রোজা মানুষের আত্মাকে পরিশুদ্ধ ও আলোকিত করে
০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৮ এএম
রোজা মানুষের নফস বা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ ও আলোকিত মানুষ করে দেয়। সিয়ামের দ্বারা রোজাদার নিজের ব্যক্তিসত্তা বা নফসকে বিধৌত করে। ‘নফস’ শব্দের অর্থ এক কথায় প্রকাশ করা যায় না। প্রধানত মানুষের নিজস্বতা, ব্যক্তির সত্তা, আমিত্ব, প্রবৃত্তি অর্থেও নফস শব্দ ব্যবহৃত হয়। আত্মশুদ্ধির রমজান মাসে সিয়াম-সাধনার মাধ্যমে ‘তাজিকায়ায়ে নফস’ সাধিত হয়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই সাফল্য লাভ করবে, যে পবিত্রতা অর্জন করে এবং তার প্রতিপালকের নাম স্মরণ করে ও সালাত আদায় করে।’ (সূরা আল-আলা, আয়াত: ১৪-১৫)। ইলমে তাসাওউফে নফসকে অবস্থাভেদে ‘নফসে আম্মারা’, ‘নফসে লাওওয়ামা’, ‘নফসে মুতমাইন্না’, ‘নফসে মুলহিমা’ মোটামুটি এই চারটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
১. ‘নফসে আম্মারা’ হচ্ছে প্ররোচক ও প্রলুব্ধকারী প্রবৃত্তি, এক কথায় বলা যায়- কুপ্রবৃত্তি। এই নফস ব্যক্তিকে এমনভাবে বশীভূত করে যে, ব্যক্তির নিজের ওপর কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ থাকে না, তার প্রবৃত্তি যা আদেশ করে, সে তাই সম্পাদন করে, এর ওপর শয়তানের প্রবল প্রভাব বিরাজমান থাকে। ফলে এই নফস ব্যক্তিসত্তাকে সব ধরনের অন্যায়, অপকর্ম ও মন্দ পথের দিকে ধাবিত করে। সোজা কথায়- নফসে আম্মারায় আবেষ্টিত ব্যক্তিসত্তার মধ্যে এমন একটা মনোভাব থাকে যে, পাপ আবার কী? যা ইচ্ছে তাই করতে থাকে।
২. ‘নফসে লাওওয়ামা’ হচ্ছে সেই নফস, যার গুনাহের দিকে আকৃষ্ট হওয়ার প্রবণতা থাকলেও ভুল-ত্রুটি বা পাপকাজ করার পর আতঙ্ক বা ভয় জাগ্রত হয় এবং মন্দকে ভর্ৎসনা করে। গুনাহ করে আত্মগ্লানির কারণে সে ব্যক্তি তওবা করে; কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না; ফলে আবার গুনাহ করে, আবার তওবা করে। এই নফস কিঞ্চিৎ পবিত্র। এর ভালো-মন্দ বোধশক্তি থাকে।
৩. ‘নফসে মুতমাইন্না’ হচ্ছে সেই নফস, যার মধ্যে পবিত্রতার সুরভি আছে এবং নুরানি তেজ আছে। এটাই হচ্ছে আলোকিত নফস। এই নফস সবসময় নেককাজ ও কল্যাণের দিকে মানুষকে ধাবিত করে। মন্দ ও অকল্যাণ এই নফসের কাছে ঘেঁষতে পারে না। এটাই হচ্ছে প্রশান্ত এবং জাগতিক চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে এক অনন্য শান্ত প্রবৃত্তি।
৪. নফসে মুতমাইন্নায় উন্নীত নফস যখন পুণ্যে প্রেরণাদায়ক ও উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী হয় তখন আল্লাহ তায়ালার গোপন ভেদ ও আদেশ তার ওপর প্রতিফলিত হয়, সে ইলহাম বা প্রত্যাদেশ লাভে ধন্য হয়। এই নফসকেই বলা হয় ‘নফসে মুলহিমা’। হাদিস শরিফে নফসের সঙ্গে জিহাদকারীর পরিচয় প্রসঙ্গে এরশাদ হয়েছে, প্রকৃত মুজাহিদ ওই ব্যক্তি, যে নিজের নফসের সঙ্গে জিহাদ করে। নফসের বিরুদ্ধে সংগ্রাম ও সাধনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ বলার আরও একটি তাৎপর্য হলো- কাফের, মুশরিক, ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের পরিচালিত যুদ্ধ কোনো বিশেষ সময়েই সংঘটিত হয়।
যখন ইসলাম ও মুসলমানদের ওপর শত্রুদের আঘাত আসে। যুদ্ধের জয়-পরাজয় নির্ধারিত হওয়ার পর সে জিহাদ বন্ধ থাকে। কিন্তু নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ ও সংগ্রাম হরদম চালিয়ে যেতে হয়। জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই জিহাদের বিরাম নেই, শেষ নেই। এই হিসেবেও নফসের সঙ্গে জিহাদকে জিহাদে আকবর বা সর্বোত্তম জিহাদ বলার সার্থকতা উপলব্ধি করা যায়।
বিভাগ : ইসলামী জীবন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শেষ বিকেলে লুইস-অ্যাথানেজের 'আক্ষেপে' ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশে
রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?
তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল
অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার
'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল
অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি
নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু
বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস
দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম
মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই
দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ
যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি
সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ
করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?
বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন
মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ
যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়