পশ্চিমাদের চাপ বাড়লেও ইরানের তেল রফতানিতে বাধা নেই
১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ এএম
ইসরাইলের উপর হামলা চালানোর পরেও এখনো পর্যন্ত পালটা হামলা থেকে রেহাই পেলেও আন্তর্জাতিক স্তরে আরও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ এড়াতে পারছে না ইরান। ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা বুধবার ইরানের উপর আরো নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে সে দেশের ড্রোন ও মিসাইল কোম্পানিগুলির কার্যকলাপ চাপের মুখে পড়বে। শিল্পোন্নত দেশগুলির গোষ্ঠী জি-সেভেনও ইরানের অস্ত্র সরবরাহকারীদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর প্রস্তাব বিবেচনা করছে।
ইরানের হামলার নিন্দা করে এবং ইসরাইলের নিরাপত্তার প্রতি সমর্থনের অঙ্গীকার জানিয়ে ইইউ নেতারা সব পক্ষের উদ্দেশ্যে উত্তেজনা কমানোর আহŸান জানিয়েছেন। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, ইরানের উপর বড় আকারে ইসরাইলের পালটা হামলা না চালানো জরুরি। উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলি ইরানের বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসরাইলের সংযমের আশা করছে। তবে বিশ্ববাজারে পেট্রোলিয়ামের মূল্য স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে আপাতত ইরানের তেল রপ্তানির পথে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে চাইছে না পশ্চিমা দেশগুলি। সেটা করলে চীনও রুষ্ট হতে পারে।
শুধু ইসরাইলের উপর হামলার কারণে নয়, চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে ইরান যেভাবে হামলাকারী দেশ হিসেবে রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করে চলেছে, ইইউ তার পথে বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। একাধিক কর্মসূচির মাধ্যমে সেই প্রবণতা মোকাবিলার চেষ্টা চলছে। এবার সেগুলির আওতা বাড়িয়ে মিসাইল সরবরাহ এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ‘প্রক্সি’ শক্তিগুলিকেও শাস্তিমূলক পদক্ষেপের আওতায় আনতে চাইছে ইইউ। তবে ইরানের শক্তিশালী রেভোলিউশনরি গার্ড কর্পস বাহিনীকে ইইউ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার উদ্যোগ আইনি জটিলতার কারণে এখনো সফল হচ্ছে না। কোনো ইইউ সদস্য রাষ্ট্র সেই বাহিনীর সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার প্রমাণ পেলে তবেই সেটা সম্ভব হবে বলে শীর্ষ কর্মকর্তারা মনে করছেন।
ইসরাইলের উপর পালটা হামলা না চালানোর চাপ থাকলেও সে দেশ কতকাল সংযম দেখিয়ে যাবে, সে বিষয়ে সংশয় দেখা যাচ্ছে। ইসরাইল ও মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী শনিবারের হামলার পর ইরানের উপর পালটা হামলার পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকার সেই পরিকল্পনা কার্যকর করে নি। ইসরাইলের কান সম্প্রচার কেন্দ্রের সূত্র অনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু পূর্ব পরিকল্পিত পাল্টা হামলার পরিকল্পনা বাতিল করেন। মার্কিন এবিসি নেটওয়ার্কের সূত্র অনুযায়ী গত সপ্তাহে কমপক্ষে দুই রাত্রে ইরানের উপর হামলার পরিকল্পনা ছিল। তবে নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত ইসরাইল একাই নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবে। তার মতে, আত্মরক্ষার জন্য যে কোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত তার দেশ।
