যে আমলে ভাগ্য বদলায়
০২ মার্চ ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪, ১২:০২ এএম

মহান রাব্বুল আলামিন মানুষকে কমবেশি বিবেক-বুদ্ধি দিয়েছেন দুর্গম পথে কাঁটা বেছে চলার জন্য। এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ শ্রেষ্ঠ নবী রহমাতুল্লিল আলামিন কুরআনুল কারিমের আল্লাহ প্রদত্ত ওহির জ্ঞানের মাধ্যমে সেই আলোকিত সড়কের সন্ধান দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি কষ্ট ও পরিশ্রমের মধ্যে।’ (সূরা আল বালাদ-৪)। এ পৃথিবীতে কারো চলার পথ কুসুমাস্তীর্ণ ও সহজ নয়। ছাত্র-শিক্ষক শ্রমিক মজুর চাকরিজীবী সবাইকে প্রতিনিয়ত মেহনত করে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে চলতে হয়।আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘দোয়া ছাড়া কোনো কিছুই ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না আর নেক আমল ব্যতীত হায়াত বৃদ্ধি পায় না।’ (তিরমিজি)।
এক হাদিসে আছে, যদি তোমার ওপর কোনো বিপদ আসে তাহলে এ কথা বলো না- যদি আমি এ রকম করতাম তাহলে আমার এমন হতো না; বরং তুমি বলো আল্লাহ যা তাকদিরে রেখেছেন এবং যে ইচ্ছা করেছেন তাই হয়েছে। কেননা ‘যদি’ কথাটা শয়তানের জন্য কুমন্ত্রণার পথ খুলে দেয়।আল্লাহ তায়ালা কখনো কখনো দোয়ার মাধ্যমে বান্দার জীবনে পরিবর্তন আনেন। বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘এটি শতভাগ সত্যি কথা যে, কোনো বান্দা যখন আল্লাহর কাছে মন থেকে দোয়া করে তাহলে তার তাকদির পরিবর্তন হবে; তবে দোয়াটা সেভাবেই করতে হবে। নিজেকে নিবেদন করতে হবে, আল্লাহর কাছে আকুতি দিয়ে চাইতে হবে। দোয়া কবুল হলে তার ভাগ্যের পরিবর্তন হবেই হবে।’ এ ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- ‘তোমরা ইচ্ছে করলেই দোয়া করতে পারো না যদি আল্লাহ ইচ্ছা না করেন।’ (সূরা তাকভির-২৯)। আল্লাহ তায়ালা যখন আমাদের দোয়া করার তৌফিক দান করেন তখন আমাদের এই দোয়া করা উচিত যে- ‘হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে পানাহ চাই দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা থেকে, দুর্বলতা, অলসতা, অসহায়ত্ব, কৃপণতা, কাপুরুষতা এবং মানুষের অনিষ্ট থেকে।’ (বুখারি-৫৪২৫)।
লক্ষণীয়, আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া-ইবাদত করার জন্য তার তৌফিক চাওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সা.। এক হাদিসে মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. বলেন, একদিন নবী কারিম সা. আমার হাত ধরে বললেন, ‘হে মুয়াজ আমি তোমাকে ভালোবাসি। এরপর তিনি বললেন, হে মুয়াজ আমি তোমাকে ওসিয়ত করছি- তুমি কোনো সালাতের পরে এই দোয়া পড়া ছেড়ে দেবে না। প্রত্যেক সালাতের পরে এই বাক্যটি পড়ে নেবে, হে আল্লাহ তোমার জিকির, তোমার শোকর এবং উত্তমরূপে তোমার এবাদত করার ব্যাপারে তুমি আমাকে সাহায্য করো।’ (মুসনাদে আহমাদ-২২১৭৯)। দোয়া কবুলের শর্ত হলো- হালাল রিজিক ও ঈমান-আমলের একনিষ্ঠতা এবং একাগ্রতা। দোয়ার সময় আল্লাহর প্রশংসাপূর্বক রাসূল সা.-এর ওপর দরূদ পাঠ করে প্রথমত চাইতে হবে মাগফিরাত ও আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি।
রাসূলুল্লাহ সা. সালমান ফারসি রা.কে ওসিয়ত প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমি তোমাকে কয়েকটি শব্দ বলে দিচ্ছি তা দিয়ে পরম দয়ালু আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য কামনা করো, রহমানুর রহিমের দিকে অগ্রসর হও এবং দিন-রাত এসব শব্দ দিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো- ‘হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে আমার ঈমানের সুস্থতা ও তেজোদীপ্ততা প্রার্থনা করছি এবং চরিত্রের মধ্যে ঈমানের প্রভাব কামনা করছি আর এমন সাহায্য চাই যার মধ্যে পরকালের মুক্তি নিহিত রয়েছে। তদুপরি আমি আপনার কাছে রহমত, নিরাপত্তা, ক্ষমা ও সন্তুষ্টি কামনা করছি।’ (সুনানে নাসায়ি-৯৭৬৫)। আবদুল্লাহ ইবনু উমার রা. আল্লাহর নামে শপথ করে বললেন, ‘এদের কারো কাছে যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকে এবং তা দান-খয়রাত করে দেয় তবে আল্লাহ তার এ দান গ্রহণ করবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত সে তাকদিরের ওপর ঈমান না আনবে।’ (বুখারি)। বান্দার দোয়ার মাধ্যমে তাকদিরের পরিবর্তন অসম্ভব নয়। তবে তাকদিরের রয়েছে দু’টি ধরন। একটি হলো- তাকদিরে মুবরাম, যার পরিবর্তন হয় না। যেমন মৃত্যু; তাকদিরে যখন লেখা আছে তখন হবেই।
দ্বিতীয়ত, তাকদিরে মুয়াল্লাক। যেমন দুঃখ কষ্ট রোগ শোক দোয়ার মাধ্যমে পরিবর্তন হয়। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- ‘তোমাদের ওপর যেসব বিপদ-আপদ আসে তা তোমাদেরই কর্মের ফল। তোমাদের অনেক গুনাহ আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দেন।’ (সূরা শুয়ারা-৩০)। সূরা রুমের ৪১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘জলে-স্থলে মানুষের কৃতকর্মের জন্য বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। আল্লাহ তায়ালা তাদের কৃতকর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান যাতে তারা ফিরে আসে।’ রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে এমন কোনো ব্যক্তি নেই, যার ঠিকানা জাহান্নাম কিংবা জান্নাতে লিপিবদ্ধ নেই। উপস্থিত একজন বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ সা. আমরা কি তাহলে এর ওপর নির্ভর করব? তিনি বললেন, না; বরং আমল করো। (বুখারি- ৬১৫২)। সমাজে কিছু মানুষ আছে উন্নাসিক; তারা সবসময় সঙ্কীর্ণতায় ভোগে। আর সতত নিরাশায় ভর করে চলে। আল্লাহ তায়ালা তাদের সান্ত¡না দিয়ে বলেন- ‘নিশ্চয়ই তিনি সবার সন্নিকটে এবং প্রত্যেকের ডাকেই সাড়া দেন তিনি’। (সূরা হুদ-৬১)। উপরোক্ত সূরার ৯০ নম্বর আয়াতে মেহেরবান আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তোমরা তোমাদের গুনাহের জন্য তোমাদের মালিকের কাছে ক্ষমা চাও। অতঃপর তাওবাহ করে তার দিকে ফিরে আসো। নিশ্চয়ই তোমাদের মালিক পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল।’
বিভাগ : ইসলামী জীবন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

কুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানালো ইবি শিক্ষার্থীরা

রায়পুরে স্বেচ্ছাসেবদল কর্মী জসিম হত্যা মামলার ১৪ আসামি গ্রেপ্তার

শার্শায় জমি নিয়ে বিরোধে বাড়িতে হামলা-ভাংচুর-মারপিট, নারীসহ আহত ২

ভারতীয় দূতাবাসের অভিমুখে খেলাফত মজলিসের গণমিছিল

পিরোজপুরে যুবক হত্যায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

আইপিএলে ওয়ার্নারের যে রেকর্ড ভাঙলেন রাহুল

আনোয়ারায় বিভিন্ন মামলায়, গ্রেফতার ৪

মাগুরায় শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন, ২৭ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ

সিলেট টেস্ট চলাকালে হার্ট অ্যাটাকে বিসিবি কর্মকর্তার মৃত্যু

সাভারে নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে ৯৯৯ কল দিলো স্বামী, লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ

হারের চোখ রাঙানি নিয়ে চা বিরতিতে বাংলাদেশ

আন্দোলনের নামে ফ্যাসিস্টকে প্রমোট করছে অদৃশ্য সিন্ডিকেট, দাবি কুমিল্লার ক্রাফ্ট ইন্সট্রাক্টরদের

বকশীগঞ্জ উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের নেতাসহ আটক - ৯

হার্ট অ্যাটাকে সিলেট টেস্টের নিরাপত্তা কর্মকর্তার মৃত্যু

বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩.৩ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ারের সাক্ষাৎ

বন্ধ হচ্ছে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের শতাধিক অফিস

আতঙ্কে কাশ্মির ছাড়ছেন পর্যটকরা, বন্ধ দোকানপাট-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

ব্যাকডোর চাইলে ফ্রান্স ছাড়বে টেলিগ্রাম, দুরভের হুঁশিয়ারি

কুয়েটে ভয়হীন ক্যাম্পাস ও নিরাপদ একাডেমিক পরিবেশের দাবি ছাত্রদলের