রোজার কিছু জরুরি মাসাইল
২৩ মার্চ ২০২৪, ১২:১৫ এএম | আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪, ১২:১৫ এএম
যে সকল কারণে রোজা ভেঙ্গে যায় এবং কাজা-কাফফারা উভয়টি ওয়াজিব হয় : ১. রোজা অবস্থায় কোন প্রকার শরীয়ত সম্মত ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃত পানাহার করা। ২. রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত স্ত্রী সহবাস করা (বীর্যপাত না হলেও।) ৩. রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃত বিড়ি, সিগারেট ও হুক্কা পান করা। ৪. সুবহে সাদিক হয়ে গেছে, এ কথা জেনেও আজান শোনা যায়নি বা সম্পূর্ণরূপে আলো হয়নি, এ ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে ইচ্ছাকৃত পানাহার বা স্ত্রী সহবাস করা। কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি: ইচ্ছাকৃতভাবে ভঙ্গকৃত একটি রোজার পরিবর্তে ধারাবাহিক দুই মাস রোজা রাখতে হবে। চন্দ্র মাসের প্রথম তারিখ থেকে কাফফারার রোজা শুরু করলে লাগাতার দুই মাস রোজা রাখলেই চলবে, যদিও কোন এক মাস ২৯ দিনে হয়। আর চাঁদের প্রথম তারিখ থেকে রোজা শুরু করা না হলে ধারাবাহিক পূর্ণ ৬০ টি রোজা রাখতে হবে। যদি কারো ধারাবাহিক দুই মাস রোজা রাখার সামর্থ্য না থাকে, তাহলে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা পেট ভরে খাবার খাওয়াতে হবে বা তাদের প্রত্যেককে এক ফিতরা সমান (১.৬৩৬ গ্রাম গম বা তার মূল্য) সদকা করে দিতে হবে। আর রোজার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি মিসকীনকে খাওয়ায় তাহলে কাফফারা আদায় হবে না বরং রোজা রাখতে হবে।
যে সকল কারনে রোজা ভেঙ্গে যায় এবং শুধু কাযা ওয়াজিব হয় : ১. ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করা। ২. অনিচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি এসে যাওয়ার পর অল্প হলেও গিলে ফেলা। ৩. আগরবাতি, মশার কয়েল ইত্যাদির ধোঁয়া ইচ্ছাকৃত নাকে টেনে নেওয়া। ৪. এমন বস্তু গিলে ফেলা যা সাধারণত খাওয়া হয় না এবং শরীরের কোনো উপকারে আসে না। যেমন পাথর, কাগজ, মাটি (যদি মাটি খাওয়ায় অভ্যস্ত না হয়) ও গাছের যে পাতা খাওয়া হয় না। যেমন ঘাস ইত্যাদি খাওয়া। ৫. ভুলে পানাহারের পর রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে ইচ্ছাকৃত পানাহার বা স্ত্রী সহবাস করা। ৬. সময় আছে মনে করে সুবহে সাদিকের পর পানাহার করা। ৭. মাড়ি, দাঁত বা মুখ থেকে বের হওয়া রক্ত থুথুর সঙ্গে গিলে ফেলা, যদি গলায় রক্তের স্বাদ অনুভব হয়। / যদি রক্তের পরিমাণ থুথুর থেকে বেশি হয়। ৮. মুখে পান বা অন্য কোন খাবার নিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং এই অবস্থায় সুবহে সাদিক হয়ে যায়। ৯. হস্তমৈথুন বা সেচ্ছায় কোন কিছুর সাহায্যে উত্তেজনার সঙ্গে বীর্যপাত ঘটানো। ১০. সময় হয়ে গেছে মনে করে সূর্যাস্তের পূর্বেই ইফতার করা। ১১. কারো ভয় ও চাপের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে রোজা ভেঙ্গে ফেলা। ১২. অযু-গোসলের সময় রোজার কথা স্মরণ থাকা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃত গলার ভিতরে পানি চলে যাওয়া। ১৩. রোজা অবস্থায় হায়েয বা নেফাস শুরু হওয়া। ১৪. গুহ্যদেশে ওষুধ, পানি ইত্যাদি যাওয়া। ১৫. নাকের ভিতরে ড্রপ, পানি ইত্যাদি টেনে আনা।
