সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিম তীরেও, ২ ফিলিস্তিনি নিহত

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০২ এএম

ফিলিস্তিনের রাজধানী পূর্ব জেরুজালেম থেকে ৪৯ কিলোমিটার উত্তরে পশ্চিম তীরের নাবলুস শহর। বুধবার এই শহরে ইসরাইলি বসতিস্থাপনকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন ইব্রাহিম ওয়াদি (৬২) এবং তার ছেলে আহমাদ (২৪)। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, বুধবার ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন ইব্রাহিম ওয়াদির চার আত্মীয়। তাদের জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য নিজেদের ব্যক্তিগত গাড়িতে রওনা দিয়েছিলেন ইব্রাহিম ওয়াদি ও আহমাদ। যাত্রাপথে নাবালুস শহরের দক্ষিণাঞ্চলীয় গ্রাম কুসরায় চলন্ত গাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে পিতা-পুত্রের। গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সংগে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) চলমান যুদ্ধের আঁচ পৌঁছেছে পশ্চিম তীরেও। গত ১২ দিনে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী ও বসতি স্থাপনকরীদের গুলিতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৬১ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ২৫০ জন ফিলিস্তিনি। বুধবার সেই নিহতের তালিকায় যুক্ত হলো ইব্রাহিম ওয়াদি ও তার ছেলে আহমাদের নামও। মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে গত ১২ দিন ধরে যুদ্ধ চলছে হামাস ও আইডিএফের মধ্য। গত ৭ অক্টোবর শনিবার ইসরাইলে হামাসের অতর্কিত হামলা ও সীমান্ত বেড়া ভেঙ্গে অনুপ্রবেশের মধ্যে দিয়ে এই যুদ্ধের সুত্রপাত। প্রাথমিক গোয়েন্দা তথ্য ও প্রস্তুতির অভাবে যুদ্ধের শুরুর দিকে খানিকটা অপ্রস্তুত অবস্থায় থাকলেও অল্প সময়ের মধ্যেই পূর্ণ শক্তি নিয়ে ময়দানে নামে ইসরাইল এবং হামাসের এই হামলার জবাবে শনিবার থেকেই গাজা উপত্যকায় পাল্টা অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বিমান বাহিনী। যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত হামাসের হামলায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরাইলি। এছাড়া হামলার প্রথম দিনই ইসরাইল থেকে দেড় শতাধিক বেসামরিক ইসরাইলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিককে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে গেছে হামাস। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনও অজানা। অন্যদিকে, গত ১২ দিন ধরে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর অব্যাহত বোমা বর্ষণে গাজায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ হাজার ৪৭৮ জনে এবং আহত হয়েছেন ১০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। গাজা উপত্যকার এই সংঘাতের সংবাদ পশ্চিম তীরে পৌঁছালে স্বাভাবিকভাবেই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সেখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা এবং তাদের এই বিক্ষোভ দমন করতে ইসরাইলের পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর পাশপাশি তৎপর হয়ে ওঠে বসতি স্থাপনকারীরাও। নাবলুস শহরে বিক্ষোভের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে কুসরা গ্রামটি। ওই গ্রামের মেয়র হানি ওদেহ সিএনএনকে বলেন, বুধবার তার গাড়িতেও হামলা হয়েছে এবং সে সময় গাড়িতে ছিলেন তিনি। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে কুসরায় বসতি স্থাপনকারীরা মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বেশিরভাগই সশস্ত্র। ইসরাইলি পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে।’ একটি বিশেষ কাজে আমার কুসরার বাইরে যাওয়ার দরকার ছিল। আমি কোগাটকে (ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের কর্তৃপক্ষ কো অর্ডিনেশন অব গভর্নমেন্ট অ্যাক্টিভিটিজ ইন দ্য টেরিটোরিজ) এ ব্যাপারে অবহিত করলাম এবং জবাবে তারাও সবুজ সংকেত দিলো।’ ‘কিন্তু নিজ গাড়িতে যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পরেই আমার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হলো। আমি গাড়ি থামিয়ে সড়কে টহলরত ইসরাইলি সেনাদের এ ব্যাপারে জানালাম, কিন্তু তারা আমাকে পাত্তাই দিতে চাইল না।’ এ ব্যাপারে আরও তথ্য জানতে কোগাট ও আইডিএফের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল সিএনএন, তবে এই দুই সংস্থার কোনো কর্মকর্তাই এ ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি। সিএনএন।


