জার্মানিতে এএফডি-র বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার ভাবনা

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:৪৫ পিএম | আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:৪৫ পিএম

জার্মানিতে অতি-দক্ষিণপন্থি এএফডি-র বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। কী হতে পারে সেই ব্যবস্থা? অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) পার্টির জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। সাম্প্রতিক জনমত সমীক্ষায় তা দেখা গেছে। কিন্তু একইসঙ্গে এএফডি-র অভিবাসন-বিরোধী নীতির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ।

 

জার্মানির পার্লামেন্টে এখন এএফডি-র বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় তানিয়ে আলোচনা চলছে। ক্ষমতাসীন জোটের তিন শরিক এসপিডি, এফডিপি ও গ্রিন পার্টির সদস্যরা এএফডি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রস্তাব এনেছেন। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণতন্ত্রের শত্রুদের বিরুদ্ধে এবং যারা জোর করে মানুষকে উৎখাত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

 

মিডিয়া রিপোর্ট করেছে যে, এএফডি কর্মকর্তারা এবং সিডিইউ-এর কয়েকজন নেতা একটি বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে রিমাইগ্রেশন বা জার্মানি থেকে জোর করে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো নিয়ে আলোচনা হয়। পার্লামেন্টে বিতর্কের সময় এএফডি নেতা বাউম্যান বলেছেন, ‘ওই মিটিংটা আসলে ছোট ব্যক্তিগত ও বেসরকারি একটি বিতর্কসভা ছিল। এটা কোনো গোপন বৈঠক ছিল না। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের গণতন্ত্রবিরোধী বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ ন্যান্সি ফ্রেজার বলেছেন, তিনি শেষ বিকল্প হিসাবে এএফডি-কে নিষিদ্ধ করার কথাও ভাবতে পারছেন।

 

২০১৭ সালে এনপিডি পার্টিকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছিল এবং তা ব্যর্থ হয়েছিল। তারপর তারা নাম বদল করে নিজেদের নাম রেখেছে হোমল্যান্ড। সাংবিধানিক আদালত সেসময় রায় দিয়েছিল, এ দল এতটাই গুরুত্বহীন যে, তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্রের বিপদের কোনো কারণ নেই। তাই তারা ওই দলকে নিষিদ্ধ করেনি। কিন্তু এএফডির অবস্থা এনএফডির মতো নয়। এএফডি-র পিছনে এখন যথেষ্ট জনসমর্থন রয়েছে। জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মধ্যে তিনটিতে এ দলকে চরম দক্ষিণপন্থি দল বলা হয়েছে।

 

ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে অতি কঠিন মাপদণ্ড রেখেছে। সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ ক্রিশ্চিয়ান পেস্তালোজ্জা জানিয়েছেন, কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার জন্য একটি আবশ্যিক শর্ত হলো, সেই দল কোনো না কোনো সময় তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট শক্তিসঞ্চয় করেছিল।

 

তবে সরকারের থেকে দল যে অর্থ পায় সেটা বন্ধ করার কাজটা অত কঠিন নয়। রাজনৈতিক দলগুলির অর্থ আসে সদস্য চাঁদা, ডোনেশন এবং করদাতাদের অর্থ থেকে। কোনো দল যত বেশি ভোট পায়, তত বেশি সরকারি বা রাষ্ট্রীয় সাহায্য পায়। এএফডি এখন এক কোটি ইউরো (১১৯ কোটিরও বেশি বাংলাদেশি টাকা) রাষ্ট্রের কাছ থেকে পায়।

 

ক্রিশ্চিয়ান বলেছেন, যদি কোনো দল কোনো অসাংবিধানিক লক্ষ্য নেয়, তাহলে তাদের অর্থ বন্ধ করে দেয়া যেতে পারে। তারা যে ওই লক্ষ্যের প্রতি দায়বদ্ধ এটা দেখাতে পারলেই অর্থ বন্ধ করে দেয়া সম্ভব। যদিও এএফডির রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা শুনে মনে হবে, সেগুলি একেবারেই ক্ষতিকর নয়। কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা আলাদা বলে ক্রিশ্চিয়ান জানিয়েছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, এই শর্তগুলি পূরণ হয়েছে কিনা সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। এটা সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

 