এদিকে, বুধবার জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, ইরানি হামলার বিরুদ্ধে ইসরাইলের প্রতিশোধ পুরো অঞ্চলকে একটি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে টেনে নেয়ার সত্যিকারের ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে, সাফাদি বলেছিলেন যে, তার দেশ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার জন্য সুদূরপ্রসারী পরিণতি ঘটাতে পারে এমন একটি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে বড় শক্তিগুলোর কাছে লবিং করছে। ‘ঝুঁকিগুলি প্রচুর। এটি সমগ্র অঞ্চলকে যুদ্ধের দিকে টেনে আনতে পারে, যা এই অঞ্চলে আমাদের জন্য ধ্বংসাত্মক হবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বাকি বিশ্বের জন্য আমাদের খুব, খুব গুরুতর প্রভাব পড়বে,’ সাফাদি বলেন। ‘পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক। আঞ্চলিক বিস্ফোরণের সম্ভাবনা বাস্তব, এবং এটি বন্ধ করতে হবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আর কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি হবে না,’ তিনি যোগ করেছেন।
আমেরিকান বিমান প্রতিরক্ষা এবং যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সমর্থনের সাহায্যে দৃঢ় মার্কিন মিত্র জর্ডান, জেরুজালেমের দিকে দেশের উপর দিয়ে উড়ে আসা বেশিরভাগ ইরানি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ধ্বংস করে। ‘এখন উত্তেজনা না বাড়াতে ইসরাইলের উপর চাপ দেয়া উচিত,’ সাফাদি বলেন। তেহরান বলেছে যে তারা ১ এপ্রিল দামেস্কে তার দূতাবাসের প্রাঙ্গণে একটি সন্দেহভাজন ইসরাইলি বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবে আক্রমণ করেছে এবং ইসরাইল প্রতিক্রিয়া না জানালে আর এগোবে না। জর্ডানের প্রতিবেশী সিরিয়া এবং ইরাক - উভয় দেশেই ইরানী প্রক্সি বাহিনী কাজ করে। এছাড়াও ইসরাইল এবং ইসরাইল-অধিকৃত পশ্চিম তীরের সঙ্গে এর সীমানা রয়েছে। ‘আমরা আগুনের মাঝখানে আছি, তাই উভয় পক্ষকেই বুঝতে হবে যে আমাদের নিজেদের রক্ষা করার জন্য এবং এই বৃদ্ধি রোধ করার জন্য আমাদের যা করতে হবে তা আমরা করব,’ সাফাদি বলেছিলেন।
ইরানি ড্রোনগুলি যেগুলি ইরাকের দিক থেকে এসেছিল এবং দক্ষিণ জর্ডান এবং আকাবা শহরের উপর দিয়ে উড়েছিল যা ইসরাইলের ইলাত বন্দরের দিকে যাচ্ছিল তাও বাধা দেয়া হয়েছিল। সাফাদি বলেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা থেকে মনোযোগ সরাতে ইরানের সঙ্গে দ্ব›দ্বকে ব্যবহার করছেন। ইসরাইলি নেতাকে ‘ইরানের সাথে যুদ্ধে ওয়াশিংটন এবং প্রধান পশ্চিমা শক্তিগুলিকে টেনে নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত নয়,’ তিনি যোগ করেছেন। সূত্র : এপি, রয়টার্স।
বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
দুই শেয়ারবাজারেই বড় পতন
দিল্লির লকডাউন ঢাকায় দাফন হয়েছে : জাগপা
ইমাম প্রশিক্ষণে সউদী সরকারের সহায়তার আশ্বাস
চোর সন্দেহে কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা, নারী গ্রেফতার
পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি
কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডে পতিত ফ্যাসিস্টরা উৎসাহিত হচ্ছে : রিজভী
রাজনৈতিক দলগুলোকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বার্তা
বিআরটিসি বাসে পাইলটিং ভিত্তিতে ই-টিকেট সেবা কার্যক্রম শুরু
ডিএমপি কমিশনারের ভুয়া ভিডিও ছড়িয়ে বিভ্রান্তি
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সংকট উত্তরণের প্রচেষ্টা থাকলেও সাংবিধানিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে : সাইফুল হক
মতভিন্নতা সত্ত্বেও প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালো এবি পার্টি
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে দেশবাসী উজ্জীবিত : লেবার পার্টি
দেশকে দ্রুতবেগে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছি : ফরহাদ মজহার
দিল্লি-কাবুলের ষড়যন্ত্রেই বেড়েছে সন্ত্রাসী হামলা: শেহবাজ শরীফ
জীবন্ত ফার্ন গাছে বিরল খনিজের সন্ধান
চীনের গুপ্তচর হিসেবে অভিযুক্ত লিন্ডা সানের বিচার শুরু
তীব্র পানি সংটে ইরানের নাগরিক জীবন ঝুঁকিতে
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে চীনকে পাশে পেল ভেনেজুয়েলা
মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের ৩১৪ কোটি টাকা আত্মসাতে ৫ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা
গণতন্ত্র ফেরাতে নির্বাচনই একমাত্র বিকল্প : মির্জা ফখরুল