গুঁড়িয়ে দেয়া ১২ শতাধিক বাড়ির মালিক অধিকাংশই মুসলিম

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১০ আগস্ট ২০২৩, ০৮:১৫ পিএম | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৪ এএম

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর ১২ শতাধিক ভবন গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসব ভবনের বেশির ভাগের মালিকই মুসলিম বলে জানা গেছে। গত মাসের শেষ দিনে শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর থেকে নুহ জেলার ১১টি শহর ও গ্রামে মোট ১২০৮টি ভবন ভেঙেছে হরিয়ানা সরকার। মোট ৩৭টি সাইটে ৭২.১ একর জমির ওপরে থাকা বসতি ভেঙে ফেলা হয়েছে। আর এর মধ্যে বেশিরভাগ বিল্ডিংয়েই বাস ছিল মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের। সরকারি তথ্য অনুসারে, ভেঙে ফেলা ভবনগুলো নুহ, নলহার, পুনহানা, টাউরু, নাঙ্গল মুবারকপুর, শাহপুর, আগান, আদবর চক, নলহার রোড, তিরঙ্গা চক এবং নাগিনায়। এই নিয়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের বিশেষ দায়িত্বের কর্মকর্তা (ওএসডি) জওহর যাদব দাবি করেন, ১ আগস্ট স্থানীয় পঞ্চায়েতের সাথে বসে সহিংসতায় যুক্তদের চিহ্নিত করা হয়। এরপরই তাদের ভবন ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যাদব দাবি করেন যে সমস্ত নিয়ম অনুসরণ করেই ভবনগুলো ভাঙা হয়েছে। এই অভিযানের আগে নাকি তারা আইনি মতামতও নিয়েছিল এবং সমস্ত রেকর্ড পরীক্ষা করেছিল। এদিকে ভেঙে ফেলা ভবনের অনেকগুলোতে থাকত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। উল্লেখ্য, এর আগে নুহ জেলার এসপি নরেন্দ্র বিজরনিয়া দাবি করেছিলেন, হরিয়ানায় বেআইনিভাবে বসাবসরত বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা ৩১ জুলাইয়ের সহিংসতায় যুক্ত ছিল। এই রোহিঙ্গারা পাথর ছুঁড়েছিল বলে অভিযোগ। এই আবহে পুলিশ সুপার জানান, তারা দোষীদের চিহ্নিত করে একটি তালিক বানিয়েছে। এবং প্রমাণের ভিত্তিতে অনেককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অন্তত ১৭ জন রোহিঙ্গা রয়েছে পুলিশের সন্দেহের তালিকায়। উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই একটি ধর্মীয় মিছিলকে আটকানোর অভিযোগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় হরিয়ানার নুহ এবং গুরুগ্রাম জেলায়। হরিয়ানার বজরং দল কর্মী মনু মানেসারকে কেন্দ্র করেই সেখানের নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায় সহিংসতা ছড়ায়। গত ফেব্রুয়ারিতে ভিওয়ানিতে দুই মুসলিম যুবককে খুন করার ঘটনায় মনু পলাতক। ওই মনু ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেছিলেন যে এই ধর্মীয় মিছিলে তিনি থাকবেন। এই আবহে গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়িকে লক্ষ্য পাথর ছোঁড়া হয়। সেই সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ জন। সেদিন সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রাম সোহনা হাইওয়েতে সহিংসতা ছড়াতে থাকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইট বৃষ্টি। সহিসংতায় দুই হোমগার্ডসহ অন্তত তিনজনের মৃত্যু ঘটেছে। মৃত হোমগার্ডদের নাম- নীরজ এবং গুরুসেবক। ঘটনায় জখম আরো অন্তত ২০০ জন। পরে অন্যত্র সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। রাতে সেক্টর ৫৭-এর মসজিদে হামলা হয়েছিল। আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল মসজিটিতে। সেখানে চালানো হয়েছিল গুলি। তাতে মৃত্যু হয়েছিল এক ইমামের। জখম হয়েছিলেন আরো তিনজন। হিন্দুস্তান টাইমস।


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

৯ মাসে ইরান-কাতার বাণিজ্য ৫৩ ভাগ বেড়েছে
এক সপ্তাহে মসজিদে নববীতে ৫৪ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়
চিকিৎসা নীতিশাস্ত্র গবেষণায় মধ্যপ্রাচ্যে প্রথম ইরান
জুনে জাফর-২ ও পায়া উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে ইরান
ইরানে হিফজ প্রতিযোগিতা: বিকলাঙ্গ হাফেজসহ বাদ ২ প্রার্থী
আরও

আরও পড়ুন

তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা

তনির বিয়ে নিয়ে যা বললেন নেটিজেনরা

ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতে টিকটক সেবা আবার চালু

ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতিতে টিকটক সেবা আবার চালু

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

বিশেষ ক্ষমতা আইন ও শহীদ সবুজ হত্যা মামলায় নকলায় দুই সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার

যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান

যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া জরুরি: আমান

আজ শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

আজ শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

বিলুপ্তির পথে দেশের সিনেমা হল

বিলুপ্তির পথে দেশের সিনেমা হল

যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

যেভাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং ,সতর্কবার্তা  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং ,সতর্কবার্তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী

পঞ্চগড় হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগী

মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

মেডিকেলের ফল পুনঃপ্রকাশের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প

প্রথম দিনেই একগুচ্ছ নির্বাহী আদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প

ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের

ড. ইউনূস সরকারের সমালোচনা করা রিপোর্ট প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের

প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত

প্যারিসে জুলাই জার্নাল অব ডিক্টেটরশিপ প্রদর্শনী, যা সবার আয়োজন করা উচিত

বিরতির প্রথম দিন :  গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী  ট্রাক

বিরতির প্রথম দিন : গাজায় ঢুকলো সাড়ে ৫ শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক

ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু

ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিদগ্ধে গৃহবধূর মৃত্যু

আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন

আল-কাসসাম মুখপাত্র গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেন

ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ

ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ নিঃশ্বাসে ঢুকছে বিষ

মিরপুরে বাটা শো-রুমে লাগা আগুন নিভেছে

মিরপুরে বাটা শো-রুমে লাগা আগুন নিভেছে

মিত্রদের জড়ো করুন, শত্রুদের চিহ্নিত করুন : মাহফুজ আলম

মিত্রদের জড়ো করুন, শত্রুদের চিহ্নিত করুন : মাহফুজ আলম

জয়া ও তার কুকুর একই অসুখে ভুগছে

জয়া ও তার কুকুর একই অসুখে ভুগছে