ইউক্রেনের সঙ্গে ৩০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি পুতিন

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৮ এএম | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৪ এএম

তিন বছর ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে শান্তির একটি নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে ৩০ দিনের জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছেন। গত সপ্তাহে সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়। পুতিন বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান, তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়টি অবশ্যই দ্বন্দ্বের মূল কারণের সমাধানের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।

 

প্রায় তিন বছর ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে, যা ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযানের মাধ্যমে শুরু হয়। এই যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে এবং যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে। প্রথমদিকে রাশিয়া এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের ইঙ্গিত দিলেও, শেষ পর্যন্ত পুতিন এতে সম্মতি দিয়েছেন। তবে তিনি জানিয়েছেন, এই বিরতি যেন কেবল সাময়িক না হয়, বরং এটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তির দিকে এগিয়ে যায়।

 

এর আগে রাশিয়ার শীর্ষ পররাষ্ট্রনীতি কর্মকর্তা ইউরি উসাকোভ বলেছিলেন, ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি ইউক্রেনীয় সেনাদের যুদ্ধক্ষেত্রে স্বস্তি দেবে এবং তাদের শক্তি পুনর্গঠনের সুযোগ করে দেবে। তিনি এটিকে "ভুয়া শান্তি প্রক্রিয়া" হিসেবে অভিহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন, রাশিয়ার আসল লক্ষ্য হলো এমন একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি, যা তাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে। তবে পুতিনের সাম্প্রতিক ঘোষণায় দেখা যাচ্ছে, রাশিয়া এখন আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানের দিকে যেতে আগ্রহী।

 

সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, "আমরা যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবে রাজি। তবে আমরা এমনভাবে আগাবো, যাতে এই বিরতি দীর্ঘমেয়াদী শান্তিতে রূপ নেয় এবং দ্বন্দ্বের মূল কারণের সমাধান হয়।" তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় আগ্রহী রাশিয়া। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, দুই পক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা আরও গভীর হতে পারে।

 

যদিও ৩০ দিনের এই যুদ্ধবিরতি শান্তি প্রতিষ্ঠার এক ধাপ হতে পারে, তবে এটি বাস্তবে কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে উভয় দেশের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর। ইউক্রেন ও রাশিয়া যদি আলোচনার মাধ্যমে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে পৌঁছায়, তাহলে এই যুদ্ধের ভয়াবহতা কমে আসতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের পথে কী কী চ্যালেঞ্জ আসে এবং দুই দেশ কতটা আন্তরিকভাবে এটি মেনে চলে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

ইউক্রেন সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানে রিয়াদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
ট্রুডোর বিদায়, কানাডার ক্ষমতায় কার্নি
বরখাস্ত কর্মীদের পুনর্বহাল করতে নির্দেশ মার্কিন আদালতের
২০২৫-২০২৬ সালে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৬৭ লাখ বৃদ্ধি পাবে : সাহায্য সংস্থা
ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের আরো পর্যালোচনা প্রয়োজন : পুতিন
আরও
X

আরও পড়ুন

ইউক্রেন সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানে রিয়াদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত

ইউক্রেন সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধানে রিয়াদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত

ট্রুডোর বিদায়, কানাডার ক্ষমতায় কার্নি

ট্রুডোর বিদায়, কানাডার ক্ষমতায় কার্নি

এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায় :তারেক রহমান

এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায় :তারেক রহমান

মানুষ জামায়াতকে নেতৃত্বে দেখতে চায় -মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান

মানুষ জামায়াতকে নেতৃত্বে দেখতে চায় -মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান

আ’লীগ ১৭ বছরে বিএনপিকে একটি ইফতার মাহফিলও করতে দেয়নি-  ফখরুল ইসলাম

আ’লীগ ১৭ বছরে বিএনপিকে একটি ইফতার মাহফিলও করতে দেয়নি- ফখরুল ইসলাম

পারিবারিক বন্ধন জোরদার করুন

পারিবারিক বন্ধন জোরদার করুন

খাল কেটে কুমির আনার পরিণতি

খাল কেটে কুমির আনার পরিণতি

জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে ঃ মিয়া গোলাম পরওয়ার

জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে ঃ মিয়া গোলাম পরওয়ার

নারীর উপযুক্ত মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে

নারীর উপযুক্ত মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে

ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে

ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে

পঞ্চগড় থেকে একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন, আশা সারজিসের

পঞ্চগড় থেকে একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন, আশা সারজিসের

প্রশ্ন : আমার মা গত ২০১৭ সালে দীর্ঘ দিন কিডনি, ক্যান্সারসহ নানা জঠিল রোগে ভুগে আমার উপর বেশ রাগ, অভিমান নিয়ে মারা গেছেন। মা খুব অসহায় অবস্থায় মারা যান। বড় সন্তান হিসেবে তার প্রতি দায়িত্ব পালন করিনি। অনেক অবহেলা করেছি, রাগারাগি করেছি, তার চিকিৎসাও ঠিকমতো করিনি। আমি এখন খুব মর্মাহত, ক্ষমা পাওয়ার উপায় আছে কি?

প্রশ্ন : আমার মা গত ২০১৭ সালে দীর্ঘ দিন কিডনি, ক্যান্সারসহ নানা জঠিল রোগে ভুগে আমার উপর বেশ রাগ, অভিমান নিয়ে মারা গেছেন। মা খুব অসহায় অবস্থায় মারা যান। বড় সন্তান হিসেবে তার প্রতি দায়িত্ব পালন করিনি। অনেক অবহেলা করেছি, রাগারাগি করেছি, তার চিকিৎসাও ঠিকমতো করিনি। আমি এখন খুব মর্মাহত, ক্ষমা পাওয়ার উপায় আছে কি?

কুরআনের মাস রমজান

কুরআনের মাস রমজান

মাহে রমজানে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম

মাহে রমজানে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের গুরুত্ব অপরিসীম

তাকওয়া অর্জন ও গুনাহ থেকে পরিত্রাণের মাস রমজান

তাকওয়া অর্জন ও গুনাহ থেকে পরিত্রাণের মাস রমজান

কুরআনের মাসে হোক কুরআনপ্রীতি

কুরআনের মাসে হোক কুরআনপ্রীতি

ফেসবুকে পড়শীর রান্নার রেসিপি

ফেসবুকে পড়শীর রান্নার রেসিপি

নতুন শিল্পীর সাথে গাইলেন আসিফ আকবর

নতুন শিল্পীর সাথে গাইলেন আসিফ আকবর

বরখাস্ত কর্মীদের পুনর্বহাল করতে নির্দেশ মার্কিন আদালতের

বরখাস্ত কর্মীদের পুনর্বহাল করতে নির্দেশ মার্কিন আদালতের

পাকিস্তানের হানিয়া আমিরের বালিউড যাত্রা

পাকিস্তানের হানিয়া আমিরের বালিউড যাত্রা