কেনিয়ায় মানুষের মল দিয়ে তৈরি হচ্ছে জ্বালানি
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩১ এএম | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩১ এএম

আমরা জানি, পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদ মোটেই অফুরন্ত নয়। সব ক্ষেত্রেই কি সেটা সত্য? যতদিন মানুষের অস্তিত্ব থাকবে, ততদিন একটি সম্পদ কখনোই ফুরিয়ে যাবে না। সেটা হলো মল। এবার কেনিয়ার এক কোম্পানি মানুষের মল ব্যবহার করে ব্রিকেট তৈরি করছে। সেই প্রকল্পের আওতায় স্যানিটেশন, পরিবেশ দূষণের মতো সমস্যাও মোকাবিলা করা হচ্ছে।
স্যানিভেশন নামে কেনিয়ার ওই কোম্পানি মানুষের মল প্রক্রিয়াকরণ ও পুনর্ব্যবহারের কাজে হাত পাকিয়েছে। উচ্চ তাপমাত্রায় ক্ষতিকারক প্যাথোজেন সরিয়ে ফেলার পর সেই কাচামাল ব্রিকেট বা কাঠকয়লায় রূপান্তরিত করা হয়। কোম্পানির প্রতিনিধি ডেক্সটার গিকাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমরা সব সময়ে কৌতূহল দেখতে পাই। আসলে আগে সম্ভব মনে হয়নি, এমন আইডিয়ার মুখোমুখি হলে তখন বোঝা যায়, সেটা শুধু সম্ভবই নয়, তা খেকে মুনাফাও করা যায়। কিছু মূল্য সৃষ্টি করা যায়, কিছুটা উদ্ধার করা যায় এবং বর্জ্য থেকে আয় করা যায়।''
নাইরোবি থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে নাইভাশায় এই কোম্পানি সক্রিয়। ট্রাক চালকরা আশেপাশের জনপদে গিয়ে বাসার বাথরুম থেকে মল সংগ্রহ করেন। সেখানকার পয়ঃপ্রণালী এখনো শুধু আংশিকভাবে উন্নত হওয়ায় উদ্ধার না করলে সেই বর্জ্য পানি মাটির নীচে চলে যেতো।
জন কারিউকি ভ্যাকুয়াম ট্রাক অপারেটর হিসেবে প্রায় তিন বছর ধরে সেখানে কাজ করছেন এবং সেই প্রক্রিয়া তাকে মুগ্ধ করছে। নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে মনে হয়েছিল কাজটা বেশ খারাপ হবে। হয়তো স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে। কিন্তু বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলাম যে এই প্রক্রিয়ায় কোনো ধোঁয়া সৃষ্টি হয় না। ক্ষতিকারক গ্যাসও বের হয় না। কাঠকয়লার মধ্যে কার্বন মোনোক্সাইড থাকে। কিন্তু এই ব্রিকেটের মধ্যে তা নেই।''
প্রতি মাসে ১২টি ট্রাক বোঝাই কাদার আকারের মল সংগ্রহ করা হয়। প্রত্যেকটি ট্রাকে প্রায় ২০ হাজার লিটার তরল থাকে। কোম্পানি বেশিরভাগ বাথরুম তৈরি করে দিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে সেই বিনিয়োগের সুফল ভোগ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এখনো পর্যন্ত স্যানিভেশনের প্রকল্প ভালোভাবে চলছে। স্থানীয় মানুষও সন্তুষ্ট। প্লাস্টিকসহ সব রকমের বর্জ্য পয়ঃপ্রণালীতে গিয়ে পড়ে। কিন্তু সংগৃহিত কাদায় সে সব আলাদা করা হয়। ডেক্সটার গিকাস বলেন, ‘‘আমরা মানুষকে নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনার সুবিধা দিচ্ছি। যে বর্জ্য রোগব্যাধী সৃষ্টি করতো এবং পরিবেশ দূষণ করতো, আমরা তা সরিয়ে দিচ্ছি। আমরা জনপদে কাজ করছি, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান করছি।''
এই কোম্পানি পরোক্ষভাবে প্রায় একশো মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব করেছে। সরাসরি ৫৬ জন কোম্পানির কর্মী হিসেবে কাজ করেন। গোটা প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁরা সক্রিয়। সবার আগে তরল ও কঠিন আলাদা করা হয়। তারপর তরল পদার্থ জেলার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টে নিয়ে যাওয়া হয়।
কঠিন পদার্থ বেশ কয়েকশো ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয়। তারপর সেটি প্রক্রিয়াজাত করে জৈব পদার্থের সঙ্গে মেশানো হয়। চূড়ান্ত ব্রিকেটে পাঁচ থেকে তিরিশ শতাংশ শুকানো মল থাকে। এই কোম্পানি মাসে প্রায় ১০০ টন মলযুক্ত ব্রিকেট তৈরি করে।
জন কারিউকির মতে, রান্নাসহ নানা কাজে এই ব্রিকেট ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এটি আরো কার্যকর, অনেক বেশি টেকসই এবং এতে খাবার ভালোভাবে রান্না করা যায়। জ্বালানি হিসেবে এটির আরো ব্যবহার রয়েছে। চারকোলের অনেক ক্ষতিকারক প্রভাব ছিলো, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু ব্রিকেট পরিষ্কারভাবে ব্যবহার করা যায়। কোনো ক্ষতিকারক নির্গমন ঘটে না।''
একটি ক্যাফের মতো নাইভাশার কিছু রেস্তোরাঁও সেই ব্রিকেট ব্যবহার করছে। আগে সেখানে পাথরের চুলায় লাকড়ি ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সেগুলির দাম আরো বেশি ছিলো। বর্ষার মরসুমে লাকড়ি পাওয়াও কঠিন হতো। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ইউক্রেন সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানে রিয়াদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত

ট্রুডোর বিদায়, কানাডার ক্ষমতায় কার্নি

এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায় :তারেক রহমান

মানুষ জামায়াতকে নেতৃত্বে দেখতে চায় -মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান

আ’লীগ ১৭ বছরে বিএনপিকে একটি ইফতার মাহফিলও করতে দেয়নি- ফখরুল ইসলাম

পারিবারিক বন্ধন জোরদার করুন

খাল কেটে কুমির আনার পরিণতি

জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে ঃ মিয়া গোলাম পরওয়ার

নারীর উপযুক্ত মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে

ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে

পঞ্চগড় থেকে একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন, আশা সারজিসের

প্রশ্ন : আমার মা গত ২০১৭ সালে দীর্ঘ দিন কিডনি, ক্যান্সারসহ নানা জঠিল রোগে ভুগে আমার উপর বেশ রাগ, অভিমান নিয়ে মারা গেছেন। মা খুব অসহায় অবস্থায় মারা যান। বড় সন্তান হিসেবে তার প্রতি দায়িত্ব পালন করিনি। অনেক অবহেলা করেছি, রাগারাগি করেছি, তার চিকিৎসাও ঠিকমতো করিনি। আমি এখন খুব মর্মাহত, ক্ষমা পাওয়ার উপায় আছে কি?

কুরআনের মাস রমজান

মাহে রমজানে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম

তাকওয়া অর্জন ও গুনাহ থেকে পরিত্রাণের মাস রমজান

কুরআনের মাসে হোক কুরআনপ্রীতি

ফেসবুকে পড়শীর রান্নার রেসিপি

নতুন শিল্পীর সাথে গাইলেন আসিফ আকবর

বরখাস্ত কর্মীদের পুনর্বহাল করতে নির্দেশ মার্কিন আদালতের

পাকিস্তানের হানিয়া আমিরের বালিউড যাত্রা