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

২২ মে থেকে বাজারে নওগাঁর আম, সবশেষে আম্রপালি

২২ মে থেকে বাজারে নওগাঁর আম, সবশেষে আম্রপালি

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

৬৪ বছর বয়সে বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণ

৬৪ বছর বয়সে বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণ

টঙ্গীতে প্লাস্টিকের গোডাউনে আগুন

টঙ্গীতে প্লাস্টিকের গোডাউনে আগুন

ইসরায়েলি অভিযান, রাফা ছেড়েছেন ৬ লাখ ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি অভিযান, রাফা ছেড়েছেন ৬ লাখ ফিলিস্তিনি

র‍্যাব-১১ হাতে ২২ বছর পর স্ত্রী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

র‍্যাব-১১ হাতে ২২ বছর পর স্ত্রী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে আরও দেশের প্রতি আহ্বান এরদোয়ানের

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে আরও দেশের প্রতি আহ্বান এরদোয়ানের

বাগেরহাটে সংসদ সদস্যের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

বাগেরহাটে সংসদ সদস্যের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

এই ট্রেনে চড়েই চলে যাবেন বিশ্বের একেবারে শেষ প্রান্তের… কোথায় জানেন

এই ট্রেনে চড়েই চলে যাবেন বিশ্বের একেবারে শেষ প্রান্তের… কোথায় জানেন

পশ্চিমবঙ্গের মালদহে বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

পশ্চিমবঙ্গের মালদহে বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

হংকং-সিঙ্গাপুরের পর এবার নেপালে নিষিদ্ধ হলো ভারতীয় মশলা

হংকং-সিঙ্গাপুরের পর এবার নেপালে নিষিদ্ধ হলো ভারতীয় মশলা

চবি ঝর্ণা দেখতে এসে ঝরে গেল আরও একটি প্রাণ

চবি ঝর্ণা দেখতে এসে ঝরে গেল আরও একটি প্রাণ

ইউরোপের নির্বাচনে কড়া শরণার্থী নীতি কতটা প্রভাব ফেলবে?

ইউরোপের নির্বাচনে কড়া শরণার্থী নীতি কতটা প্রভাব ফেলবে?

নামাজের সময় মসজিদে ধরিয়ে দেওয়া হলো আগুন, নিহত ১১

নামাজের সময় মসজিদে ধরিয়ে দেওয়া হলো আগুন, নিহত ১১

চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫

চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫

ফিলিপাইনের জাহাজের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছে চীনা কোস্টগার্ড

ফিলিপাইনের জাহাজের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছে চীনা কোস্টগার্ড

গাজায় জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান আরব লিগের

গাজায় জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান আরব লিগের

আর‌ও এক বিরল রোগের ঝুঁকি, ফের কাঠগড়ায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা

আর‌ও এক বিরল রোগের ঝুঁকি, ফের কাঠগড়ায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা

‘অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা’ তত্ত্ব একেবারে ভিত্তিহীন: চীন

‘অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা’ তত্ত্ব একেবারে ভিত্তিহীন: চীন

উখিয়া টেকনাফের সীমান্ত এলাকা অবৈধ অস্ত্র, মাদক চোরাচালানের রোডম্যাপে পরিণত হচ্ছে

উখিয়া টেকনাফের সীমান্ত এলাকা অবৈধ অস্ত্র, মাদক চোরাচালানের রোডম্যাপে পরিণত হচ্ছে