মিয়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্র করছে জান্তা বাহিনী

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:২৩ এএম | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:২৩ এএম

অস্থিতিশীল মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সাথে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর তুমুল লড়াই চলছে। সংঘাত থেকে বাঁচতে শত শত মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্য এলাকায় পালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর নির্বিচার গোলাবর্ষণে অনেকে নিহত ও আহত হয়েছেন। এর মাঝেই দেশটির শান রাজ্যের একটি শহরে জান্তা সৈন্যরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধানোর ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। সৈন্যদের হাত থেকে পালিয়ে আসা বাসিন্দারা বলেন, সেখানকার বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার জন্য মুসলিমদের বাধ্য করছে জান্তা বাহিনী। একই সঙ্গে বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ছবি ও ভিডিও ধারণ করছে সৈন্যরা।

থাইল্যান্ড-ভিত্তিক মিয়ানমারের ইংরেজি দৈনিক দ্য ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, কাচিন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি (কেআইএ) এবং তাদের মিত্র প্রতিরোধ বাহিনী পিছু হটার পর মিয়ানমার জান্তার সৈন্যরা উত্তর শান রাজ্যের মোমেইক শহরের দখল ফিরে পেয়েছে। জান্তা সৈন্যরা শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পাশাপাশি কমপক্ষে আট বাসিন্দাকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে সেখানকার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এর আগে, গত ১৮ জানুয়ারি কেআইএ, অল বার্মা স্টুডেন্টস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এবিএসডিএফ) এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী মোমেইক শহরে হামলা চালিয়েছিল। থানাসহ জান্তা সৈন্যদের ঘাঁটিতে হামলার পর গত ২৫ জানুয়ারি তারা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেয়। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় জান্তা বাহিনীর হামলায় পিছু হটতে বাধ্য হয় যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। শহরটি থেকে পালিয়ে যাওয়া বাসিন্দারা বলেছেন, জান্তা সৈন্যরা শহরে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য ফিরে আসে।

মোমেইকের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘‘জান্তা সৈন্যরা এখন শহরে অবস্থান করছে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। তারা আড়ালে থাকা বাসিন্দাদের গ্রেপ্তার করেছে। রোববার নিজেদের বাড়িঘর দেখতে গিয়ে অন্তত পাঁচজন বাসিন্দা গ্রেপ্তার হয়েছেন। গৃহপালিত প্রাণীকে যারা খাবার দেওয়ার জন্য গ্রামে গিয়েছিল তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’’

শহরের বাস্তুচ্যুত লোকজনকে সহায়তা করা স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবকের মতে, জান্তা সৈন্যরা মোমেইকে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে মুসলিম বন্দীদের বাধ্য করছে। এর মাধ্যমে জান্তা বাহিনী শহরে বিভাজনের বীজ বপন করতে চাইছে।

ওই স্বেচ্ছাসেবক বলেছেন, শহর থেকে পালিয়ে আসা একজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, জান্তা সৈন্যরা বন্দীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে বাধ্য করেছে। তারা মুসলমানদের হাতে টর্চ দিয়ে ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিতে বলছে। আগুন দিতে অস্বীকৃতি জানানো মুসলিমদের হত্যার হুমকি দেয় জান্তা সৈন্যরা। অগ্নিসংযোগের সময় সৈন্যরা ছবি তুলেছে। আমার ধারণা, শাসক সৈন্যরা এসব ছবি প্রচার এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য ব্যবহার করবে। মুসলমানরা বাড়িঘর এবং ধর্মীয় স্থাপনায় আগুন দিচ্ছে বলে জান্তা বাহিনী প্রচারণা চালাবে।

তিনি বলেন, জান্তা সৈন্যরা শহরটি অবরোধ ও মুসলমানসহ অন্তত আটজন বাসিন্দাকে হত্যা করেছে। অনেক বাসিন্দা যুদ্ধের আগেই পালিয়ে গেছে। যারা থেকে গিয়েছিল জান্তা সৈন্যদের হাতে তারা নিহত অথবা গ্রেপ্তার হয়েছে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাবি প্রফেসর নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি

যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাবি প্রফেসর নাদির জুনাইদকে অব্যাহতি

বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে ভাড়ার চুক্তি-দাম বৃদ্ধি অর্থের অপচয়: জামায়াত

বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বসে বসে ভাড়ার চুক্তি-দাম বৃদ্ধি অর্থের অপচয়: জামায়াত

ম্যাখোঁ ও ইইউ প্রধানের সঙ্গে শি’র বৈঠক

ম্যাখোঁ ও ইইউ প্রধানের সঙ্গে শি’র বৈঠক

শেনজেন স্টাইলের ভিসা মধ্যপ্রাচ্যেও চালু হচ্ছে -আমিরাতের অর্থমন্ত্রী

শেনজেন স্টাইলের ভিসা মধ্যপ্রাচ্যেও চালু হচ্ছে -আমিরাতের অর্থমন্ত্রী

২২ বছরে বিশ্বে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৫০ শতাংশ: আইওএম

২২ বছরে বিশ্বে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬৫০ শতাংশ: আইওএম

সাতকানিয়ায় এখনো বিদ্যুৎহীন অনেক এলাকা

সাতকানিয়ায় এখনো বিদ্যুৎহীন অনেক এলাকা

টেকসই রাজস্ব নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে প্রয়োজন নীতিনির্ধারণে ধারাবাহিকতা

টেকসই রাজস্ব নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে প্রয়োজন নীতিনির্ধারণে ধারাবাহিকতা

রূপালী ব্যাংকের ঢাকা দক্ষিণ বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

রূপালী ব্যাংকের ঢাকা দক্ষিণ বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

রূপালী ব্যাংকের ঢাকা দক্ষিণ বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

রূপালী ব্যাংকের ঢাকা দক্ষিণ বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সড়ক দুর্ঘটনায় ঈশ্বরদীর ক্ষুদে বিজ্ঞানী নিহত

সড়ক দুর্ঘটনায় ঈশ্বরদীর ক্ষুদে বিজ্ঞানী নিহত

ভক্তের ওপর চড়াও হলেন সাকিব, নেটদুনিয়ায় সমালোচনা

ভক্তের ওপর চড়াও হলেন সাকিব, নেটদুনিয়ায় সমালোচনা

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে কালেকশন বুথ চালু করল ব্র্যাক ব্যাংক

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে কালেকশন বুথ চালু করল ব্র্যাক ব্যাংক

ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স স্মার্ট প্লাজায় হাইসেন্স এসি, টিভিতে বিকাশ পেমেন্টে অতিরিক্ত ১,০০০ টাকা ছাড়

ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স স্মার্ট প্লাজায় হাইসেন্স এসি, টিভিতে বিকাশ পেমেন্টে অতিরিক্ত ১,০০০ টাকা ছাড়

শ্রমবাজার সম্প্রসারণে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে

শ্রমবাজার সম্প্রসারণে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে

বাগেরহাটে যুবলীগ নেতাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন আওয়ামী লীগ নেতা

বাগেরহাটে যুবলীগ নেতাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন আওয়ামী লীগ নেতা

ব্যাটারি রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা আনলো ভিভো ভি৩০ লাইট

ব্যাটারি রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা আনলো ভিভো ভি৩০ লাইট

সোনালী ব্যাংকের মুনাফা ৮৩ শতাংশ বেড়েছে

সোনালী ব্যাংকের মুনাফা ৮৩ শতাংশ বেড়েছে

টেকসই রাজস্ব নিশ্চিতে করতে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে প্রয়োজন নীতিনির্ধারণে ধারাবাহিকতা

টেকসই রাজস্ব নিশ্চিতে করতে গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে প্রয়োজন নীতিনির্ধারণে ধারাবাহিকতা

শপআপ-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগদান করলেন মামুন রশীদ

শপআপ-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগদান করলেন মামুন রশীদ

১ বছরে আদানি গ্রিনের ২৫ শতাংশ মুনাফা বৃদ্ধি

১ বছরে আদানি গ্রিনের ২৫ শতাংশ মুনাফা বৃদ্ধি