হিজবুল্লাহর ফাঁদে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর
১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৩ এএম
গাজায় একই পরিবারের ৮ জন নিহত
ইসলামি প্রতিরোধ গোষ্ঠী লেবাননের হিজবুল্লাহর আকস্মিক হামলায় ২০ জনেরও বেশি ইসরাইলি সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে গোষ্ঠীটি। সংঘর্ষের তোপে সেনাদের লাশগুলোও উদ্ধার করতে পারেনি ইসরাইলি বাহিনী। দক্ষিণ লেবাননে ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম আল-মায়াদিনের বরাতে ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম প্যালেস্টাইন ক্রোনিক্যাল এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত সিরিজ রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৪৫ মিনিটে প্রথম আক্রমণটি হয়। তখন আল-মানারা বসতিতে ইসরাইলি বাহিনীর অবস্থানে সিরিজ রকেট হামলা চালায় প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এ ঘটনাটি ইসরাইলি বাহিনীর ওপর একটি সম্মিলিত ও অক্লান্ত হামলাকেই চিহ্নিত করছে।
এরপর দিবাগত রাত ৩টা ১৫ মিনিটে ইসরাইল বাহিনীর ওপর দ্বিতীয় আক্রমণটি করে হিজবুল্লাহ। এসময় রামিয়ার কাছে ইসরাইলি সেনাদের অবস্থানে নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে গোষ্ঠীটি। এতে ইসরাইলি বাহিনীর বেশ কয়েকজন সেনা হতাহত হয়। একই স্থানে পরবর্তী হামলায় ইসরাইলের একটি অস্ত্রবাহী গাড়ি লক্ষ্যবস্তু করে নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হিজবুল্লাহ। ক্ষেপণাস্ত্রটি লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি আঘাত হানলে গাড়িতে থাকা ক্রু-সদস্যরা হতাহত হন।
দিবাগত রাত ৩টা ১৫ মিনিটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি তাল শার এলাকায় ইসরাইলি অবস্থানে গুলিবর্ষণ করে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা। এতে ইসরাইলি সেনারা অনেকটা দিশেহারা হয়ে যায়। এর ঠিক আধাঘণ্টা পর, দিবাগত রাত ৩টা ৪৫ মিনিটে রামিয়া শহরের তাল আল-মান্দাওয়ারে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়ায় তারা। এসময় একটি বিস্ফোরণ ডিভাইস ব্যবহার করে ইসরাইলি সেনাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে হিজবুল্লাহ। হামলায় ইসরাইলি বাহিনীর আরও সদস্য হতাহত হন।
একইভাবে ভোররাত ৪টা ৪৫ মিনিটে রামিয়া শহরে ইসরাইলি বাহিনীর আরেকটি অনুপ্রবেশ প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয় হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটি আবারও বিস্ফোরক নিক্ষেপ করে। এতে আরও কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণ আরও বিস্তৃত করে হিজবুল্লাহ। সকাল সাড়ে ৫টায় অধিকৃত লেবাননের শেবা ফার্মেরজেবডাইন ব্যারাকে অবস্থানরত ইসরাইলি সেনাদের ওপর রকেট হামলা চালায় প্রতিরোধ যোদ্ধারা। এ হামলা মাত্র মাত্র ১৫ মিনিট অব্যাহত ছিল। হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরাইলি জারিত ব্যারাকে সরাসরি রকেট হামলা করে। এসময় শক্তিশালী বুরকান রকেটও ব্যবহার করে তারা।
সকাল ৬টার দিকে সশস্ত্র এই গোষ্ঠীটি অন্যান্য ইসরাইলি অবস্থানকে লক্ষ্যবস্তু করে। খিলট ওয়ার্ডে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর একটি সমাবেশ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় তারা। একই সময়ে, শোমেরা বসতিতে ইসরাইলি সেনাদের ওপর আরেকটি রকেট হামলা চালানো হয়। ওই হামলা আরও কিছু ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
সকালজুড়ে হিজবুল্লাহ বিরামহীনভাবে একের পর এক হামলা চালাতে থাকে। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে আবারও হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। এসময় মারুন আল-রাস শহরে অবস্থানরত ইসরাইলি বাহিনী কামান দিয়ে গোলাবর্ষণ করে।
লেবাননে ইসরাইলি হামলার প্রেক্ষাপটে ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা এই সামরিক অভিযানগুলো পরিচালনা করেছে। ইসরাইলি হামলায় দেশটির বেসামরিকরা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে।
লেবাননে হিজবুল্লাহর অবস্থানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার পাশাপাশি ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং সেইসঙ্গে পূর্ব ও বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতেও হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলের এই হামলা দেশটিকে একটি মানবিক সংকটের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এই হামলায় ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি লেবানিজ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো হাজার হাজার মানুষ।
এদিকে উত্তর গাজার সামরিক অবরোধ নবম দিন পার করেছে। সেই সাথে ভ‚মি আক্রমণ এবং ড্রোন হামলায় খাদ্য ও পানির সরবরাহ কমে যাওয়ায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আটকে পড়ে। ইসরাইলি বাহিনীর হাতে সেখানে অন্তত ৩০০ জন নিহত হয়েছে।
গাজায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৪২ হাজার ২২৭ জন নিহত এবং ৯৮ হাজার ৪৬৪ জন আহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি লোককে বন্দি করা হয়।
গাজায় একই পরিবারের ৮ জন নিহত : গাজা উপত্যকায় মধ্যাঞ্চলে ইসরাইলি হামলায় একই পরিবারের ৮ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই অব্যাহত থাকার মধ্যে এই অঞ্চলটির উত্তরাঞ্চল থেকে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনিকে সরে যেতে চাপ দিচ্ছে। নিকটবর্তী দেইর আল-বালাহ›র আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল জানিয়েছে, শনিবার রাতে গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে হামলা চালায় ইসরাইল। এতে বাবা-মা ও তাদের ছয় সন্তান নিহত হয়। নিহতদের সকলের বয়স ৮ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে। এতে আরো সাতজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তারা। আহতদের মধ্যে দুই নারী ও এক শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। সূত্র : আল-জাজিরা।
বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি আর হাসিনার ভরসা ভারতে -দুলু
বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন
২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের
ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা
চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে
ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী
আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত
মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক
ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন
কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু
আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ
ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী
সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু
যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের
পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন
শীতের দিনে ঝিরঝিরে বৃষ্টি স্থবির খুলনা শহুরে জীবন