ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে প্রবল চাপের মুখে জার্মান সরকার

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২২ এএম | আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২২ এএম

 

ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে জার্মানির পপুলিস্ট বিএসডাব্লিউ এবং অতি-ডানপন্থি এএফডি। এই দুই দলই স্যাক্সনি এবং টুরিঙ্গিয়ার সাম্প্রতিক রাজ্য নির্বাচনে ভাল ফল করেছে। ফলে তাদের এই অবস্থান কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলছে।

 

জার্মান সরকারের একজন মুখপাত্র স্যাক্সনি এবং টুরিঙ্গিয়ার রাজ্য নির্বাচনের পর বলেন, ‘রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় প্রতিরোধকে আমরা সমর্থন করি। স্পষ্টতই, আমরা তা চালিয়ে যাব।’ কিন্তু অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) এবং সারা ভাগেনক্নেখট অ্যালায়েন্স (বিএসডাব্লিউ)-এর নির্বাচনী সাফল্যের পর কি এটা সত্যিই ‘আবশ্যিক ছিল’? উভয় পক্ষই ইউক্রেনের জন্য সামরিক সমর্থন বন্ধ করতে এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে উন্নতি চায়।

 

যদিও পররাষ্ট্র নীতির সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নেয়া হয় না, তবে নির্বাচনী প্রচারণায় ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন ছিল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসডাব্লিউ এই নির্বাচনকে যুদ্ধ এবং শান্তির ভিত্তিতে একটি নির্বাচন হিসাবে দেখেছেন। টুরিঙ্গিয়ার এএফডি নেতা ব্যোয়র্ন হ্যোকে বলেন, ‘পূর্ব জার্মানির এই নির্বাচনগুলো সিদ্ধান্ত নেবে জার্মানি যুদ্ধের পথ থেকে সরে এসেছে নাকি দেশ প্রবৃদ্ধির পথে এগোতে চায়। পূর্ব জার্মানির অনেকেই যুদ্ধ বেড়ে চলার আশঙ্কা করেন।’

 

পরিসংখ্যানগুলো এই সমস্যাকে তুলে ধরেছে। চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের কথা অনুযায়ী, ইউক্রেনকে ‘যতদিন প্রয়োজন ততদিন' সমর্থন করতে চায় জার্মান সরকার। তবে, পূর্ব জার্মানিতে এই বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। চলতি বছরের আলেনসবাখ সিকিউরিটি রিপোর্ট অনুসারে, পূর্ব জার্মানির (উত্তরদাতাদের) ৭৬ শতাংশ ভয় পাচ্ছেন যে জার্মানি সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে। পশ্চিম জার্মানিতে এটা ৪৪ শতাংশ। পোলস্টার ইনফ্রাটেস্ট ডিম্যাপের জুলাইয়ের সমীক্ষায়, দেশব্যাপী উত্তরদাতাদের ৩৬ শতাংশ বলেছেন, ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ ‘অনেক বেশিমাত্রায়' হয়েছে। পূর্ব জার্মানিতে এই সংখ্যাটা ছিল ৫০ শতাংশ।

 

পূর্ব জার্মানির ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের ইতিহাসবিদ কাটিয়া হোয়ের বর্তমানে যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা। তার কথায়, ‘‘পূর্ব জার্মানির অনেকেই আরো অস্ত্র সরবরাহের ফলে যুদ্ধ বেড়ে চলার আশঙ্কা করছেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে, আমি বারবার এই যুক্তি শুনেছি, রাশিয়াকে কিছুতেই পরাজিত করা যাবে না, এবং ইউক্রেনের জন্য আরো সমর্থন দরকার। এর ফলে অপ্রয়োজনীয়ভাবে বিষয়টায় উসকানি দেয়া হচ্ছে এবং যুদ্ধ থামতে দেরি হবে।''

 

ডিডাব্লিউ-কে একটি ইমেলে তিনি বলেন, ‘‘এই দৃষ্টিকোণ সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণে পূর্ব জার্মানির অভিজ্ঞতা থেকেও তৈরি হতে পারে। কারণ সোভিয়েত ইউনিয়ন একসময়ে ছিল দুটি বিশ্বশক্তির একটি। সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্য পূর্ব জার্মানির অনেকের মনে শ্রদ্ধার জায়গা ছিল। সেই সোভিয়েত আজকের রাশিয়ায় স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে পশ্চিম জার্মানির ক্ষেত্রে বিষয়টা এমন প্রভাব ফেলেনি।'' তার মত, সাবেক পূর্ব জার্মানিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন সম্পর্কে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ নেতিবাচক ছিল না।

 

স্যাক্সনি রাজ্যের প্রিমিয়ার মাইকেল ক্রেৎশমের নির্বাচনী প্রচারের সময় এই অনুভূতির প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন। তার দল কেন্দ্র-ডান ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) অর্থাৎ বুন্দেস্টগের বৃহত্তম বিরোধী দলে তার এই আচরণ খানিকটা আতঙ্ক তৈরি করেছিল। অনেকে ক্রেৎশমেরের দাবিকে ইউক্রেনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হিসাবে দেখেছেন।

 

সিডিইউ পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞ রোডেরিশ কিয়েসেভেটের এএফডি এবং বিএসডাব্লিউ-র উল্লেখ করে ডয়চে ভেলেকে একটি ই-মেলে লিখেছেন, ‘‘দুর্ভাগ্যবশত সিডিইউ নিজেকে ‘ক্রেমলিনের দুটো শাখার দ্বারা এগিয়ে দিয়েছে।’ ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি শীতল হলে অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক হারে যুদ্ধাপরাধ বাড়বে। পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো ফ্রন্টলাইন সুরক্ষিত-করতে সেনা মোতায়েন করবে।’

 

তার কথায়, ‘‘এটা অন্যান্য আগ্রাসী দেশগুলোর কাছে ‘ব্লু প্রিন্ট' হিসাবে কাজ করবে। এর ফলে আরো লক্ষ লক্ষ শরণার্থী বাস্তুচ্যুত হবে।'' তিনি বলেন, ‘‘অনেক ব্যক্তিকে জার্মানি এবং পশ্চিম ইউরোপে পালিয়ে যেতে হবে।''

 

শরিক কী ভাবছে

 

স্যাক্সনি এবং টুরিঙ্গিয়ার আসন্ন জোট আলোচনায়, ‘ইউক্রেনের সমর্থনে আপনার অবস্থান কী', এই প্রশ্নের পরিণতি জোরালো হতে চলেছে। সিডিইউর পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেওয়ার ভালরকম সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এর জন্য জোটের অংশীদারদের প্রয়োজন। সিডিইউ এএফডির সঙ্গে জোটের কথা অস্বীকার করলেও বিএসডাব্লিউর সঙ্গে জোট করতেও পারে।

 

নির্বাচনের আগে সারা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, তার দলের জোটের প্রবেশ নির্ভর করবে ইউক্রেন ইস্যুর উপরে। তার কথায়, ‘‘আমরা শুধুমাত্র একটা রাজ্য সরকারের অংশ হব যা কূটনীতির জন্য এবং ফেডারেল স্তরে যুদ্ধের প্রস্তুতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেবে।''

 

নির্বাচনের পর থেকে সারার স্বর নরম। তিনি বলেছেন, বিএসডাব্লিউ-এর সঙ্গে জড়িত একটি রাজ্য সরকারকে অবশ্যই প্রকাশ্যে জানাতে হবে, তারা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে আরো ‘কূটনৈতিক উদ্যোগ' দেখতে চায়। সরকারের ‘এই মাত্রায় কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহকে' তারা ‘সমর্থন করে না।'

 

ইতিহাসবিদ কাটিয়া হোয়ের বলেন, ‘‘ক্রেৎশমের প্রথম থেকেই অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে কথা বলেছিলেন।'' তার বিশ্বাস, টুরিঙ্গিয়ার পরিস্থিতি ভিন্ন। সেখানে এএফডি শক্তিশালী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, সিডিইউ থেকে ১০ পয়েন্ট এগিয়ে আছে। তাই ‘বিএসডাব্লিউ সিডিইউকে চাপ দিতে পারে কারণ সেখানকার প্রায় অর্ধেক ভোটদাতা এএফডি বা বিএসডাব্লিউকে ভোট দিয়েছেন, যার অর্থ রাশিয়ার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব আছে, এমন দলকে বেশিরভাগ মানুষ সমর্থন করেছেন।' এমনকি সারা এটাকে বাতিল করে দিলেও, বিএসডাব্লিউ এবং এএফডি-র জোট রাজ্য পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। ফলে বিএসডাব্লিউ অনেক বেশি সুবিধা পাবে।''

 

অন্যদিকে বিএসডাব্লিউ-কে বিন্দুমাত্র ছাড়পত্র দেয়ার বিরোধী কিয়েসেভেটের। তার কথায়, ‘‘বিএসডাব্লিউ হল ক্রেমলিনের দীর্ঘ বাহু। সিডিইউ ও তার বাভারিয়ান সিস্টার পার্টি সিএসইউ সংগঠনের ঐতিহ্যগত মূলবোধের বিরোধী বিএসডাব্লিউ। এই মূল্যবোধগুলো হল, স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শান্তি, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা, গণতন্ত্র এবং প্রতিশ্রুতি বজায় রাথা। তাই বিএসডাব্লিউকে সহযোগিতা করা আত্ম-ধ্বংসের সমান হবে।''

 

