সুনামিতে নিখোঁজ স্ত্রীকে ১৩ বছর ধরে সাগরের গভীরে খুঁজে চলেছেন স্বামী
২৭ জুন ২০২৪, ১১:৩৪ এএম | আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার আশায় সাগরে ছুটে যান ইয়াসু তাকামাতসুর। তবে একবার দুবার নয়,বারবার সাগরের তলায় গিয়ে পাগলের মত খোঁজেন তার হারিয়ে যাওয়া সঙ্গীকে। একদিন দুইদিন নয়, ঘটনার প্রায় ১৩ টা বছর কাটতে চলল। এখনও পর্যন্ত আশাবাদী ইয়াসু। বয়স তার ৬৭ এর দোরগোড়ায়। এক বুক আশা নিয়ে তাই আজও সাগরে ডুবুরির পোশাকে ডুব দিয়ে চলেছেন ইয়াসু।
ইয়োকোকে (স্ত্রী) উদ্ধারে গভীর সাগরে নামার জন্য তিনি ৫৬ বছর বয়সে ডাইভিং শেখার সিদ্ধান্ত নেন ইয়াসু। এরপর ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬০০ বার সাগরে নেমে ইয়োকোকে খুঁজেছেন তিনি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার দেহাবশেষের সন্ধান এখনো পাননি তিনি। তার বিশ্বাস একদিন ঠিক খুঁজে পাবেন তার হারিয়ে যাওয়া স্ত্রীকে।
ইয়াসু তার স্ত্রী ইয়োকোকে নিয়ে জাপানের মিয়াগি প্রদেশের ওনাগাওয়া শহরে বাস করতেন। ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের মূল ভূখণ্ডে প্রলয়ঙ্কর সুনামি আঘাত হেনেছিল। ফলে দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলের বড় অংশ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই সুনামিতে মারা গিয়েছিল হাজারো মানুষ। তবে তাদের মধ্যে নিখোঁজ হন অনেকে। তার স্ত্রীও এইভাবে নিঁখোজ হয়েছিলেন। স্ত্রীর কাছ থেকে শেষ একটা লাইন শুনতে পেয়েছিলেন ইয়াসু। সেই শেষ লাইনটি হল, ‘তুমি কি ঠিক আছো? আমি ঘরে ফিরে যেতে চাই’।
এই শেষ কথাটুকুই একমাত্র সম্বল ইয়াসুর কাছে। স্ত্রীর খোঁজে আজও সাগরে ছুটে যেতে ইয়াসুকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে এই শেষ শব্দগুলো। সুনামির কয়েক মাস পর তিনি তার স্ত্রীর ফোন তার কর্মস্থলের গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে দেখতে পেয়েছিলেন। তাতে একটা অর্থপূর্ণ ছোট বার্তা লেখা ছিল। বার্তায় লেখা ছিল, ‘অনেক বড় সুনামি।’
ইয়োকো-ইয়াসু জুটির প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল ১৯৮৮ সালে। তখন স্ত্রী ইয়োকোর বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর। তিনি কাজ করতেন ওনাগাওয়ার সেভেনটি সেভেন ব্যাংকে। অন্যদিকে, ইয়াসু ছিলেন জাপানের গ্রাউন্ড সেলফ-ডিফেন্স ফোর্সের একজন সেনা। ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা ইয়োকোর সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেনন।প্রথম সাক্ষাতেই মন দিয়ে ফেলন ইয়োকো-ইয়াসু।
পরবর্তীকালে, এই প্রেম পরিণত হয়েছিল বিবাহে। দুজনেই বিয়ে করে সুখে সংসার করছিলেন। ইয়াসু তার স্ত্রীর ব্যাপারে বলেন, ‘ও ছিল ভদ্র। আমি তার হাসি ও বিনয়ী স্বভাব পছন্দ করতাম।’ তিনি জানান, ৫৬ বছর বয়সে তার ডাইভিং শেখার একমাত্র কারণ ছিল, যাতে তিনি সাগর থেকে তার স্ত্রীকে খুঁজে বের করে আনতে পারেন।
উল্লেখ্য, ইয়াসু তাকামাতসুর জীবন নিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও। বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে এটি দেখানো হয়েছে। ‘নোহয়ার টু গো বাট এভরিহয়ার’ (কোথাও যাওয়ার নেই, কিন্তু সবখানেই) ছাড়াও অটল ভালবাসার অসাধারণ এই গল্প ‘দ্য ডাইভার’ শিরোনামের একটি ডকুমেন্টারি তৈরি হয়েছে। যেখানে অটুট ভালবাসার বন্ধন দেখানো হয়েছে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
হবিগঞ্জের সড়কে প্রাণ গেল তিন নারী পোশাক শ্রমিকের
বরিশালে জাতীয় মহাসড়কের ওপর নির্মিত পাক অপসারণে নগর ভবনকে সড়ক অধিদপ্তরের চিঠি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হাতাহাতি, আহত ৩
দুইবার আবেদন করেও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় মাল্টার নাগরিকত্ব পায়নি তারিক সিদ্দিকের পরিবার
মাদুরোকে গ্রেপ্তারে ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
এবি পার্টির জাতীয় কাউন্সিল শুরু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
মায়ের জন্য রান্না করা খাবার নিয়ে হাসপাতালে তারেক রহমান
রাজশাহীতে এবেলা ছাত্রাবাস থেকে রুয়েট শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
লোহিত সাগরে হুথিদের হামলায় পিছু হটল মার্কিন যুদ্ধজাহাজ
আশুলিয়ায় মেরামতের নাম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে
'বিয়ের গন্ডগোল' নিয়ে জোভান–তটিনী আত্মপ্রকাশ
ভারতে বসে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন ফ্যাসিস্টের দোসর আলাউদ্দিন নাসিম
রুশ জ্বালানিখাতে আবারও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
সিরিয়ার দামেস্কের মসজিদে পদদলিত হয়ে নিহত ৪ জন
কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসছে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল
খাদ্য পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রাখতে পুনর্গঠন হলো এফপিএমসি
দেশে অস্তিত্বহীন দলবাজরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করছে: জয়নুল আবদিন ফারুক
ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা
ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১২ বাংলাদেশি
লন্ডন ক্লিনিকে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সবশেষ যা জানা গেল