গাজার হাসপাতালে হামলা ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ : জাতিসংঘ

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১১ এএম | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১১ এএম

হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীকেও গাজায় বন্দি ইসরাইলি জিম্মিদের প্রতি তাদের আচরণের জন্য যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে। হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য ইসরাইল একটি ‘সমন্বিত নীতির’ কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে জাতিসংঘের একটি তদন্ত কমিশন অভিযোগ জানিয়েছে। কমিশনটি বলছে, গাজার স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে ইসরাইলি হামলা এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের প্রতি ইসরাইলের আচরণ যুদ্ধাপরাধের পাশাপাশি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীকেও গাজায় বন্দি ইসরাইলি জিম্মিদের প্রতি তাদের আচরণের জন্য যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়েছে প্রতিবেদনে। ইসরাইল এখনও এই বিষয়ে মন্তব্য করেনি। তবে তারা দীর্ঘকাল ধরে জাতিসংঘকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিহিত করে আসছে এবং পূর্ববর্তী সমালোচনামূলক প্রতিবেদনগুলোকে খারিজ করে দিয়েছে।

৩০ অক্টোবর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপনের জন্য এই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে, যেটির নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান নাভি পিল্লাই।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী ‘চিকিৎসা কর্মীদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে হত্যা, আটক এবং নির্যাতন’ করেছে এবং শিশুরা ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পতন’ এর ‘ক্ষতি বহন করছে’।

কমিশনটি পাঁচ বছরের শিশু হিন্দ রাজবের ঘটনাটি উল্লেখ করেছে। রাজবের পরিবার তাকে সহ বোমা হামলা থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় তাদের গাড়িতে বোমা আঘাত হানে। বেশ কয়েকজন পরিবারের সদস্য তাতে নিহত হলেও ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টকে সাহায্যের জন্য ফোন করতে সক্ষম হয়। শিশুটির কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা অ্যাম্বুলেন্সটিও শেলিংয়ের শিকার হয় এবং রাজব, তার পরিবারের সদস্যরা এবং অ্যাম্বুলেন্স কর্মীসহ সবাই মারা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ইসরাইলি হামলা ‘জীবনের ওপর আঘাত, যেটি ফিলিস্তিনি শিশুদের একটি প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং সম্ভাব্যভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের ধ্বংসের কারণ হয়েছে।’

প্রতিবেদনে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর নির্যাতন এবং গাজায় আটক ইসরাইলি জিম্মিদের ওপর ‘যৌন এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা’সহ নানা অত্যাচারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্যাতন এবং যুদ্ধাপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিদের প্রতি আচরণের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও রয়েছে।

প্রতিবেদনে সরাসরি ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতার বেন গভীরের নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এসব নির্যাতন তার “সরাসরি নির্দেশে” সংঘটিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে এসব নির্যাতনের বিশদ প্রমাণ রয়েছে এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যের চলমান যুদ্ধের পরিচালনা নিয়ে আরও উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। এই উদ্বেগগুলো আন্তর্জাতিক আদালতে একটি মামলায় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তদন্তে প্রতিফলিত হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অবিশ্বাস্য হামলায় দক্ষিণ ইসরাইলে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এ হামলার প্রতিশোধ নিতে এবং হামাসকে ধ্বংস করার অভিপ্রায় নিয়ে পরের দিন থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল।

গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, সেখানে ইসরাইলি অভিযান ও হামলায় এখন পর্যন্ত ৪২ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স।


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ সৌদি আরবে এবার মিললো 'হোয়াইট গোল্ড'
পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
ইরানের তৈরি চালকবিহীন যুদ্ধবিমানের ফ্লাইট পরীক্ষা চলছে
ইরানের রপ্তানিতে জ্ঞান-ভিত্তিক পণ্যের অবদান ৫ শতাংশ
অলিম্পিক-প্যারালিম্পিকে পদক বিজয়ীদের পুরস্কার দিলেন পেজেশকিয়ান
আরও

আরও পড়ুন

সংস্কারোত্তর পিআর পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে

সংস্কারোত্তর পিআর পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে

‘শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে’

‘শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে’

‘রাষ্ট্রের সকল স্তরে ইসলামী সংস্কৃতির অনুশীলন নিশ্চিত করতে হবে’

‘রাষ্ট্রের সকল স্তরে ইসলামী সংস্কৃতির অনুশীলন নিশ্চিত করতে হবে’

মেট্রোকে থামিয়ে ফাইনালে রংপুর

মেট্রোকে থামিয়ে ফাইনালে রংপুর

৪৩ বছর পর কুয়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী

৪৩ বছর পর কুয়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী

আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি, হাসিনার ভরসা ভারতে: দুলু

আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি, হাসিনার ভরসা ভারতে: দুলু

মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল, কানাডায় কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন ট্রুডো?

মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল, কানাডায় কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন ট্রুডো?

পাকিস্তান থেকে যেসব পণ্য নিয়ে এবার এলো জাহাজ

পাকিস্তান থেকে যেসব পণ্য নিয়ে এবার এলো জাহাজ

ভারতের সেবাদাসী হাসিনাকে পুনর্বাসনে এবার জঙ্গি মিশনে তারা!

ভারতের সেবাদাসী হাসিনাকে পুনর্বাসনে এবার জঙ্গি মিশনে তারা!

মাহফুজকে উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়া উচিত? যা বললেন ড. জাহেদ

মাহফুজকে উপদেষ্টা থেকে বাদ দেওয়া উচিত? যা বললেন ড. জাহেদ

৬ বছরের মধ্যেই চীনের হাতে হাজার পরমাণু বোমা! উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

৬ বছরের মধ্যেই চীনের হাতে হাজার পরমাণু বোমা! উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

বিগত সময়ে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে পুলিশ, এ জন্য আমরা লজ্জিত: আইজিপি

বিগত সময়ে দলীয় স্বার্থ উদ্ধারে বড় ধরনের অপরাধ করেছে পুলিশ, এ জন্য আমরা লজ্জিত: আইজিপি

ব্রাহ্মণপাড়ায় পাঁচ দিনেও খোঁজ মিলেনি নিখোঁজ সোহাগের

ব্রাহ্মণপাড়ায় পাঁচ দিনেও খোঁজ মিলেনি নিখোঁজ সোহাগের

কসবায় পাহাড় কাটার অপরাধে ২ জনের অর্থদণ্ড

কসবায় পাহাড় কাটার অপরাধে ২ জনের অর্থদণ্ড

নরসিংদীতে মাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে গ্রেপ্তার

নরসিংদীতে মাকে কুপিয়ে হত্যা, ছেলে গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামকে বিদায় করে টিকে রইল খুলনা

চট্টগ্রামকে বিদায় করে টিকে রইল খুলনা

পলাতক ১৯ বাংলাদেশি নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পলাতক ১৯ বাংলাদেশি নাবিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ফ্রিজে রাখা বাসি ভাতে উপকার দ্বিগুণ!

ফ্রিজে রাখা বাসি ভাতে উপকার দ্বিগুণ!

আ.লীগ দেশটাকে গোরস্থানে পরিণত করেছিল : জামায়াত আমির

আ.লীগ দেশটাকে গোরস্থানে পরিণত করেছিল : জামায়াত আমির

সেনবাগে মর্মান্তিক মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় ভাগ্নে নিহত : মামা আহত

সেনবাগে মর্মান্তিক মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় ভাগ্নে নিহত : মামা আহত