একটি উপায় হল, উভয় পক্ষ যদি স্বীকার করে ইউক্রেনের পরিস্থিতির জন্য রাষ্ট্রগুলো দায়ী নয়। তারা খানিকটা অস্পষ্টভাবে শান্তি প্রচেষ্টায় প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। ফেডারেল স্তরে সমস্যাটা যদিও কোনোভাবেই নিষ্পত্তি হয়নি। ইউক্রেনের প্রতি জনসমর্থন কমে যাচ্ছে, বিশেষ করে পূর্ব জার্মানিতে। যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে, জার্মান সরকারের পক্ষে সমর্থনের নীতি চালিয়ে যাওয়া তত কঠিন হবে। ২০২৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের আগে ফেডারেল নির্বাচনের সময় এই বিষয়টা আবারো সামনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসিম : সিলেটে কাইয়ুম চৌধুরী

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসিম : সিলেটে কাইয়ুম চৌধুরী

ডার্ক ওয়েবে গ্রাহকের তথ্য বিক্রির অভিযোগ : সিটি ব্যাংকের ব্যাখ্যা

ডার্ক ওয়েবে গ্রাহকের তথ্য বিক্রির অভিযোগ : সিটি ব্যাংকের ব্যাখ্যা

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ‘বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ‘বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠিত

গফরগাঁওয়ে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে বন্ধুর মৃত্যু

গফরগাঁওয়ে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে বন্ধুর মৃত্যু

কর্মীদের বীমা সুরক্ষা প্রদানে ঢাকা ব্যাংক ও মেটলাইফের চুক্তি স্বাক্ষর

কর্মীদের বীমা সুরক্ষা প্রদানে ঢাকা ব্যাংক ও মেটলাইফের চুক্তি স্বাক্ষর

পাঠ্যবইয়ে নাম যুক্ত হওয়ায় আমার চেয়ে পরিবার বেশি খুশি: নিগার

পাঠ্যবইয়ে নাম যুক্ত হওয়ায় আমার চেয়ে পরিবার বেশি খুশি: নিগার

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় সম্মেলন- ২০২৫ অনুষ্ঠিত

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায় সম্মেলন- ২০২৫ অনুষ্ঠিত

শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার আভাস, বাড়বে রাত-দিনের তাপমাত্রা

শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার আভাস, বাড়বে রাত-দিনের তাপমাত্রা

বগুড়ায় শিবিরের সাবেক কর্মী সাথী ও সদস্যদের মিলন মেলায় রাফিকুল ইসলাম খান

বগুড়ায় শিবিরের সাবেক কর্মী সাথী ও সদস্যদের মিলন মেলায় রাফিকুল ইসলাম খান

ক্যাম্পাসভিত্তিক জুলাইয়ের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখার আহ্বান প্রেস সচিবের

ক্যাম্পাসভিত্তিক জুলাইয়ের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখার আহ্বান প্রেস সচিবের

শিবালয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর পদ্মায় ভেসে উঠলো বারেক মেম্বরের লাশ

শিবালয়ে নিখোঁজের ৫ দিন পর পদ্মায় ভেসে উঠলো বারেক মেম্বরের লাশ

অস্ট্রেলিয়ান ওপেন: যাদের উপর থাকবে নজর

অস্ট্রেলিয়ান ওপেন: যাদের উপর থাকবে নজর

এবি পার্টির কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি‌

এবি পার্টির কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি‌

হ্যানয় গ্র্যান্ড মাস্টার্স-২ দাবায় ফাহাদের হার

হ্যানয় গ্র্যান্ড মাস্টার্স-২ দাবায় ফাহাদের হার

ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা : লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা : লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

মানিকগঞ্জে নিখোঁজ সাবেক ইউপি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে নিখোঁজ সাবেক ইউপি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার

পাঠ্যবই সংশোধনের আহ্বান বিএনপির

পাঠ্যবই সংশোধনের আহ্বান বিএনপির

৭১'র পরাজিত শক্তি ২৪'র আন্দোলনকে ব্যবহার করে ৭১'র গৌরবকে মুছে ফেলতে চায়: নাছির

৭১'র পরাজিত শক্তি ২৪'র আন্দোলনকে ব্যবহার করে ৭১'র গৌরবকে মুছে ফেলতে চায়: নাছির

সীমান্তে অস্থিতিশলীতাই প্রমান করে ভারত কোন দিনই আমাদের বন্ধু ছিলো না : পীর সাহেব চরমোনাই

সীমান্তে অস্থিতিশলীতাই প্রমান করে ভারত কোন দিনই আমাদের বন্ধু ছিলো না : পীর সাহেব চরমোনাই

নাইজেরিয়ায় অতর্কিত বন্দুক হামলা, সরকারি বাহিনীর ২১ সদস্য নিহত

নাইজেরিয়ায় অতর্কিত বন্দুক হামলা, সরকারি বাহিনীর ২১ সদস্য নিহত