কয়েকটি রাজ্যে এএফডির কাজকর্মের উপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নজরদারি থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্ততপক্ষে ওই রাজ্যগুলিতে এএফডি -র সরকারি সাহায্য বন্ধ করা সম্ভব। তবে তার জন্য পার্লামেন্টে প্রস্তাব আনতে হবে। তারপরেও সাংবিধানিক আদালত সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারে। এছাড়া আরেকটা উপায় আছে। সেটা হলো, ব্যক্তিদের মূল অধিকার প্রত্যাহার করে নেয়া হতে পারে। তাহলে তারা কোনো সরকারি পদে থাকতে পারবেন না। পার্লামেন্টে যখন বিতর্ক হবে, তখন আরো কিছু পন্থা বের হয়ে আসতে পারে। সূত্র: ডয়চে ভেলে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

৩ মাতাল নিহত
মাস্টারমাইন্ড
কনুই দেখিয়ে
পশ্চিমাবিশ্বে ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলায় করণীয়
মিয়ানমারে জান্তার বিমান হামলায় নিহত ১২, আতঙ্কে স্থানীয়রা
আরও
X

আরও পড়ুন

লিভারপুলকে হারিয়ে ৭০ বছর পর  শিরোপার স্বাদ নিউক্যাসলের

লিভারপুলকে হারিয়ে ৭০ বছর পর  শিরোপার স্বাদ নিউক্যাসলের

জয়ে ফিরে লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান কমাল আর্সেনাল

জয়ে ফিরে লিভারপুলের সঙ্গে ব্যবধান কমাল আর্সেনাল

পি কে হালদারের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

পি কে হালদারের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের নির্দেশ

রমজানে পুরান ঢাকায় ইফতারির পাশাপাশি ভিড় থাকে স্থাপত্য দর্শনেও

রমজানে পুরান ঢাকায় ইফতারির পাশাপাশি ভিড় থাকে স্থাপত্য দর্শনেও

নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডিবি পরিচয়ে কোটি টাকা ছিনতাই

নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডিবি পরিচয়ে কোটি টাকা ছিনতাই

ধর্ষণ ও নির্যাতন রোধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করুন: টিআইবি

ধর্ষণ ও নির্যাতন রোধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করুন: টিআইবি

এসএসসি-দাখিল পরীক্ষায় বসছে ১৯ লাখ শিক্ষার্থী

এসএসসি-দাখিল পরীক্ষায় বসছে ১৯ লাখ শিক্ষার্থী

স্ত্রী-সন্তানসহ পাপন ও হানিফের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

স্ত্রী-সন্তানসহ পাপন ও হানিফের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

মেঘনা ব্যাংকের নতুন চেয়ারপারসন উজমা চৌধুরী

মেঘনা ব্যাংকের নতুন চেয়ারপারসন উজমা চৌধুরী

হাসিনার আস্থাভাজন সচিব ও আমলাদের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ

হাসিনার আস্থাভাজন সচিব ও আমলাদের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ

জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত ৮৫০ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন

জুলাই বিপ্লবে শহীদ এবং আহত ৮৫০ পরিবারের পাশে দাঁড়াবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন

জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশের শঙ্কা উত্তরণে ফ্যাসিস্টদের অপতৎপরতা রুখতে হবে

জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশের শঙ্কা উত্তরণে ফ্যাসিস্টদের অপতৎপরতা রুখতে হবে

কৃষি বিপ্লব ঘটিয়ে দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে বিএনপি -কৃষকদলের আলোচনা সভায় বক্তারা

কৃষি বিপ্লব ঘটিয়ে দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে বিএনপি -কৃষকদলের আলোচনা সভায় বক্তারা

বেপরোয়া গাড়ি চাপায় নারীর মৃত্যু

বেপরোয়া গাড়ি চাপায় নারীর মৃত্যু

অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে প্রিন্স

অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে প্রিন্স

কলাপাড়ায় স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

কলাপাড়ায় স্কুলছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু

রাজবাড়ীতে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ

রাজবাড়ীতে নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ

মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

মেডিক্যাল কলেজ বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক জুনায়েদের নেতৃত্বে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক জুনায়েদের নেতৃত্বে আসছে নতুন রাজনৈতিক দল

দখলে-দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে কুমার নদ

দখলে-দূষণে অস্তিত্ব সঙ্কটে কুমার নদ