সেনেগালের সামরিক চুক্তি বাতিল, ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক অধ্যায়ের ইতি ?
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫১ পিএম | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫২ পিএম
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগাল ও ফ্রান্সের ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবার নতুন মোড়ে পৌঁছেছে। সেনেগালের প্রেসিডেন্ট বাসিরু দিওমায়ে ফায়ের সাম্প্রতিক ঘোষণা যে দেশ থেকে ফরাসি সামরিক ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়া হবে, তা পশ্চিম আফ্রিকার বর্তমান রাজনৈতিক এবং ঐতিহাসিক পরিবর্তনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে, প্রেসিডেন্ট ফায়ে ফ্রান্সকে সেনেগাল থেকে ৩৫০ জন সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।দীর্ঘদিনের প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল করে তিনি বলেন, ফ্রান্সের সামরিক উপস্থিতি দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এই ঘোষণা আসে এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে—১৯৪৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সংঘটিত থিয়ারোয়ে হত্যাকাণ্ডের ৮০তম বার্ষিকীতে। এই হত্যাকাণ্ডে ফরাসি ঔপনিবেশিক বাহিনী বিক্ষুব্ধ সেনেগালি সৈন্যদের ওপর গুলি চালায়, যাদের অধিকাংশই ফ্রান্সের হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়েছিল।
সেনেগালের ফরাসি সামরিক ঘাঁটি সরানোর সিদ্ধান্ত শুধু একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি বাতিল নয়; এটি পশ্চিম আফ্রিকায় ফ্রান্সের ক্রমশ সঙ্কুচিত প্রভাবের প্রতীক। থিয়ারোয়ে হত্যাকাণ্ডের স্মরণসভায় প্রেসিডেন্ট ফায়ে ফ্রান্সের অপরাধের জন্য ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। এর আগে, ২০১২ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া অলাঁদ এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করলেও, ফ্রান্সের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই হত্যাকাণ্ডকে “ম্যাসাকার” হিসেবে বর্ণনা করেন।
পশ্চিম আফ্রিকার অন্য দেশগুলোতে, বিশেষ করে সামরিক সরকারের অধীনে থাকা মালি, বুরকিনা ফাসো, ও নাইজারে ফরাসি সেনাদের বিতাড়ন ইতিমধ্যে ঘটেছে। এসব দেশের মতো সেনেগাল সামরিক সরকার না হলেও, প্রেসিডেন্ট ফায়ের জাতীয়তাবাদী প্রচারণার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছেন। এই সিদ্ধান্ত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে বেড়ে ওঠা অসন্তোষকেও প্রতিফলিত করে।
ফ্রান্সের অর্থনৈতিক উপস্থিতি সেনেগালে এখনও দৃশ্যমান।টোটাল, অরেঞ্জ, ও অশঁর মতো ফরাসি কোম্পানিগুলি দেশটির জিডিপির ২৫ শতাংশে অবদান রাখে। কিন্তু ফায়ে স্পষ্ট করেছেন যে সামরিক চুক্তি বাতিল মানে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ইতি নয়। তিনি চীনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, “চীন আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার হলেও তাদের কোনো সামরিক উপস্থিতি নেই।”
ফ্রান্সের সঙ্গে সেনেগালের এই সামরিক চুক্তি বাতিল পশ্চিম আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক অধ্যায়ের একটি নতুন সমাপ্তির সূচনা করে। সার্বভৌমত্ব ও জাতীয়তাবাদের পক্ষে এই পদক্ষেপ শুধু সেনেগালের জন্য নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। প্রেসিডেন্ট ফায়ের বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে সেনেগাল তার ইতিহাস পুনর্মূল্যায়ন করছে এবং ভবিষ্যতে আরও স্বাধীন কৌশল গ্রহণ করতে চায়। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মুকসুদপুর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিএনপির দু গ্রুপের সভা হয়নি গোটা উপজেলার পরিবেশ শান্ত
সংস্কারের ৩১দফায় তারেক রহমান শিক্ষকদের অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন - ডা. মাজহার
৪৩তম বিসিএসের ২৬৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্ম জয়ন্ত ও মধুমেলা উপলক্ষে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক সভা
পাকিস্তানের সামরিক আদালতের বিচারকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন
রেকর্ড ও পরিসংখ্যানের আয়নায় তামিম
আমরা বিগত ১৮ বছর আওয়ামী জাহেলিয়াতের যুগ পার করেছি- মাওলানা এ টি এম মা’ছুম
টঙ্গীতে নূরুল ইসলাম সরকারের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও মহাসড়ক অবরোধ
দোয়ারাবাজারে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ
ক্যাম্পাস সমূহ র্যাগিং ও মাদকমুক্ত রাখতে হবে: প্রফেসর ড. মাছুমা
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নবীনদের বরণ করে নিলো শহীদ নূর আলী কলেজ
ঈশ্বরগঞ্জে শহীদ পরিবার ও আহতদের মাঝে আর্থিক সহায়তা
ডনবাসের তিনটি এলাকা মুক্ত করেছে রাশিয়া
মার্চের মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে: পরিবহন উপদেষ্টা
খনন ফিল্ডে প্রত্নতাত্ত্বিক তারিখ নির্ধারন সংক্রান্ত মাঠ কর্মশালা
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফরিদপুরে যুব সমাবেশ
ফ্যাসিস্ট দোসর তাপসকে হঠাৎ হিরো বানানোর চেষ্টা!
আ’লীগের নিবন্ধন থাকবে কি না সময় বলে দিবে: সিইসি
সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব ব্যাডমিন্টন খেলা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৪ নিহত ১
দিনাজপুরের প্রখ্যাত লেখক, গবেষক ও সাঁওতাল লোকসংস্কৃতিবিদ গণেশ সরেন আর নেই