গাজায় গণহত্যা, বিশ্ব আদালতের কাঠগড়ায় ইসরায়েল
১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৫ পিএম | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৫ পিএম
গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তিন মাসেরও বেশি সময়ে ধরে দেশটি ফিলিস্তিনের এ উপত্যকায় বিপুল সংখ্যক বেসামরিক মানুষকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও শিশু। এ অবস্থায় গাজায় ইসরায়েল ১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে– বিশ্ব আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার করা এমন অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছে তেল আবিব। নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) বৃহস্পতিবার এ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। বিশ্ব আদালত হিসেবে পরিচিত এ বিচারালয়ে আজ শুক্রবার আত্মপক্ষ সমর্থন করবে ইসরায়েল। আইসিজেতে দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযোগের বিষয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সমর্থন জানিয়েছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি), মালয়েশিয়া, তুরস্ক, জর্ডান ও বলিভিয়া।
গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত ইসরায়েল তার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আইসিজের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত এটি ধারণা যে, তেল আবিব গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের হত্যা করেছে। তবে অভিযোগগুলো অত্যন্ত গুরুতর; এমনকি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ও দেশটির আন্তর্জাতিক মর্যাদার ওপর প্রচণ্ড প্রভাব ফেলতে পারে। এর সঙ্গে সম্ভাব্য গুরুতর কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিণতি তো আছেই। এ ছাড়া এটি গাজায় চলমান অভিযানকেও প্রভাবিত করতে পারে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনি বেসামরিক নিহত এবং সেখানে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসেবার ভয়াবহ সংকট ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পরিকল্পিত গণহত্যার প্রমাণ দিচ্ছে। এ ছাড়া ফিলিস্তিনিদের সম্পর্কে ইসরায়েলি মন্ত্রীদের দেওয়া অসংখ্য আক্রমণাত্মক বিবৃতি দক্ষিণ আফ্রিকাকে অভিযোগ করার একটি সুযোগ দিয়েছে। দেশটি বলছে, ইসরায়েল রাষ্ট্রের গণহত্যা করার অভিপ্রায় রয়েছে। এটি যে কোনো গণহত্যার অভিযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
এ অভিযোগের চূড়ান্ত রায় আসতে কয়েক বছর সময় লাগবে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা আদালতকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করার অনুরোধ করেছে। এটি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির দাবি থেকে শুরু করে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি পর্যন্ত বিস্তৃত। পাশাপাশি গাজায় আরও মানবিক সহায়তা পাঠানোয় জোর দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েল এসবের বিরোধিতা করলেও যথেষ্ট প্রমাণ থাকায় অন্তর্বর্তীকালীন রায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপে ফেলবে।
আইসিজে যদি ঘোষণা করে যে গাজায় গণহত্যা হয়েছে, তবে আগামীতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইসরায়েলকে অন্ধভাবে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোর জন্যও তা চ্যালেঞ্জিং হবে। এতে ইহুদি রাষ্ট্রটি উল্লেখযোগ্য বিপদের মধ্যে পড়ে যাবে।
ইসরায়েল অবশ্য আশা করছে, আইসিজে থেকে বিরোধী যে কোনো রায় ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো পাশে দাঁড়াবে। এরইমধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন গত সপ্তাহের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনি বিবরণটিকে অসার ও সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার আবেদনে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, নিজের স্বাক্ষর করা গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তিসংক্রান্ত কনভেনশনের বেশ কয়েকটি ধারা লঙ্ঘন করেছে তেল আবিব। এর মধ্যে রয়েছে– যুদ্ধের সময় গণহত্যা, গণহত্যার প্ররোচনা, গণহত্যার চেষ্টা। গাজায় নিহত ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। ইসরায়েলি বিমান বাহিনী গাজায় নির্বিচারে ভারী বোমাবর্ষণ এবং কখনও কখনও লক্ষ্যহীন বোমা ব্যবহার করেছে।
এ ছাড়া নিরস্ত্র লোকদের দেখামাত্র গুলি করে হত্যা করার নির্দেশের বিষয়টি অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। তখন হামাসের হাতে বন্দি থাকা তিনজন ইসরায়েলি জিম্মি পালিয়ে আসতে সক্ষম হয় এবং তারা সাদা পতাকা প্রদর্শন করলেও তাদের গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার ৮৪ পৃষ্ঠার আবেদনে গাজার বেসামরিক অবকাঠামো, হাসপাতাল, মসজিদ, বিদ্যালয়, বাড়ি, জাতিসংঘের ভবন এবং অন্যান্য অনুরূপ অবকাঠামোতে ইসরায়েলি হামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আইসিজেতে ১৫ জন স্থায়ী বিচারককে নিয়োগ দেয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। আদালতের সভাপতি যুক্তরাষ্ট্রের বিচারক জোয়ান ডনোগুই এবং অন্য বিচারকরা ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, স্লোভাকিয়া, জ্যামাইকা, জাপান ও ব্রাজিলের মতো দেশ থেকে এসেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইসরায়েল উভয়ই মামলা শুনানির জন্য প্যানেলের এডহক সদস্য হিসেবে মনোনীত বিচারকদের পাঠিয়েছে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নিউইয়র্কে বৈঠকে বসছেন তৌহিদ-জয়শঙ্কর
ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই আউট মুশফিক
ঝাড়খন্ডে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অমিত শাহের
মুমিনুলকেও হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ
রাবির মাদার বখ্শ হলের পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার হলো দেশীয় অস্ত্র
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণ ২৭ সেপ্টেম্বর
ঢাবির হত্যার ঘটনায় প্রভোস্টকে অব্যাহতি
আইন-শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: রাঙামাটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মেক্সিকোতে মাদক কারবারিদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই সপ্তাহে নিহত ৫৩
বিদ্যুৎ সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত গ্রামে থাকে না
দুর্গাপূজায় ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত
জাকিরের পর ফিরলেন সাদমানও
খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার
জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান
ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল
গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের
পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন
দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন
আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান
ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা