ইহ ও পরকালে সফলতার নিশ্চয়তা
২১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০১ এএম
বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে পথ আমাদেরকে বলে দিয়েছেন, যে শিক্ষামালা নিয়ে তিনি আমাদের কাছে আবির্ভূত হয়েছেন, যে মহাগ্রন্থ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আমাদের কাছে নিয়ে এসেছেন, এগুলোর ওপর আমল করে আমরা ইহ ও পরকালের সফলতা অর্জন করতে পারি। আমরা যত বড় জ্ঞানীই হই, যত বড় দার্শনিকই হই, জ্ঞানী-গুণী ও সুপণ্ডিতের যা-ই হই না কেন, এছাড়া ইহকালেও সফলতা অর্জন করতে পারব না এবং পরকালেও সফল হতে সক্ষম হবো না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণের মধ্যেই সফলতার নিগূঢ় রহস্য নিহিত রয়েছে। তারই পথে সাফল্য ও সফলতা বিদ্যমান। তারই পথ সৌভাগ্যের পথ। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে পথের নির্দেশ করেছেন সে পথেই রয়েছে আমাদের সফলতা ও নিষ্কৃতি।
আমাদের জ্ঞান আমাদেরকে কী বুঝায়? আমাদের জ্ঞান আমাদের বুঝায়, আজকের দর্শন, আজকের ব্যবস্থাপনা এবং আজকের শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নতি রয়েছে। আমাদের মন আমাদেরকে এই পন্থা বলে দেয়। এই দর্শন হৃদয়ে বদ্ধমূল করার চেষ্টা চালায়। সে আমাদেরকে জ্ঞানগত এই সমাধান দেয় যে, কিসের দুনিয়া এবং দুনিয়ার চিন্তা? কিসের জাতিস্বার্থ? কিসের জাতি? কিসের প্রতিষ্ঠান? কোথায় মুসলমানদের সমস্যা? পৃথিবীতে মুসলমানদের সমস্যা কোথায়? হিন্দুস্তানের মুসলমানদের সমস্যা কোথায়? খাও দাও ফুর্তি করো! অধিকহারে উপার্জন করো এবং সন্তানদের জন্য অধিক হতে অধিক সম্পদ রেখে যাও। ভালো মানের বাড়ি ও বাংলো নির্মাণ করো।স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করো। বিদেশে পাড়ি জমাও। কিসের চিন্তায় তুমি ডুবে আছো? কিসের পরিণাম? কিসের পরকাল? কোথায় জাতির স্বার্থ? জাতীয় সমস্যার চিন্তা কেন? মুসলমানদের নিয়ে দুশ্চিন্তা কেন? এই ঝক্কি, ঝামেলা ও দুশ্চিন্তায় যদি আমরা পড়ি, তাহলে শান্তি মতো দুমুঠো ভাতও খেতে পারব না! পান করতে পারবো না। এটাতো পুরাতন জ্বর! এই জ্বর আমরা কেন ক্রয় করতে যাব? আমরা খাও দাও ফুর্তি করো নীতিতে বিশ্বাসী! এটা ইউরোপের দর্শন। ফুর্তি করার দর্শন ইউরোপের দর্শন।
আমাদের মন আমাদেরকে বলে : আমাদের বড় সমস্যা ব্যক্তিগত সমস্যা। জাতিগত সমস্যা নয়। সামাজিক সমস্যা নয়। মুসলিম উম্মাহর সমস্যা নয়, বরং সমস্যা হল এককের। যায়দ, আমর ও বকরের। যেসব সমস্যা চিহ্নিত করা হয় সেগুলো জাতির প্রতিটি ব্যক্তির সমস্যা। জাতীয় সমস্যা নয়। আমাদের অভিজ্ঞতা আমাদের বলে : জাতিগত কোন সমস্যা নেই। সুতরাং এটাই ইহকাল এবং এটাই পরকাল। এটাই ভালো এবং এটাই মন্দ। এর ফলে খাবারের যা কিছু পাওয়া যায় তাই খাওয়া হয়। খাবারের জন্য অনেক কিছুই পাওয়া যায়। পরিধান করার জন্য অনেক কিছুই পাওয়া যায়। কিন্তু এই জীবন জন্তু-জানোয়ারের জীবন। বানরের জীবন।
বানরের জীবন কী? গাধার জীবন কী? মহিষের জীবন কী? নির্বিচারে পানাহার করে নেয়! কতক জন্তু নিজের বাচ্চার খবর নেয় না। এমনও দেখা যায়, বাচ্চা মুখ দিলে মা বাচ্চার মুখ থেকে খাবার কেড়ে নেয়। বাচ্চাকে খেতে দেয় না। এটা পশুত্বের দর্শন। এমনটি আমাদের মন আমাদেরকে বলে। শয়তান আমাদের কর্মকে সজ্জিত করে দেখায়। সে বলে : অন্যদের চিন্তায় তোমরা কেন বিগলিত হচ্ছ? সব সময় অন্যদের চিন্তায় ব্যতিব্যস্ত থাকবে কেন? এই ব্যথা ও ব্যাধির মাধ্যমে যে বিগলিত হয় সে সব সময় বিগলিত হতেই থাকে। এই দুশ্চিন্তা তার হাড্ডিকেও গলিয়ে দেয়। এটা আমাদের অন্তর আমাদেরকে বলে।
