ফ্রান্সে কেন গর্ভপাতের অধিকারকে স্বীকৃতি দিলো?
০৫ মার্চ ২০২৪, ১১:১৫ এএম | আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪, ১১:১৫ এএম
ফ্রান্সই বিশ্বের প্রথম দেশ যারা গর্ভপাতকে সাংবিধানিক অধিকারের স্বীকৃতি দিলো। এমনিতে ফ্রান্সের মানুষ গর্ভপাতের পক্ষে। তা সত্ত্বেও পার্লামেন্ট সদস্যরাও তাকে সাংবিধানিক অধিকারের রূপ দিলেন। সংবিধান সংশোধন করার জন্য একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল। সেখানেই গর্ভপাতের অধিকারকে সাংবিধানসম্মত করা হলো।
২০২২ সালের নভেম্বরে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তখন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে এই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। গত বুধবার সেনেট এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়। গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়টি ফ্রান্সে আগেই জনপ্রিয় ছিল। এমনকী দক্ষিণপন্থি রাজনীতিকরাও এর বিরোধিতা করেননি। তারাও গর্ভপাতকে সংবিধানসম্মত অধিকার করার প্রস্তাব সমর্থন করেছেন। প্রায় পাঁচশ জন সাংসদ ভোটাভুটিতে অংশ নেন। তার মধ্যে ৩০ জন রক্ষণশীল ও নির্দল প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, ফ্রান্সের জনমতও এর পক্ষে ছিল। ২০২২ সালে ফরাসি সংস্থা আইএফওপি যে সমীক্ষা করেছিল, তাতে ৮৬ শতাংশ মানুষ গর্ভপাতকে সাংবিধানিক অধিকার করার পক্ষে রায় দেন। অতি-দক্ষিণপন্থি ন্যাশনাল রেলি পার্টি সাধারণত গর্ভপাতকে সমর্থন করে। তবে এই দলের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়েছে। তাদের ৮৬ জন পার্লামেন্ট সদস্যের মধ্যে ৪৬ জন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এর মধ্য়ে লে পেনও আছেন। ১২ জন বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। বাকিরা ভোটদানে অংশ নেননি।
২০২২ সালের আগে এই অধিকারকে সংবিধানসম্মত করার কথা ভাবা হয়নি। কারণ, তখনো মেয়েদের গর্ভপাতের অধিকার ছিল এবং তারা তা করতে পারতেন। ১৯৭৫ সালে আইন পাস করে ফ্রান্সে গর্ভপাতের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। গর্ভধারণের ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করার অধিকার সেই আইনে দেয়া হয়েছিল। পরে ২০০১ সালে তা বাড়িয়ে ১২ সপ্তাহ করা হয়। ২০২২ সালে তা ১৪ সপ্তাহ করা হয়। ১৯৮০ সাল থেকে ফ্রান্সের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পে গর্ভপাতের বিষয়টি ঢোকানো হয়েছে।
গর্ভপাতের পক্ষে থাকা মানুষরা ফ্রান্সের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, এটা ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ২০২২ সালের ২৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট জাতীয় স্তরে গর্ভপাতের অধিকার বাতিল করে দেয়। তারপরই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ গর্ভপাতকে সংবিধানস্বীকৃত করার প্রয়াস শুরু করেন। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পর আমেরিকায় অনেক রাজ্যই গর্ভপাতকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে।
ইউরোপে গর্ভপাতের আইনকে আরো উদার করার একটা প্রবণতা আছে। নেদারল্য়ান্ডসে গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ, সুইডেনে ১৮ সপ্তাহ, লুক্সেমবুর্গে ১৪ সপ্তাহ, আয়ারল্যান্ড ও ডেনমার্কে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করা যায়। ইইউ-র অনেক সদস্য রাষ্ট্রে দক্ষিণপন্থিরা গর্ভপাতের অধিকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। তার প্রভাবে গর্ভপাতের অধিকারও কাটছাঁট করা হয়েছে।
মাল্টায় মায়ের শরীরে ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পোল্যান্ডেও নানান কড়াকড়ি করা হয়েছে। হাঙ্গেরিতে আইন আরো কড়া করা হয়েছে। ইটালির দক্ষিণপন্থি প্রধানমন্ত্রী মেলোনি গর্ভপাতের বিরোধিতা করলেও বলেছেন, তিনি আইন পরিবর্তন করবেন না। ২০২৩ সালে ইইউ-তে জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৭১ শতাংশ মানুষ গর্ভপাতের সমর্থক, ২১ শতাংশ বিরোধিতা করছেন। এ পরিস্থিতিতে ফ্রান্স গর্ভপাতের অধিকারকে সংবিধানসম্মত করার পক্ষে রায় দিলো। সূত্র: ডয়চে ভেলে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নেতৃত্ব ছাড়ছেন নাজমুল
বরগুনায় ৩টি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবি
দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ চায় বগুড়ায় ডা: শফিকুর রহমান
নিন্দা, সংযমের আহ্বান: ইরানে ইসরাইলি হামলায় বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া
অর্থনীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভোটাররা, জনমত জরিপে এগিয়ে ট্রাম্প
কক্সবাজারে সাগরে গোসল করতে নেমে ভেসেগিয়ে প্রাণ হারাল আরো এক স্থানীয় যুবক
অনন্তকাল ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখবেননা নোয়াখালীতে মাওলানা মামুনুল হক
সিলেটে খেলাফত মজলিসের সমাবেশ ও গণমিছিল বৈষম্য, ফ্যসিবাদ ও দূর্নীতি নির্মূল করার
মহিপুরে সাত ব্যবসায়ীকে জরিমানা
কেসিসি, কেডিএ'র মধ্যকার বৈরিতা দীর্ঘদিনের- সনাক খুলনার আলোচনায় বক্তারা
চবি পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈমা নীর্মার মৃত্যুতে ছাত্রদলের শোকবার্তা
ভারতের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের সিরিজ জয়ের ইতিহাস
রংপুরে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ ও লাঠি মিছিল
ইসরাইলি হামলার পর ইরানে বিমান চলাচল আবার স্বাভাবিক
চবি মেডিকেল সেন্টার সংস্কারের দাবি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে সিরিজ পাকিস্তানের
মুষ্টিযোদ্ধা মো.আলীর সাবেক স্ত্রী প্রতিষ্ঠা করবেন ক্রীড়া সংস্থা!
মতবিনিময় সভায় তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি
রংপুরে হাসনাত-সারজিসের আসার খবরে জাতীয় পার্টির লাঠি মিছিল
যুক্তরাষ্ট্রের এক বাড়িতে আগুন,শিশু সহ নিহত ৪