ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১

এশিয়ান কাপ খেলতে এসেও শোক যাচ্ছে না ফিলিস্তিনিদের

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:১২ পিএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:১২ পিএম

ম্যাচ শেষে স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরিয়ে আসা একঝাঁক ফিলিস্তিনি তরুণ-তরুণী তখনও নেচে চলেছেন ‘ডাম্মি ফালাস্তিনি’ গানের সঙ্গে। যে গান ইতিমধ্যেই বেসরকারিভাবে ফিলিস্তিনের জাতীয় সঙ্গীত বলে প্রচার করা হয়েছে গাজা শহরে। কে বলবে রবিবার এশিয়ান কাপের গ্রুপ স্টেজের প্রথম ম্যাচে ইরানের কাছে ১-৪ গোলে হেরে গিয়েছে ফিলিস্তিন!

 

এই হারকে নিয়ে এতটুকু মাথা ঘামাতে নারাজ ফিলিস্তিনি সমর্থকরা। বরং দেশের উপর ইসরাইলের হামলার পরও তারা যে মাথা উঁচু করে এশিয়ার সেরা টুর্নামেন্টে যোগ দিতে এসেছেন, সমর্থকদের কাছে সেটাই বড় বিষয়। তাই এই হারের পরও ম্যাচ দেখতে আসা ফিলিস্তিনি সমর্থকরা স্বদেশি ফুটবলারদের বাহবা দিয়ে গেলেন প্রাণভরে।

 

ভিড়ের মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকা এক ফিলিস্তিনি তরুণী বলেন, ‘দেশের প্রতি যে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে, সেটাই প্রমাণ করতে এখানে আজ এসেছি আমরা। ভাবতেও কষ্ট হয়, হয়তো আর প্রিয় স্বদেশে ফিরে যেতে পারব না। চিন্তামুক্ত হয়ে হাঁটতে পারব না গাজার রাস্তায়। বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকি না কেন, সেটা কখনওই আমাদের দেশের মতো হতে পারে না।’

 

ম্যাচ জিতে স্টেডিয়াম ছাড়তে ছাড়তে বেশ কয়েকজন ইরানি সমর্থকও তাদের সমর্থন জানিয়ে গেলেন।

এসবের মধ্যেই দেখা গেল এক ইরানি সমর্থককে একটি অদ্ভুত পতাকা নিয়ে স্টেডিয়ামে আসতে। আলি মির নামের সেই ইরানি সমর্থক নিজের দেশের পতাকাটিকে অর্ধেক কেটে তার পাশে অর্ধেক ফিলিস্তিনের পতাকা লাগিয়ে মাঠে এসেছিলেন। আসলে মাঠের প্রতিপক্ষ হলেও খারাপ পরিস্থিতিতে বন্ধু দেশটির পাশে দাঁড়াতেই তা করেছিলেন তিনি।

 

এই মুহূর্তে খুব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ফিলিস্তিনি ফুটবলারদের। ফিলিস্তিনের উপর ইসরাইলের বর্বর আক্রমণে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে সেদেশের ফুটবল পরিকাঠামো। জানা গিয়েছে, হানি আল মাসদার নামের এক ফিলিস্তিনি ফুটবল কোচের মৃত্যুও হয়েছে সে আক্রমণে। যিনি একটা সময় যুক্ত ছিলেন ফিলিস্তিনি যুব দলের সঙ্গেও। যে মৃত‌্যু নড়িয়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনের ফুটবলমহলকে। দেশটির জাতীয় কোচ মাকরাম দাবৌব বলেন, ‘আমাদের দেশের ফুটবলের অন্যতম সেরা ব্যাক্তিত্ব ছিলেন হানি।’

 

এশিয়ান কাপ খেলতে আসা ফিলিস্তিনি ফুটবল দলের যে সব সদস্যের বাড়ি গাজা শহরে, তাদের প্রতিনিয়তই চিন্তার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। প্রতিনিয়তই কারও না কারও পরিচিতের মৃত্যুর খবর পাচ্ছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ার সেরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে এসে দলের কোচ আরও যোগ করেন, ‘সত্যি এই পরিস্থিতি বড়ই কঠিন প্রত্যেকের কাছে।’ তাই প্রথম ম্যাচে হারলেও দুঃখ নেই তাদের। আর কিছু না হোক, ফুটবল তো অন্তত জীবনের স্বাদ দিচ্ছে!

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশে সংস্কার  ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ

গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