ইসরাইল ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে আরব দেশগুলোর কার কী অবস্থান
১০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০২ এএম | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০২ এএম

ফিলিস্তিনিদের দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন করে আরব দেশগুলো। তবে নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও গোষ্ঠীগত উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে দেশগুলোর সম্পর্ক জটিল করে তুলেছে। এতে দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক ও সামরিক সংকট। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় অন্তত সাত লাখ ফিলিস্তিনি নিজেদের ভুখন্ডের ছেড়ে পালিয়েছিলেন বা তাদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। তখন বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনিকে আশ্রয় দিয়েছিল জর্ডান। এ ছাড়া ১৯৬৭ সালের আরব দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধে ইসরাইল জয় পাওয়ার পর ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বাধীন সংগঠন প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) জর্ডানে আশ্রয় নেয়। জর্ডান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ইসাইলে হামলা চালাত পিএলও। দেশটির তৎকালীন বাদশাহ হুসাইনকেও হুমকি দিয়েছিল তারা। ১৯৭০ সালে বাদশাহর মোটর শোভাযাত্রায় এলোপাতাড়ি গুলি চালায় বন্দুকধারীরা। তবে বেঁচে যান বাদশাহ। পরে তিনি পালটা আঘাত করেন এবং গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। তখন হাজার হাজার মানুষ নিহত হন এবং ফিলিস্তিনিদের লেবাননের রাজধানী বৈরুতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৯৪ সালে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে একটি শান্তিচুক্তিতে সই করে জর্ডান। এর আগে একটি দেশই কেবল ইসরাইলের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করেছিল। সেটি ছিল মিসর। আঞ্চলিকভাবে ধনী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দেশটি আব্রাহাম অ্যাকর্ডের (চুক্তি) মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পিএলও জর্ডান থেকে লেবাননে চলে আসার পর ১৯৭৫ সালে বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত দেশটি বহুমুখী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ইসরাইল, সিরিয়া ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলার নিয়মিত লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় ফিলিস্তিনিদের বিভিন্ন শরণার্থীশিবির। এককালে মধ্যপ্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে খ্যাত লেবাননের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই করছিল ওই গোষ্ঠীগুলো। লেবাননে ওই সংঘাত চলেছিল ১৫ বছর ধরে। সে সময় সবচেয়ে নৃশংস ঘটনাগুলোর একটি ছিল—লেবাননের খ্রিষ্টান সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সাবরা ও শাতিলা শরণার্থীশিবিরে অন্তত ৮০০ বেসামরিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা। ওই গোষ্ঠীটির সমর্থন ও অর্থ দিয়েছিল ইসরাইল। তবে ফিলিস্তিনিদের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই ঘটনায় নিহত হন কয়েক হাজার মানুষ। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের অধিকার নিয়ে বরাবরই সোচ্চার লেবানন সরকার। তবে তাদের নাগরিক অধিকার দিতে নারাজ। এ নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখেও পড়েছে দেশটি। লেবানন সরকারের ভাষ্য, তাদের এই নীতির লক্ষ্য হলো—শরণার্থী ফিলিস্তিনিরা যেন লেবাননে স্থায়ী না হয় এবং নিজেদের জন্মভ‚মিতে ফেরত যেতে পারে। আরব দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনবহুল মিসর নিজেদের ফিলিস্তিনের বড় সমর্থক বলে মনে করে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যে নৃশংসতা চলছে, তা বন্ধের জন্য ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতা করছে দেশটি। এর আগেও সেখানে বিভিন্ন সংঘাত থামাতে এবং শান্তি আলোচনায় ভ‚মিকা রেখেছে কায়রো। হামাসসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মিসরের ভালো যোগাযোগ রয়েছে। ২০০৭ সালে ফিলিস্তিনের আইনসভার নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকেই গাজা শাসন করে আসছে হামাস। হামাস মিসরের রাজনৈতিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের একটি শাখা। এই সংগঠন থেকে মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ মুরসি। ২০১৩ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। মিসরের অগ্রাধিকার হলো গাজা ও সিনাই উপদ্বীপের মধ্যে নিরাপত্তা বজায় রাখা। গাজায় হামাস ক্ষমতায় আসার পর থেকে উপত্যকাটি অবরোধ করে রাখতে ইসরাইলকে সাহায্য করছে মিসর। ইসরাইলের সঙ্গে প্রথম কোনো আরব দেশ হিসেবে ১৯৭৯ সালে শান্তিচুক্তি করে মিসর। দেশটিতে বসবাস করা ফিলিস্তিনিদের ভাষ্য, দিন দিন তারা ক্রমবর্ধমান আমলাতান্ত্রিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন। সাদ্দাম হোসেনের আমলে ইরাকে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরা ভর্তুকিতে আবাসন সুবিধা পেত। রয়টার্স।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

সড়ক বিহীন সেতু,কাজে আসছেনা এলাকাবাসীর

দুর্নীতির অভিযোগে নওগাঁ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান

কলাপাড়ায় একটি ছাগলকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সংঘর্ষে, আহত-৪

ফ্যাসিস্টের পতন হয়েছে কিন্তু বিএনপি নিয়ে ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে -মিজান চৌধুরী

উইন্ডিজকে হারালেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ

গাজায় মানবিক সহায়তা নিষিদ্ধ ঘোষণা ইসরায়েলের, সংকট তীব্র

টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. ইউনূস

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে প্রজ্ঞাপন জারি

সুন্নত নামাজে ভুল করে নামাজ শেষ করে ফেলা প্রসঙ্গে?

কূট-কৌশলে ভিআইপিদের টার্গেট করতেন মেঘনা আলম চক্র

সুন্দরবন রক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি করা হোক

ইউনূস-মোদি বৈঠক : একটি পর্যালোচনা

উইন্ডিজের বিপক্ষে সেরাটা দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: নিগার

গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে সংক্ষুব্ধ ‘আমরা’ কারা?

জেনারেল এসির নামে প্রতারণা

ইমরান খান-বুশরা বিবির বিয়ের অজানা অধ্যায় প্রকাশ

নোয়াখালীতে ব্রান্ডের নকল বস্তায় চাউল প্যাকেট করে বিক্রি ;ভোক্তা অধিকারের ১ লক্ষ টাকা জরিমানা

মঞ্চে অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট

মুক্তির অপেক্ষায় মিজানুর রহমান লাবুর সিনেমা আতরবিবিলেন

সোস্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা আমাকে শান্তি দিয়েছে :বাঁধন