ফিলিস্তিনিদের আফ্রিকায় ‘পুনর্বাসন’ পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৬ মার্চ ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫, ০২:৫২ পিএম

ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি গাজার ফিলিস্তিনিদের আফ্রিকায় পুনর্বাসন করার একটি বিতর্কিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজা থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য পূর্ব আফ্রিকার তিনটি দেশকে আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে এই প্রস্তাবটি আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।

 

গত ফেব্রুয়ারিতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাগ্রহণের পরই ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকা ‘দখল’ করবে এবং সেখানে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ নির্মাণ করবে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের গাজা থেকে তাড়ানোর প্রস্তাব ছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে মিশর গাজার পুনর্গঠনের জন্য একটি বিকল্প পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিল, যা ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসন না করে সেখানে উন্নয়নমূলক কাজ করার উপর জোর দেয়।

 

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের জন্য সুদান, সোমালিয়া, এবং সোমালিল্যান্ডের সরকারগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। গত মাসে এই আলোচনা শুরু হয়, এবং ১৪ মার্চ এপির প্রতিবেদনে জানানো হয় যে, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র এই তিন দেশের সাথে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

 

কিন্তু, সোমালিয়া এবং সোমালিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। সোমালিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ মোয়ালিম ফিকির স্পষ্টভাবে জানান, তাদের দেশ কোনো প্রস্তাব বা উদ্যোগ গ্রহণ করবে না যা ফিলিস্তিনিদের পূর্বপুরুষের ভূমিতে শান্তিপূর্ণ বসবাসের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করবে। এছাড়াও, সুদানী কর্মকর্তারা এই ধরনের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, একে অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন।

 

এর আগে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজার ফিলিস্তিনিদের তাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, “কেউ গাজা থেকে কোনো ফিলিস্তিনিকে বহিষ্কার করছে না।” এই বক্তব্যটি মার্কিন সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের প্রতি শঙ্কা সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে যখন আরব দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া ছিল খুবই নেতিবাচক।

 

এখন, আন্তর্জাতিক মহলে ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের এই প্রস্তাব নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, তা হলো—ফিলিস্তিনিরা তাদের ঐতিহ্যবাহী ভূমিতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারবে কিনা। তথ্যসূত্র : এপি


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বিতর্কিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ভারতে মুসলিমদের ব্যাপক বিক্ষোভ
‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পরও রুশ হামলা চলছে: জেলেনস্কি
মিয়ানমারের দুই শতাধিক নাগরিক পালিয়ে থাইল্যান্ডে এসেছে, দাবি থাই কর্তৃপক্ষের
টিটিপি দমনে যৌথ উদ্যোগে একমত পাকিস্তান-আফগানিস্তান, বাড়ছে আঞ্চলিক সহযোগিতা
ভারত সফরে আসছেন ইলন মাস্ক, প্রযুক্তি বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা
আরও
X

আরও পড়ুন

আশুলিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়া দেওয়ান পিস্তলসহ গ্রেফতার

আশুলিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়া দেওয়ান পিস্তলসহ গ্রেফতার

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ফের বৈঠকে বিএনপি

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ফের বৈঠকে বিএনপি

বিতর্কিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ভারতে মুসলিমদের ব্যাপক বিক্ষোভ

বিতর্কিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে ভারতে মুসলিমদের ব্যাপক বিক্ষোভ

আশুলিয়ায় নারী পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর ঘরে আগুন, স্বামী পলাতক

আশুলিয়ায় নারী পোশাক শ্রমিককে হত্যার পর ঘরে আগুন, স্বামী পলাতক

রাজধানীতে যুবদল নেতাকে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক

রাজধানীতে যুবদল নেতাকে গুলি, অবস্থা আশঙ্কাজনক

আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পেশ

আজ সন্ধ্যায় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পেশ

লালপুরে ফসলের মাঠ থেকে কবিরাজের মরদেহ উদ্ধার

লালপুরে ফসলের মাঠ থেকে কবিরাজের মরদেহ উদ্ধার

বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে: আসিফ নজরুল

বিচার ব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে: আসিফ নজরুল

‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পরও রুশ হামলা চলছে: জেলেনস্কি

‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণার পরও রুশ হামলা চলছে: জেলেনস্কি

সবাই চায় স্বৈরাচার মুক্ত একটি বাংলাদেশ–বাঁধন

সবাই চায় স্বৈরাচার মুক্ত একটি বাংলাদেশ–বাঁধন

মিয়ানমারের দুই শতাধিক নাগরিক পালিয়ে থাইল্যান্ডে এসেছে, দাবি থাই কর্তৃপক্ষের

মিয়ানমারের দুই শতাধিক নাগরিক পালিয়ে থাইল্যান্ডে এসেছে, দাবি থাই কর্তৃপক্ষের

কোটচাঁদপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল ছয়লাব পার্থেনিয়ামে এই গাছ হতে পারে মৃত্যুর কারণ

কোটচাঁদপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চল ছয়লাব পার্থেনিয়ামে এই গাছ হতে পারে মৃত্যুর কারণ

টিটিপি দমনে যৌথ উদ্যোগে একমত পাকিস্তান-আফগানিস্তান, বাড়ছে আঞ্চলিক সহযোগিতা

টিটিপি দমনে যৌথ উদ্যোগে একমত পাকিস্তান-আফগানিস্তান, বাড়ছে আঞ্চলিক সহযোগিতা

বরিশালে ক্যান্সার হৃদরোগ ও কিডনি হাসপাতাল ভবন নির্মাণ, কাজের অগ্রগতি বর্ধিত সময়ের ১ বছর পরেও মাত্র ৬৫ ভাগ

বরিশালে ক্যান্সার হৃদরোগ ও কিডনি হাসপাতাল ভবন নির্মাণ, কাজের অগ্রগতি বর্ধিত সময়ের ১ বছর পরেও মাত্র ৬৫ ভাগ

ভারত সফরে আসছেন ইলন মাস্ক, প্রযুক্তি বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা

ভারত সফরে আসছেন ইলন মাস্ক, প্রযুক্তি বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা

মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ

মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ

মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতা জারি

মার্কিন নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতা জারি

যতই তথ্যসন্ত্রাস করেন আমি ভারত আর র-এর বিরুদ্ধে কথা বলা থামাব না: প্রথম আলোকে হাসনাত

যতই তথ্যসন্ত্রাস করেন আমি ভারত আর র-এর বিরুদ্ধে কথা বলা থামাব না: প্রথম আলোকে হাসনাত

জকিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা এমএজি বাবর গ্রেফতার

জকিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা এমএজি বাবর গ্রেফতার

ইয়েমেনে আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ইয়েমেনে আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র