সিয়াং নদীতে বাঁধ নির্মাণ, পানি নিয়ে ভারত-চীনের নতুন উত্তেজনা
২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:০৬ পিএম | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:১১ পিএম
ভারত এবং চীন দুই দেশই সিয়াং (Siang) নদীতে নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বড় বাঁধ নির্মাণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল জনগণের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। এই বাঁধগুলোর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে পানি এবং নিরাপত্তার জন্য এক নতুন যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ভারত তার আরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নদীর ওপর বড় বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে, যা চীনের একই (অভিন্ন) নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণের প্রতিক্রিয়া।
চলতি জানুয়ারি মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সিয়াং নদীর ওপর একটি বড় বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব দেন, যার মাধ্যমে চীনের নির্মাণাধীন বড় বাঁধের প্রভাব মোকাবিলা করা হবে। চীন ২০২০ সালে তিব্বতে বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করে, যা ভারতের নিরাপত্তা এবং পানি সরবরাহের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
ভারতের এই বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে সিয়াং নদী এলাকার স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায় তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। প্রতিবাদকারীরা বলছেন, এই বাঁধ নির্মাণের ফলে তাদের কৃষিকাজ এবং জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ভারতের আরুণাচল প্রদেশের সিয়াং নদীর ওপর ১৩.২ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে ৯ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি ধারণের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্পটি ১১,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হবে, যা ভারতের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।
ভারতের এই পরিকল্পনার মাধ্যমে স্থানীয় ২০টি গ্রামের বাসিন্দারা ভূমি হারাবে, এবং কয়েকটি গ্রাম আংশিকভাবে ডুবে যাবে। এতে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। তবে, ভারতের বিজেপি সরকার দাবি করেছে যে এটি শুধুমাত্র একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নয়, বরং এর মূল উদ্দেশ্য হল সিয়াং নদীকে চীনের বাঁধ থেকে রক্ষা করা।
মূলত ভারত এবং চীনের মধ্যে একটি পানি-যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হতে চলেছে। চীন তার বাঁধের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশে পানিসংকট সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই বাঁধের ফলে পরিবেশগত বিপর্যয় হতে পারে, এবং এর প্রভাব স্থানীয় জনগণের ওপর মারাত্মক হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এবং বাংলাদেশের জলবিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই বাঁধের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে বাংলাদেশে। বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এবং যদি এই নদীর প্রবাহে কোনো বাঁধার সৃষ্টি হয়, তবে বাংলাদেশের কৃষি, পরিবেশ এবং মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হতে পারে।
এই পানি যুদ্ধের উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দশকে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এই পানি যুদ্ধ কেবল ভারত এবং চীনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ সমস্যা নয়, এটি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম পানিবণ্টন ও পরিবেশের উপর মারাত্নক সমস্যা দাঁড়িয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেছেন, এই পানি সংকট কেবল দুই দেশের সমস্যা নয়, বরং একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তার ইস্যু হয়ে উঠতে পারে।
ভারতের আরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা এবং চীনের তিব্বতে বাঁধ নির্মাণের প্রচেষ্টা, দুই দেশই পানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে আগ্রহী। তবে, এই পানি সংকটের ফলস্বরূপ বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিপুল জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা সবার জন্য একটি গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করেছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে তিনজন আহত
বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন আল গোরের
২০২৪ সালে জলবায়ু সঙ্কটে দেশের সোয়া ৩ কোটি শিশুর শিক্ষা ব্যাহত
মাদারীপুরে মানবপাচারকারীকে গণপিটুনির ভিডিও ভাইরাল
জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে ফিরে আসবে ফ্যাসিস্টরা : কুড়িগ্রামে ডা. শফিকুর রহমান
মোরেলগঞ্জে পল্লী বিদ্যুৎতের মিটার সংকট মিলছে না সংযোগ : গ্রাহকদের ভোগান্তি
রাউজানে জুমার নামাজে যাওয়ার পথে ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা
বাজারে পলিথিন কেন সেটা না ভেবে ভাবুন কেন ব্যবহার করছেন : পরিবেশ উপদেষ্টা
আড়াইহাজারে পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করলো জনতা
টিকটকারদের যন্ত্রণায় বিব্রত মেট্রোরেল যাত্রীরা
কুষ্টিয়ার মিরপুরে হত্যা চেষ্টা মামলায় আটক ২
পেঁয়াজ চাষিদের মাথায় হাত
টঙ্গীতে কারখানার খাবার খেয়ে দেড় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল অবকাশে এখন কক্সবাজার-রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনা
জাতীয় নির্বাচনের জন্যে সকলকে প্রস্তুতি নিতে হবে -কৃষিবিদ শামীম
মহানগর কৃষকদলের উদ্যোগে কোকোর ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
সভাপতি মতিন, সা. সম্পাদক রফিকুল কার্যকরী সভাপতি লিয়াকত
মাগুরায় কোকোর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্প
অপরাধ দমনে খুলনা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ যশোর জেলা পুলিশ
গুঁড়ি গুঁড়ি শিশিরে আলু-বোরো বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক