যুক্তরাষ্ট্রের পর ইউরোপ থেকেও সহায়তা পাচ্ছে ইউক্রেন

অনলাইন ডেস্ক

১৫ মার্চ ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪, ১২:০৮ এএম

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য অবশেষে ৩০ কোটি ডলার অংকের সামরিক সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার ঠিক পরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নও নতুন সহায়তার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর ইইউ ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র কেনার লক্ষ্য যে বিশেষ তহবিল গঠন করেছিল, এবার তার জন্য আরো ৫০০ কোটি ইউরো ধার্য করলো সদস্য দেশগুলি। ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে কোণঠাসা ইউক্রেনের সেনাবাহিনী কিছু অস্ত্র ও গোলাবারুদ হাতে পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রজোট হিসেবে ইইউ সরাসরি প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় করতে পারে না। কিন্তু দুই বছর আগে ইউরোপে রাশিয়ার অভিযানের মুখে নিজস্ব বাজেটের বাইরে নীতিগতভাবে ‘ইউরোপিয়ান পিস ফেসিলিটি' বা ইপিএফ নামের এক তহবিল কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইইউ। ইউক্রেন যুদ্ধের আগে আফ্রিকার কিছু দেশের জন্য সেই তহবিল থেকে সহায়তা করা হয়েছিল। যুদ্ধের শুরু থেকে এই তহবিলের মাধ্যমে ‘পরোক্ষভাবে' ইউক্রেনের জন্য প্রায় ৬১০ কোটি ইউরো অংকের সামরিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে। সদস্য দেশগুলি ইউক্রেনকে যে অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠিয়েছে, সেই ব্যয়ের কিছু অংশ ইপিএফ তহবিল থেকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে ইইউ দেশগুলি ইউক্রেনকে প্রায় ২,৮০০ কোটি ইউরো অংকের সামরিক সহায়তা দিয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক বিষয়ের মতো ইপিএফ তহবিল নিয়েও সদস্য দেশগুলির মধ্যে ঐকমত্যের অভাব দেখা দিয়েছিল। বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানির সংঘাতের কারণে বেশ কিছুকাল সেই তহবিল কার্যত অকেজো হয়ে ছিল। রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ দেশ হিসেবে হাঙ্গেরিও নানা বাধা সৃষ্টি করছিল। সে দেশ ইউক্রেনকে আদৌ কোনো সামরিক সহায়তা পাঠাতে রাজি নয়। জার্মানি ইউক্রেনের জন্য দ্বিপাক্ষিক সামরিক সাহায্যের স্বীকৃতির দাবি করলেও ফ্রান্স শুধু ইউরোপে তৈরি অস্ত্রের জন্য সেই তহবিল ব্যবহারের উপর চাপ দিচ্ছিলো। অবশেষে দুই দেশই আপোশ মীমাংসা মেনে নেওয়ায় তহবিলের অংক বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিহাল ইউরোপ বাড়তি অর্থ ধার্য করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি ইইউ-র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে তহবিলে বাড়তি অর্থ সত্ত্বেও ইউক্রেন কার্যক্ষেত্রে ইউরোপ থেকে কত দ্রুত অস্ত্র ও গোলাবারুদ হাতে পাবে, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে। এক বছর আগে ইইউ চলতি মাসের মধ্যে দশ লাখ গোলাবারুদের প্রতিশ্রুতি দিলেও উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঘাটতির কারণে তা পালন করা সম্ভব হয় নি। চেক প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্বে ১৮টি দেশ ইইউ-র বাইরে থেকে গোলাবারুদ কেনার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার আওতায় তিন লাখ কামানের গোলা কেনা হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেন সেগুলি হাতে পাবে বলে চেক প্রশাসন আশা করছে। আগামী সপ্তাহে ইইউ শীর্ষ নেতারা ইউরোপের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্পক্ষেত্রকে চাঙ্গা করা ও ইউক্রেনের জন্য আরো সহায়তার বিষয়ে ব্রাসেলসে আলোচনা করবেন। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

বিভাগ : আন্তর্জাতিক