যয় ২৩৬ কোটি টাকা
আইকনিক লিডার তারেক রহমান ও বাংলাদেশের রাজনীতি
পতিত স্বৈরাচার ও ভারতের চক্রান্ত চলছেই
তারেক রহমানের রাষ্ট্রনায়কোচিত বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা
ইসরাইলের দখলদারিত্ব বন্ধের প্রস্তাব বিবেচনা জাতিসংঘের
উত্তপ্ত মণিপুরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে নতুন করে গোলাগুলি
২৭ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্ট
২০০ হাতি নিধনের সিদ্ধান্ত জিম্বাবুয়ের
কলেরাসহ মারাত্মক রোগের ঝুঁকিতে সুদানের ৩৪ লাখ শিশু
১১ হাজার ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর প্রাণ গেছে
বেলারুশে হামলা হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে : লুকাশেঙ্কো
তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের যুদ্ধবিমান