ভারতের বারানসীতে অবস্থিত প্রাচীন জ্ঞানবাপী মসজিদের বেসমেন্টের ভিতর স্থানীয় সময় ভোর রাত ৩টা থেকে শুরু হয় পুজা। মসজিদের নিচে ‘ব্যাস ত্যায়খানা’য় এ পুজো শুরু হয়। জেলা আদালতের বিতর্কিত নির্দেশকে হাতিয়ার করে শুরু হয় জ্ঞানবাপী মসজিদকে মন্দিরে পরিণত করার পায়তারা।

কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদের বেসমেন্টে শুক্রবারের ভোররাতে শোনা যায় ঘণ্টাধ্বনি। আদালতের নির্দেশ আগেই এসেছিল। বুধবার বিকেলে বারাণসী জেলা আদালতের রায়ের পর সন্ধ্যা থেকেই জ্ঞানবাপী মসজিদের সামনে কোলাহল ছিল। পরে রাত গজডাকেই বারাণসীর জেলাশাসক ও পুলিশকর্তা সেখানে পৌঁছন। এরপর ভোর রাত ৩ টা নাগাদ জ্ঞানবাপী মসজিদের বেসমেন্টের ভিতর শুরু হয় পুজা। মসজিদের নিচে ‘ব্যাস ত্যায়খানা’য় এই পুজা শুরু হয়। জেলা আদালতের নির্দেশকে হাতিয়ার করে জ্ঞানবাপী মসজিদের বেসমেন্টে হয় পুজো, যে নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটি।

মসজিদের নিচে ব্যাস ত্যায়খানায় হিন্দুদের ঢল শুক্রবার সকাল থেকেই নামতে শুরু করে। সেখানে কোন পুরোহিত পুজো করবেন, তা ঠিক করে দেয় কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের ট্রাস্টের সদস্য ও পিটিশনার। এর আগে শুক্রবার রাত ২টা নাগাদ জ্ঞানবাপী মসজিদের বেসমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসেন জেলাশাসক ও পুলিশ কমিশনার। তারা বেরিয়ে এসে জানান, তারা এ পুজার অনুমতি দিচ্ছেন যা আগে কোর্টের নির্দেশে করা হয়েছে।

পুলিশ কমিশনার জানান, আদালতের নির্দেশ মেনে ওই বেসমেন্ট পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা তৈরি করা হয়। ব্যারিকেড সরানো ও নিরাপত্তার যাবতীয় বন্দোবস্ত করা হয়। এদিকে, হিন্দুপক্ষের তরফে বিষ্ণু শঙ্কর বলছেন, ‘সেখানে অখণ্ড জ্যোতি জ্বালানো হয়েছে। প্রত্যেক দেবতার সামনে প্রত্যেক দিন পূজা করা হবে।’

এদিকে, ইন্ডিয়া টুডের খবর অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টে এ মামলার জরুরিকালীন আবেদন করে মুসলিম পক্ষ। তারা বারণসী কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, হিন্দুপক্ষের সঙ্গে যোগসাযোশ রয়েছে উত্তর প্রদেশের যোগী প্রশাসনের। তারা বারাণসী আদালতের রায়ের পরই রাতারাতি নির্দেশকে কার্যকর করতে তৎপর হয়। এদিকে, আরও এক সূত্রের খবর, মুসলিম পক্ষের আইনজীবী এলাহাবাদ আদলতেরও মুখাপেক্ষী। এদিকে, জানা গিয়েছে, ওই ব্যাস ত্যায়খানায় প্রতিদিন হিন্দুরা প্রবেশ করতে ইচ্ছুক। সেই জায়গা থেকে বারণসীর আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে, তা নিয়ে রয়েছে বহু ধরনের জল্পনা।