রাজনৈতিক সহিংসতার বলি, বোমা বিস্ফোরণে শিশুরা হতাহত
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ এএম | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৩ এএম
রাজনৈতিক সহিংসতার বলি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিশুদের জন্য এক দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক ইতিহাস, যেখানে তারা বাড়ির তৈরি বোমার আঘাতে হতাহতের শিকার হয়।সম্প্রতি এক তদন্তে জানা গেছে, গত তিন দশকে অন্তত ৫৬৫ জন শিশু পশ্চিমবঙ্গে বোমার আঘাতে আহত বা নিহত হয়েছে। কেন এই সহিংসতা ঘটছে এবং কেন এত শিশু এর শিকার হচ্ছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
১৯৯৬ সালের মে মাসের এক সকালে, কলকাতার একটি বস্তির ছয়টি শিশু ক্রিকেট খেলছিল। তার মধ্যে ছিল ৯ বছর বয়সী পুচু সরদার, যে একটি ক্রিকেট ব্যাট হাতে নিয়ে খেলছিল। খেলার মাঝে একটি "বল" খুঁজে পাওয়া যায়, যেটি আসলে একটি বোমা ছিল। খেলতে গিয়ে সেই বোমার বিস্ফোরণে ২ জন শিশু নিহত হয়, আর ৪ জন গুরুতর আহত হয়। এই ঘটনাটি ছিল পশ্চিমবঙ্গের বহু শিশুর মধ্যে একজন, যারা রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য প্রাকৃতিক খেলাধুলার মাঝে বোমার বিস্ফোরণের শিকার হয়েছে।
পুচু, রাচু দাস, গোপাল বিশ্বাস এবং অন্য চারটি শিশু এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের শিকার হয়েছিল। বোমা বিস্ফোরণের ফলে তারা সারা শরীরে ঝলসে যায়, এবং মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়। পুচু আহত হয়েছিল, এক মাসের বেশি হাসপাতালে ছিলেন এবং চিকিৎসার জন্য তার পরিবারকে আরো টাকা জোগাড় করতে হয়। পশ্চিমবঙ্গে সাধারণত রাজনৈতিক সহিংসতার সময় বোমা ব্যবহৃত হয়, বিশেষত নির্বাচনকালে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে বোমা তৈরির প্রথা দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসছে। ১৯০৭ সালে প্রথম বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, যখন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রাম চলছিল। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের "পেটো" নামে পরিচিত বোমাগুলি ঝুটের তার দিয়ে বাঁধা থাকে এবং এতে থাকে শাঁখ, কাঁটা, এবং কাচের টুকরা। এই বোমাগুলি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, বিশেষত ভোটের সময়ে।
অনেক শিশুই, যেমন পুলামি হালদার এবং সাবিনা খাতুন, বোমার বিস্ফোরণে আক্রান্ত হয়েছে। ২০১৮ সালে পুলামি হালদার যখন ফুল সংগ্রহ করতে গিয়ে একটি বোমা তুলেছিল, সেটি বিস্ফোরিত হয়ে তার একটি হাত কেটে যায়। ২০২০ সালে, সাবিনা খাতুনও একটি বোমা হাতে নিয়ে খেলার সময় তার হাত হারিয়ে ফেলে। এই ঘটনায় তাদের জীবন চিরতরে বদলে গেছে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য বোমা ব্যবহারের ঘটনা দীর্ঘকাল ধরে চলছে এবং এর শিকার হয়ে বহু শিশু চিরতরে হতাহত হচ্ছে। নির্বাচনের সময় এই সহিংসতা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিটি পার্টি এই সহিংসতা থেকে নিজেকে দূরে রাখার দাবি করলেও, বাস্তবে এই সহিংসতার মূল কারণ পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলামি, সাবিনা এবং পুচু এখনো আশা রাখেন, যেন ভবিষ্যত প্রজন্ম এই ধরনের বিপদ থেকে মুক্ত থাকতে পারে। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রাজবাড়ীর পদ্মায় বরশিতে ধরা পড়লো ১৬ কেজির বোয়াল মাছ
রাজবাড়ী ডিবেট এসোসিয়েশনের দ্বি-বার্ষিক কমিটি গঠন
প্রথমবারের মতো মক্কার বাইরে পবিত্র কাবার সম্পূর্ণ কিসওয়া প্রদর্শন
মেশিন দিয়ে পানি ছিটিয়ে ধুলো নিয়ন্ত্রণ করছে ভোলা পৌরসভা
তামিমকে মুশফিক-মাহমুদ উল্লাহদের বিদায়ী বার্তা
নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবীতে আশুলিয়ায় সমাবেশ
ইবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের নবনিযুক্ত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ
ইজতেমার সাদপন্থিদের নিষিদ্ধের দাবিতে কুষ্টিয়ায় হেফাজতের বিক্ষোভ
কুষ্টিয়া জেলা সমিতি ঢাকার দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে শেখ সাদী সভাপতি, আবুল হোসেন মহাসচিব নির্বাচিত
সভাপতি মিজানুর ও সা. সম্পাদক আ. হাই নির্বাচিত
মাদরাসা শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য- মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী
চট্টগ্রামে ম্যারাথন অনুষ্ঠিত
নির্দিষ্ট সময়েও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার
কেরানীগঞ্জে বন্ধুকে হত্যার ঘটনায় ঘাতক বন্ধু আল আমিন গ্রেফতার
সস্ত্রীক লন্ডনে গেলেন মির্জা আব্বাস
চট্টগ্রাম ইপিজেডে শ্রমিক সংঘর্ষে আহত অর্ধশত
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার: রিজভী
পটুয়াখালীতে ইমামের উপর সাদপন্থিদের হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
দেশ গড়ার কাজে অন্তর্বর্তী সরকার অভিজ্ঞ নয় : মান্না
ভৈরবে ট্রেনের টিকেটসহ দুই কালোবাজারিকে আটক