যেসব আমলে নারীরা উদাসীন
২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম

শরীয়তের কয়েকটি বিষয় ও বিধানের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের পার্থক্য থাকলেও অধিকাংশ বিষয় ও বিধানের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সবার বিধান এক। ওইসব বিষয়ের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষের তুলনায় নারীরা এগিয়ে, কিন্তু এমন তিনটি বিষয় ও কাজ আছে, যে কাজে নারীরা বেশ পিছিয়ে ও চরম উদাসীনতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। এই প্রবন্ধে সেই তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা তুলে ধরা হলো-
এক. সালাম : শরীয়তের পরিভাষায় সালামের আদান- প্রদান নারী-পুরুষ সবার জন্য সুন্নত। পুরুষরা পরস্পরে সাক্ষাতে সালামের আদান- প্রদান করে থাকে, কিন্তু নারীদের নিজেদের পরস্পরের সাক্ষাতে সালামের আদান-প্রদানের প্রচলন নেই। তারা মনে করে, সালামের বিধান কেবল পুরুষদের জন্য। আসলে বিষয়টি সঠিক নয়; বরং সালামের বিধান নারী-পুরুষ সবার জন্য সমান। নারীরা যখন নিজেদের মধ্যে পরস্পরের সাক্ষাৎ হয়, তখন সালামের আদান প্রদান করবে। কারণ সালাম এর মধ্যে এমন কিছু সওয়াব ও উপকার আছে যা নারী-পুরুষ সবার জন্য জরুরী। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আগে সালাম প্রদানকারী অহংকার থেকে মুক্ত।’-বায়হাকি:৮৭৮৬, বোঝা গেল, অহংকার মানুষের স্বভাবজাত একটি বিষয়। যা নারী-পুরুষ সবার মাঝেই কম বেশি পাওয়া যায়। আর এই অহংকারকে দূর করার অন্যতম মাধ্যম হলো, অধিক পরিমাণে সালামের আদান-প্রদান করা। তাই নারী-পুরুষ সবার জন্য জরুরি হলো,সালামের অধিক পরিমাণে প্রচার প্রসারের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার (তাকাব্বুর) অহংকার নামক ব্যাধি দূর করা।
অপর এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সেই সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে! তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না তোমরা মুমিন হবে, এবং তোমরা মুমিন হতে পারবেনা; যে পর্যন্ত না পরস্পরে পরস্পরকে ভালবাসবে, আমি কি তোমাদেরকে এমন কাজের কথা বলে দিব না? যা করলে তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা তৈরি হবে, তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালামের আদান প্রদান কর।’-মুসলিম:২০৩, আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একবার এক সাহাবী এসে আসসালামুয়ালাইকুম বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) উত্তর দিয়ে বসে বললেন, তার জন্য ১০টি নেকি। এরপর আরেক সাহাবী এসে- আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ বললেন, তার উত্তর দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তার জন্য বিশ নেকি। অতঃপর আরেক সাহাবী এসে আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) তার সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, তার জন্য ত্রিশ নেকি।’-আবু দাউদ:৫১৯৫, উপরিউক্ত হাদিস সমূহ দ্বারা বোঝা গেল, সালামের আদান-প্রদানে নারী পুরুষের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই; বাকি নারীরা নারীদেরকে দিবে এবং নিজের রক্তের সম্পর্কীয় ও মাহারাম পুরুষ আত্মীয়-স্বজনদেরকেও সালাম দিতে পারবে।
দুই. কোমল ভাষায় কথা বলা: নারীরা গাইরে মাহরাম লোকদের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভাষায় কথা বলবে না; তবে স্বামী ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ও নরম ভাষায় কথা বলবে, কিন্তু পর পুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভাষায় কথা পরিহার করবে। এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, সুতরাং তোমরা কোমল কন্ঠে কথা বলো না, পাছে অন্তরে ব্যাধি আছে এমন ব্যক্তির লালায়িত হয়ে পড়ে। আর তোমরা বলো ন্যায়সঙ্গত কথা।’-সূরা আহযাব:৩২, আয়াতে নারীদেরকে গায়রে মাহরাম বা পর-পুরুষের সাথে কথা বলার নিয়ম শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, তারা যেন ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের সাথে মধুর ও আকর্ষণীয় ভাষায় কথা না বলে। অতএব, স্বামী ও নিকটাত্মীয়দের সাথে নরম ও কোমল ভাষায় কথা বলবে, তাদের সাথে রূঢ় ও শক্ত ভাষা পরিহার করবে। কিন্তু যাপিত জীবনে দেখা যায়, নারীরা আপন স্বামী ও নিকট আত্মীয় দের সাথে নরম ও কোমল ভাষায় কথা বলে না; পর-পুরুষ ও গায়রে মাহরামদের সাথে অত্যন্ত কোমল ও মিষ্টি ভাষায় কথা বলে থাকে।
তিন. মেসওয়াক করা: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মানুষের স্বভাবজাত একটি বিষয়। পোশাক-পরিচ্ছেদ ও শরীর পরিষ্কিার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি মুখের অভ্যন্তর ও দাঁত পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে ইসলাম খুবই গুরুত্বারোপ করেছে। মুখে ময়লা জমে, দাঁতের ফাঁকে খাবারের কণা আটকে মুখে দুর্গন্ধ ছড়ায়। জীবাণুর জন্ম দেয়। বলা হয়, মুখে জমা ময়লা থেকে পেটেরপীড়া সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষতিকর অবস্থা থেকে বেঁচে থাকার অন্যতম উপায় হলো, মেসওয়াক করা।
মেসওয়াকের পরিচয়: মেসওয়াক শব্দ দ্বারা মেসওয়াক করা (তথা মুখ ও দাঁত পরিষ্কারের উদ্দেশ্যে গাছের কাঁচা ডাল দিয়ে দাঁত মাজা) বোঝায়। আর মেসওয়াক শব্দটি গাছের ডাল বা শেকড় বোঝায়। (লিসানুল আরব: ৩/৩৭, রদ্দুল মুহতার:১/১১৩)। প্রাত্যহিক জীবনে পুরুষরা গুরুত্বের সাথে মেসওয়াকের সুন্নাত আদায় করলেও নারীরা এক্ষেত্রে বেশ উদাসীন। অথচ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, চারটি জিনিস নবীদের সুন্নাত। লজ্জা করা, আতর লাগানো, মেসওয়াক করা, বিবাহ করা।’-তিরমিজি:১০৮০। বোঝা গেল, মেসওয়াকের বিষয়ে নারী-পুরুষের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সবার জন্যই একই বিধান। এ ব্যাপারে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু সূত্রে বর্ণিত। হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মেসওয়াক মুখের পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম। আর আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উপায়।’-নাসায়ী:৫। তাই যাপিত জীবনে প্রতিটি মা-বোনদের উচিত হলো, উপরিউক্ত তিনটি আমলের ব্যাপারে উদাসীনতা দূর করে সচেতন হওয়া।
বিভাগ : ইসলামী জীবন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

