ডিয়েগো গার্সিয়ায় শ্রীলঙ্কার তামিলদের অবৈধভাবে আটকে রেখেছিল যুক্তরাজ্য, আদালতের রায়
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১০ পিএম | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
যুক্তরাজ্যের শাসনাধীন ভারত মহাসাগরের দূরবর্তী দ্বীপ ডিয়েগো গার্সিয়ায় শ্রীলঙ্কার তামিল অভিবাসীদের বছরের পর বছর অবৈধভাবে আটকে রাখা হয়েছিল বলে এক বিচারক রায় দিয়েছেন। এই রায় দীর্ঘদিনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি চিত্র সামনে এনেছে।
২০২১ সালে ডিয়েগো গার্সিয়ায় প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েকজন তামিল আশ্রয় প্রার্থনা করেন। দ্বীপটি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোপনীয় সামরিক ঘাঁটি। কিন্তু সেখানে ছোট একটি ঘেরা ক্যাম্পে তাদের বছরের পর বছর আটকে রাখা হয়। অবশেষে, চলতি মাসে যুক্তরাজ্য সরকার তাদের বিশেষভাবে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসে এবং এটি "এককালীন পদক্ষেপ" বলে উল্লেখ করে।
বিচার প্রক্রিয়ায় উঠে আসে, এই ক্যাম্পের অবস্থা ছিল অত্যন্ত নাজুক। তামিলরা সামরিক তাঁবুর নিচে বসবাস করতেন, যা সবসময় সুরক্ষিত ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা। অনেকের দাবি, এই পরিস্থিতি ছিল "জেলখানার মতো"। এক নারী বলেন, "আমরা শুধু একটা বেড়ার মধ্যে ছিলাম, বাইরে যেতে দিত না। এই জীবনটা ছিল নরকের মতো।"
সেপ্টেম্বর মাসে আদালতের শুনানির সময় বিচারক ক্যাম্পটি পরিদর্শন করেন। সেখানে দেখা যায়, অনেক তাঁবু ছেঁড়া ছিল এবং ইঁদুরে বাসা বেঁধে ছিল শয্যার ওপর। দীর্ঘ সময় ধরে বন্দিত্বের কারণে, অনেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ও ক্ষুধা ধর্মঘট শুরু করেন। পরে, কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য রুয়ান্ডা পাঠানো হয়। ক্যাম্পে শিশুদের উপর যৌন হয়রানি এবং নির্যাতনের অভিযোগও ওঠে।
ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান ওশান টেরিটরির (BIOT) বিচারক মার্গারেট ওবি তার রায়ে বলেন, ক্যাম্পটি ছিল "প্রকৃতপক্ষে একটি জেলখানা" এবং এটি শুরু থেকেই বন্দিশিবিরের মতো ছিল। তিনি উল্লেখ করেন, এক ডেপুটি কমিশনারের অবস্থা দেখে মনে হয়েছিল যে তিনি স্বাধীনতার গুরুত্ব সম্পর্কে খুব কমই উপলব্ধি করেছেন।
আইনজীবী টম শর্ট এই রায়কে "মানবাধিকারের বিজয়" এবং ব্রিটিশ ওভারসিজ টেরিটরির জন্য আইনের শাসনের সাফল্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, "এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করার জন্য এই পুরো পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা দরকার।"
ডিয়েগো গার্সিয়া ব্রিটিশ শাসিত চাগোস দ্বীপপুঞ্জের অংশ, যা ১৯৬৫ সালে মরিশাসের কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়। এই দ্বীপের আসল বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে যুক্তরাজ্য সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছিল।বর্তমানে যুক্তরাজ্য ও মরিশাসের মধ্যে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে মরিশাস দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নেবে, তবে ঘাঁটি চালানোর দায়িত্ব যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকবে।
এই রায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মেশিন দিয়ে পানি ছিটিয়ে ধুলো নিয়ন্ত্রণ করছে ভোলা পৌরসভা।
তামিমকে মুশফিক-মাহমুদ উল্লাহদের বিদায়ী বার্তা
নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবীতে আশুলিয়ায় সমাবেশ
ইবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের নবনিযুক্ত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ
ইজতেমার সাদপন্থিদের নিষিদ্ধের দাবিতে কুষ্টিয়ায় হেফাজতের বিক্ষোভ
কুষ্টিয়া জেলা সমিতি ঢাকার দ্বিবার্ষিক নির্বাচনে শেখ সাদী সভাপতি, আবুল হোসেন মহাসচিব নির্বাচিত
সভাপতি মিজানুর ও সা. সম্পাদক আ. হাই নির্বাচিত
মাদরাসা শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য- মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী
চট্টগ্রামে ম্যারাথন অনুষ্ঠিত
নির্দিষ্ট সময়েও শেষ হয়নি রাস্তার কাজ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার
কেরানীগঞ্জে বন্ধুকে হত্যার ঘটনায় ঘাতক বন্ধু আল আমিন গ্রেফতার
সস্ত্রীক লন্ডনে গেলেন মির্জা আব্বাস
চট্টগ্রাম ইপিজেডে শ্রমিক সংঘর্ষে আহত অর্ধশত
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার: রিজভী
পটুয়াখালীতে ইমামের উপর সাদপন্থিদের হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
দেশ গড়ার কাজে অন্তর্বর্তী সরকার অভিজ্ঞ নয় : মান্না
ভৈরবে ট্রেনের টিকেটসহ দুই কালোবাজারিকে আটক
গণিতের জগতে মেয়েদের জায়গা তৈরিতে ড. অ্যাঞ্জেলার মিশন
জাতীয় ঐক্যে অনেকেই ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে : মির্জা ফখরুল
মাভাবিপ্রবিতে লাইফ সায়েন্স বিষয়ক ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত