ডি-ভোটার থেকে সিএএ ইস্যু, কোন অঙ্কে ভোট আসামে? কার পাল্লা ভারী?
১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম
আজ ভোট শুরু হয়েছে ভারতে। স্বাভাবিক ভাবেই এই মুহূর্তে সর্বত্র আলোচনা ভোট নিয়েই। বিজেপির ‘আব কি বা ৪০০ পার’ সত্যি হবে, নাকি ইন্ডিয়া জোট দুরন্ত লড়াই করে ছিনিয়ে নেবে জয়, তা নিয়ে নানা জল্পনা শোনা যাচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে আলাদা করে চোখ রয়েছে আসামের দিকেও। তিন দফায় ভোট হবে সেরাজ্যে। কী পরিস্থিতি? কাদের দিকে পাল্লা ভারী? কোন অঙ্ক মেনে ভোট হবে উত্তরপূর্বের রাজ্যে?
২০১৪ সালে আসামে বিজেপি পেয়েছিল ৭টি আসন। কংগ্রেস ও এআইইউডিএফ পেয়েছিল ৩টি করে আসন। একটি জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থী। গতবার, ২০১৯ সালে বিজেপির আসনজয় বেড়ে হয় ৯। অগপ ও বিপিএফের সঙ্গে জোট বাঁধলেও ২০২০ সালে বিপিএফকে ছেড়ে ইউপিপিএলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে গেরুয়া শিবির। এবারও তারা ১৪টির মধ্যে ১১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। বাকি দুটি আসন অগপ ও একটি ইউপিপিএলকে ছেড়েছে বিজেপি। শেষপর্যন্ত কী হবে? সেটা সময়ই বলবে। তবে মনে করা হচ্ছে সব মিলিয়ে বিজেপি (BJP) একাই ৯টি আসনে জিতে যেতে পারে। বাকি আসনগুলোর মধ্যে কংগ্রেস ৩টি আসন পেতে পারে। এআইইউডিএফ ১টি ও নির্দল ১টি আসনে শেষ হাসি হাসবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
কোন ম্যাজিকে বাজিমাত করতে পারে গেরুয়া শিবির? এর মধ্যে অন্যতম বাংলার ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর অনুকরণে ‘অরুণোদয় প্রকল্পে’ মহিলাদের মাসিক ১২০০ রুপি, বিনামূল্যে রেশন, স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর মতো পদক্ষেপে মহিলা ভোটারদের একটা বড় অংশের মন জিতে নিয়েছে। যা এবারের ভোটে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি আদিবাসীদের মধ্যে দানখয়রাতও বিজেপিকে অক্সিজেন দেবে। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
প্রসঙ্গত, ১৯ এপ্রিল, ২৬ এপ্রিল ও ৭ মে- তিন দফায় ভোট হবে আসামে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় পাঁচটি, তৃতীয় দফায় চারটি আসনে ভোট। ৩ কোটি ১১ লক্ষ আসামবাসীর ৩৪.২ শতাংশ মুসলিম। ২ কোটি ১৯ লক্ষ ভোটারের মধ্যে ১ কোটি ১২ লক্ষ পুরুষ, ১ কোটি ৭ লক্ষ মহিলা ও ৪৯১ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার। কোন কোন কেন্দ্রের লড়াইয়ের দিকে নজর থাকবে? বেশি আগ্রহ ডিব্রুগড় ও জোরহাট নিয়ে। ডিব্রুগড়ে বিজেপি প্রার্থী রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। রাজ্যসভার এই এমপি এবার লোকসভার টিকিট পেয়েছেন। তার মূল লড়াই এজেপি তথা আসাম জাতীয় পরিষদের নেতা লুরিনজ্যোতি গগৈয়ের বিরুদ্ধে। এজেপিকে এই কেন্দ্র ছেড়েছে কংগ্রেস। সিএএ-বিরোধী আন্দোলন থেকেই জন্ম দলটির। এবার তারা ইন্ডিয়া জোটে শরিক হয়ে ভোটে লড়ছে। যেখানে সর্বানন্দ ছাত্র সংগঠন আসুর নেতা ছিলেন, সেখানে লুরিনজ্যোতিরও কিন্তু উত্থান আসু নেতা হিসেবেই। ২০১৯ ও ২০২০ সালে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনের মুখ এই নেতার সঙ্গে সর্বানন্দ সোনওয়ালের লড়াই কী দাঁড়াবে সেদিকে চোখ থাকবে সকলের। তবে এখানে কিন্তু ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার একটা সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে তত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে আপ প্রার্থী মনোজ ধনোয়ারের সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। ডিগবয়ের আটবারের কংগ্রেস বিধায়ক রামেশ্বর ধানোয়ারের ছেলে লড়াই থেকে হারিয়ে গিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে জোরহাটের হেভিওয়েট প্রার্থী গৌরব গগৈ। এই কংগ্রেস নেতা আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের পুত্র। তিনি কলিয়াবরের এমপি। কিন্তু এবার ওই লোকসভা কেন্দ্রের পুনর্বিন্যাস হয়ে তা কাজিরাঙা কেন্দ্র হয়ে গিয়েছে। নতুন বিন্যাসে মুসলিম ভোট বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ফলে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কের সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর সেই কারণেই গৌরব এবার দাঁড়াচ্ছেন জোরহাট থেকে বলে ধারণা। তবে বিদায়ী এমপি তথা বিজেপি প্রার্থী তপন গগৈয়ের সঙ্গে লড়াই যে খুব আসান হবে না, তা বলাই বাহুল্য।