আলোর মুখ দেখেনি যেসব ঢাকাই সিনেমা

হার্ভার্ড বামপন্থীদের আখড়া, শিক্ষার জন্য উপযুক্ত নয় : ট্রাম্প

ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, কঠিন হবে আশ্রয় পাওয়া

কর্তাব্যক্তির ইশারায় চলে উখিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি-দূদক

ওয়াকফ আইন’ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ

যুক্তরাজ্যে মুসলিমদের কবরস্থান ভাঙচুর, ৮৫টি কবর ভাঙচুর

ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ১৩ বছর আজ, সিলেটে বিএনপির নানা কর্মসূচি

বাংলাদেশকে ৭২৪ কোটি টাকার সহায়তা দেবে জার্মানি

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ২৫ ফিলিস্তিনি

১৫ বছর পর বাংলাদেশ-পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিবরা বৈঠকে বসছেন আজ

উখিয়ায় পৃথক সড়ক দূর্ঘটনায় ১ শিশু নিহত ও আহত ৬

আবারও নিষেধাজ্ঞা পেলেন জহির

সখিপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

আইপিএলে সন্দিপের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড

ডোপ টেস্টে ধরা পড়ে নিষিদ্ধ ইংলিশ পেসার

আমিরাতে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সম্মানে বাংলাদেশ দূতাবাসের জমকালো অনুষ্ঠান

সেই বার্নাব্যুতে রিয়ালকে হারিয়েই সেমিত আর্সেনাল

স্টার্কের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সুপার ওভার রোমাঞ্চ জিতল দিল্লী

সড়ক বিহীন সেতু,কাজে আসছেনা এলাকাবাসীর