যে সকল কারনে রোজা ভাঙ্গে না এবং যা রোজা অবস্থায় মাকরুহও নয় : ১. শরীর, মাথা, দাড়ি ও গোঁফে তেল লাগানো। ২. চোখে সুরমা লাগানো। ৩. চোখে ওষুধ ব্যবহার করা। ৪ মেসওয়াক করা (কাঁচা ডাল হোক কিংবা শুকনা।) ৫. অনিচ্ছাকৃত বমি হওয়া। ৬. থুথু জমিয়ে অল্প অল্প করে গিলে ফেলা। ৭. স্বপ্নদোষ হওয়া। ৮. শরীর দুর্বলতার আশঙ্কা না থাকলে রোজা অবস্থায় পরীক্ষার জন্য রক্ত দেওয়া অথবা নেওয়া। ৯. ইনজেকশন নেওয়া। ১০. কাপড় বা শরীরে সুগন্ধি ব্যবহার করা। ১১. দু-এক ফোঁটা চোখের পানি মুখে চলে যাওয়া। (তবে তা যদি গলার ভিতরে চলে যায় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।) ১২. কানে পানি বা ওষুধ প্রবেশ করানো। ১৩. গোসল ফরজ অবস্থায় শুধু হাত-মুখ ধুয়ে সাহরী খাওয়া। ১৪. অনিচ্ছাবশত গলায় মশা, পোকা বা ধোঁয়া প্রবেশ করা। ১৫. ভুলে পানাহার করা। ১৬. কানে পানি বা কাঠি ইত্যাদি দেওয়া, কান পরিষ্কার করা। ১৭. গোসল করা। ১৮.অযু-গোসলে বা কোন কারণে কুলি করা। ১৯. পেশাবের রাস্তায় ঔষুধ দেওয়া। ২০. নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকলে স্ত্রীকে চুম্বন করা বা স্পর্শ করা। ২১. বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী পানিতে ডুব দেওয়া মাকরুহ নয়। তবে না দেওয়াই উত্তম। ২২. ক্ষত স্থান থেকে রক্ত বা পুঁজ পড়া, শরীরের কোন অঙ্গ কেটে রক্ত বের করা।
সমসাময়ীক বিষয় কিছু জরুরী মাসআলা : ১. সফরের কারণে দিন ১৮- ১৯ ঘণ্টা বা তার চেয়ে বড় হয়ে গেলেও সূর্যাস্তের আগে ইফতার করা যাবে না। তবে অধিক কষ্ট বা অসুস্থ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে রোজা ভাঙ্গা যাবে এবং পরে কাযা করে নিতে হবে। ২. অসুস্থতার কারণে রোযা অবস্থায় গ্লুকোজ স্যালাইন নেওয়া জায়েয। তবে অসুস্থতা ছাড়া দুর্বলতা বা ক্ষুধা নিবারণের জন্য হলে মাকরূহ তাহরীমী হবে। ৩. ডায়ালাইসিস করলে রোজা নষ্ট হয় না। ৪. ল্যাপারোসকপি বায়োপসি করলে ভেতরে যে যন্ত্র প্রবেশ করানো হবে তাতে ওষুধ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না। ৫. এন্ডোসকপি রোজা ভঙ্গের কারণ নয়। তবে এতে সাধারণত পেটের ভিতর পানি দেওয়ার প্রয়োজন হয়, যার ফলে রোজা ভেঙ্গে যায়। ৬. নাকে শুধু অক্সিজেন নিলে রোজা ভাঙবে না।
বিভাগ : ইসলামী জীবন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শেষ বিকেলে লুইস-অ্যাথানেজের 'আক্ষেপে' ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশে
রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?
তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল
অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার
'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল
অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি
নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু
বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন
মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ
যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়