নজর থাকবে কোকড়াঝাড়ের নির্দল প্রার্থী হীরা সরনিয়ার দিকেও। তার জেতার সম্ভাবনা প্রচুর। স্থানীয়দের মত, আলফা জঙ্গি হীরা এখানে ভূমিপুত্র হওয়ার ফায়দা তুলবেন। আসামের জাতীয়তাবাদের ধুয়ো তুলেও ভোটব্যাঙ্কে তিনি ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন। মনে করা হচ্ছে, সেই কৌশল কাজে আসতে চলেছে। অন্যদিকে ধুবড়ি আসনে ক্ষমতা ধরে রাখবেন এআইইউডিএফ দলের প্রধান বদরুদ্দিন আজমল। শিলচরে বিজেপি প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্যরই পাল্লা ভারী। পাশাপাশি নগাঁও, কাজিরাঙাতে হিন্দু বাঙালিদের ভোট যেতে পারে বিজেপির দিকেই। আগে যা পেয়ে এসেছে কংগ্রেস।
এদিকে স্থানীয় সাংবাদিক সরফরাজ খান বলছেন, ”হিমন্ত বার বার বলছেন ১২টা আসন পাবেন। কংগ্রেস ধুয়েমুছে সাফ। কিন্তু আসল ছবিটা তা নয়। যেমন নগাঁও আসনে প্রদ্যুৎ বরদলুই ভালো লড়াই দেবেন। জোরহাটে গৌরব গগৈ লড়াইয়ে রয়েছেন পুরোদমে। তবে ২ শতাংশ ভোট সুইং হলে ছবি পালটে যাবে। আসাম গণ পরিষদ বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়লেও জাতীয়তাবাদের সেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে ভোট টানার পরিস্থিতি নেই। তবে বিজেপির জন্য যেটা স্বস্তির, তা হল সিএএ নিয়ে যে মাত্রায় বিক্ষোভ হবে ভাবা গিয়েছিল তা হয়নি।”
সব মিলিয়ে শেষ হাসি হাসবে কে, তা সময়ই বলবে। তবে মনে করা হচ্ছে, বিজেপি একাই ৯টি আসনে জিতে যেতে পারে। বাকি আসনগুলোর মধ্যে কংগ্রেস ৩টি আসন পেতে পারে। এআইইউডিএফ ১টি ও নির্দল ১টি আসনে শেষ হাসি হাসবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ফুলক্রুগের গোলে ঘরের মাঠে পিএসজিকে হারিয়ে দিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড
জোড়া গোলে নাসেরকে ফাইনালে তুললেন রোনালদো
ফেরার আগে মুস্তাফিজের 'মেডেন'ও জেতাতে পারলনা চেন্নাইকে
কলাপাড়ায় পিকআপ-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, গুরুতর আহত ২
আইপিডিআই ফাউন্ডেশন হৃদরোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে : স্পিকার
কুড়িগ্রামে ছাত্রীনিবাসের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ভিডিও ধারণ, যুবকের কারাদণ্ড
মানবপাচার-অবৈধভাবে মরদেহ দাফন, সবকিছু বিবেচনায় নেবে ডিবি
হারাম রিজিক খেয়ে ইবাদত কবুল হবেনা-পীর সাহেব বায়তুশ শরফ আল্লামা আব্দুল হাই নদবী
মোদির ভারতে এবার মসজিদের ভেতরে ইমামকে পিটিয়ে হত্যা, ক্ষোভ সর্বত্র
ফরিদপুরের শ্রমিক হত্যার দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে : প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারী মাসউদ
শিক্ষকরাই আগামী দিনের স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর : শিল্পমন্ত্রী
৫ মে হেফাজতের জাতীয় শিক্ষা সেমিনার, সফল করার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
ইরানি নারীদের অনুর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়
বঞ্চিত মেহনতী-শ্রমিক জনতাই ফ্যাসিবাদী এই সরকারের পতন ঘটাবে- এবি পার্টির আলোচনা সভায় বক্তারা
মিল্টন সমাদ্দার গ্রেপ্তার
টেকনাফে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৬
চলমান আন্দোলন বিএনপির একার সংগ্রাম নয়, সকলের : মির্জা ফখরুল
হাসপাতালে পৌঁছেছেন বেগম খালেদা জিয়া
রাজশাহীর মোহনপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় বাইক আরোহী নিহত
ধান উৎপাদনে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ কমাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে : পরিবেশমন্ত্রী