আমাদের মন আমাদেরকে বলে : কিসের মরণ এবং কিসের পুনরুত্থান? আমাদের পার্থিব জীবনই একমাত্র জীবন। আমরা মরি-বাঁচি এখানেই এবং আমরা পুনরুত্থিত হব না। এসবকিছু ক্রীড়া-কৌতুক। এটাই পৃথিবীর জীবন। আজ আমরা জীবিত আছি। কাল মরে যাব। কোথায় জাতীয় সমস্যা? কোথায় সামাজিকতা? কোথায় জাতির স্বার্থ? কিসের শিক্ষা ও দীক্ষা? এ দেশে কী হচ্ছে? আগামী দিনে কী হবে? আগামী প্রজন্মের কোন দশা হবে? আমাদের উপর কী দায়িত্ব? আমাদের উপর কেবল এতোটুকু দায়িত্ব যে, আমরা পানাহার করব। আনন্দ বিনোদন করব। সন্তানদেরকে লেখাপড়া করানো, তাদেরকে সফল মানুষ বানানো, তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? এদেশে কী হতে যাচ্ছে? আগামী দিনে মুসলমানদের কী হতে পারে? এসব চিন্তা আমরা করতে যাব কেন? এই দর্শন আত্মকেন্দ্রিকতার, স্বার্থবাদিতার ও পাশবিকতার। যখন কোন জাতি এই দর্শন মেনে নেয় এবং নিজের স্বার্থের পিছনে লেগে যায় তার পরিণতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হয়।
একটি ছোট পরিবার। কিন্তু সেই পরিবারও আজ সংকুচিত হচ্ছে। আমি নিজের জীবনেই দেখতে পেয়েছি যে, পরিবার দিন দিন ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতর হয়েছে। আগের দিনের চাচাতো ভাই, খালাতো ভাই, ফুফাতো ভাই ও মামাতো ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক ছিল। যখন মানবতার সম্পর্ক ছিল তখন পুরো ভ্রাতৃত্বের সঙ্গেই সম্পর্ক ছিল। গ্রামের প্রতিটি শিশুকে নিজের শিশু বলে মনে হতো এবং প্রতিটি ব্যক্তিকে নিজের ভাই বলে গণ্য করা হতো। এরপর যখন বস্তুবাদ মানুষের মধ্যে চেপে বসেছে তখন এমন দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে যে, যদি এক মহল্লার কোন শিশু অপর মহল্লার কোন শিশুকে আঘাত করেছে, তাহলে অপর মহল্লার লোকেরা রুষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারা ক্রোধান্বিত হয়ে বলেছে, আমাদের মহল্লার বাচ্চাকে প্রহার করার সাহস সেই মহল্লার শিশু কোথায় পেল? কিভাবে সে এমন কাজ করতে পারল? আমাদের মহল্লার শিশুর দিকে চোখ উঠিয়ে দেখার দুঃসাহস সে কোথায় পেল? এরপর এই মহল্লার লোকেরা সেই মহল্লার লোকদের সঙ্গে জার্মান ও ইংরেজদের লড়াইয়ের মত সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হল! উভয় মহল্লায় তুমুল সংঘর্ষ হলো। (চলবে)
বিভাগ : ইসলামী জীবন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত: বৈরী আবহাওয়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত
ঘুষের দর-কষাকষির অডিও ভাইরাল
আইপিএল: প্লে অফে কে কার মুখোমুখি
আট গোলের রোমাঞ্চ: ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে রিয়ালের ড্র
সহজ জয়ে লা লিগায় রানার্সআপ বার্সা
ক্লপকে অশ্রুসিক্ত বিদায় লিভারপুলের
সিটির অমরত্বের রাত...
বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা
ফতুল্লায় হত্যা মামলার আসামি কেরানিগঞ্জে গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে বান্দরবানে কেএনএফের ৩ সদস্য নিহত
রাজশাহীতে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় পুলিশকে মারপিট, যুবক আটক
স্বাচিপ রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি ডা. জাহিদ, সম্পাদক ডা. অর্ণা জামান
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের দাবিতে সারাদেশে জেলা ও মহানগরীতে ইসলামী
খালেকুজ্জামানের বাড়ী সরকারিভাবে পুননির্মাণের দাবি - ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাবেক বিজেপি নেতা
সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে বিএসটিআই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: প্রেসিডেন্ট
বিক্ষোভ, গাড়ি ভাঙচুর, অটোরিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
কিরগিজস্তানে আহত বাংলাদেশি ছাত্রদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনুন
শিরোপার রুদ্ধশ্বাস অপেক্ষা : শেষ ম্যাচে মাঠে নামছে সিটি-আর্সেনাল