ঢাকা   রোববার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১

রিমাইগ্রেশন-বিতর্ক, জার্মানিতে এএফডিকে নিষিদ্ধ করার দাবি

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২৮ পিএম | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২৮ পিএম

জার্মানি থেকে অভিবাসীদের গণহারে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে অতি-দক্ষিণপন্থিরা। এএফডির কয়েকজন পার্লামেন্ট সদস্য এর সঙ্গে যুক্ত। গত ১০ জানুয়ারি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম কারেকটিভ রিপোর্ট করেছিল যে, পটসডামের একটি হোটেলে দক্ষিণপন্থি দল এএফডি ও নব্য নাৎসিরা বৈঠক করেন।

 

সেই বৈঠকে যোগদানকারী নেতারা ‘রিমাইগ্রেশন’ নিয়ে আলোচনা করেন। ‘রিমাইগ্রেশন’ মানে জার্মানিতে যে অভিবাসীরা আছেন, তাদের ফেরত পাঠানো। তারা যে দেশ থেকেই আসুন না কেন, তাদের নিজেদের আদি দেশে ফেরত পাঠাতে হবে, এই ছিল বৈঠকের বিষয়বস্তু। দক্ষিণপন্থি ও অতি-দক্ষিণপন্থিরা রিমাইগ্রেশন কথাটি খুবই ব্যবহার করেন। কারেকটিভের রিপোর্ট বলছে, পটসডামের বৈঠকে অভিবাসীদের বহিষ্কার করা নিয়ে একটি সামগ্রিক ধারণা ও মাস্টার প্ল্যান বানানোই ছিল মূল কর্মসূচি।

 

সেখানে যারা রেসিডেন্ট পারমিট নিয়ে আছেন অথবা যারা জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েছেন, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজের সঙ্গে মিশে যেতে পারেননি, তাদের প্রসঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জার্মানির সংবিধানে লিখিত মৌলিক অধিকারের বিরোধী। তাছাড়া সরকারি আইনে কাউকে তাদের জাতি, সম্প্রদায়, ভাষা বা মূল দেশের ভিত্তিতে বৈষম্য করা যায় না।

 

পটসডামের রিপোর্ট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে। এফডিপি-র পার্লামেন্টারি পার্টির নেতা ত্রিশ্চিয়ান ডার বলেছেন, ‘লাখ লাখ অভিবাসীদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত জার্মানির ইতিহাসে অন্ধকারতম অধ্যায়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।’ তিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সালের নাৎসী যুগের প্রসঙ্গই তুলেছেন।

 

কারেকটিভের রিপোর্ট বলছে, অবসরপ্রাপ্ত ডেন্টিস্ট ও অতি-দক্ষিণপন্থি নেতা গেয়ারনোট ম্যোরিশ ছিলেন এই বৈঠকের আয়োজক। তার সঙ্গে ছিলেন শিল্পপতি হানস-ক্রিশ্চিয়ান লিমের। বৈঠকে যারা যোগ দিয়েছিলেন, তাদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার ইউরো ডোনেশন চাওয়া হয়। এএফডি-র সহকারী নেতা অ্যালিস ভাইডেলের পরামর্শদাতা রোলান্ড হার্টভিশ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন। এছাড়াও এএফডির পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে কয়েকজন বৈঠকে ছিলেন।

 

জার্মানির সবচেয়ে বড় বিরোধী দল সিডিইউ-এর কয়েকজন নেতাও ছিলেন বলে রিপোর্ট জানাচ্ছে। তবে বৈঠকে যারা যোগ দিয়েছিলেন, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম হলো অস্ট্রিয়ার রাজনীতিবিদ মার্টিন সেলনার। তিনিই রিমাইগ্রেশনের তত্ত্ব বিস্তারিতে বলেন।

 

কিছুদিন আগে জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস বলেছিলেন, ‘যাদের জার্মানিতে থাকার অধিকার নেই, এমন মানুষদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা আমাদের শেষ পর্যন্ত করতেই হবে।’ বিরোধী জোট সিডিইউ-সিএসইউয়ের অনেক রাজনীতিবিদও এই মত সমর্থন করেন। এএফডি দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানাচ্ছে, অভিবাসীদের গণহারে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে হবে। ২০২১ সালে দল তার ইস্তাহারে রিমাইগ্রেশন কথাটা ব্যবহার করেছে। ১০ জানুয়ারি দল এক্স-এ যে মেসেজ পোস্ট করেছে, তাতেও রিমাইগ্রেশন কথাটি আছে।

 

এএফডিকে নিষিদ্ধ করার দাবি

 

এএফডি-র নেতা ও পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য পটসডাম বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন, এই তথ্য সামনে আসার পরই আবার ওই দলকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। সিডিইউ নেতা ও একটা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টমাস স্ট্রবল বলেছেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলির এএফডি-র কাজকর্ম খতিয়ে দেখার যথেষ্ট কারণ আছে।’

 

জার্মানিতে শুধুমাত্র জাতীয় সাংবিধানিক আদালত একটি দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে। ১৯৫৬ সালে শেষবার একটি দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। সিডিইউ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস বলেছেন, আমাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এএফডিকে নিষিদ্ধ করে তাদের শহিদের মর্যাদা দেয়ার কোনো অর্থ হয় না। সূত্র: ডয়চে ভেলে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও অজিদের অনায়স জয়

দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও অজিদের অনায়স জয়

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত

দেশে সংস্কার  ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন

মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন