২১ আগস্ট আর ১/১১ একই সূত্রে গাঁথা: রিজভী
২১ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৪০ পিএম | আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৩ এএম
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের নৃশংস ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়িয়ে আওয়ামী সরকার ক্রমাগত মিথ্যাচার-অপপ্রচার চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই দেশে-বিদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে একটা ভয়ংকর মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ২১ আগস্টের নৃশংস মর্মান্তিক ঘটনা ঘটিয়ে তারেক রহমানকে জড়িয়ে অপপ্রচারের হাইপার-প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছে আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী সরকার। তাকে এই বর্বরোচিত ঘটনায় জড়িয়ে সাজা প্রদানের ঘটনা এক চরম চক্রান্তমূলক অবিচার ও ন্যাক্কারজনক প্রহসনগুলোর অন্যতম বলে মনে করে দেশবাসী। তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার এক গভীর ষড়যন্ত্রের হাস্যকর প্রচেষ্টা। সোমবার (২১ আগস্ট) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা প্রতিহিংসা এবং জিঘাংসার পথরেখা ধরে এগুচ্ছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে। ২১ আগস্টের নৃশংস ঘটনাটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। ‘একুশে আগস্ট’ আর ‘ওয়ান ইলেভেন’ একই সূত্রে গাঁথা।
ওই ঘটনার বিষয়ে তারেক রহমানের বরাতে রিজভী বলেন, ২১ আগস্ট সম্পর্কে আলোচনা উঠলেই 'জজ মিয়া' নামে এক ব্যক্তির গ্রেফতার প্রসঙ্গটি সামনে এনে পুরো বিষয়টিকে সম্পূর্ণ ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্ট চালানো হয়। অথচ, সকল তদন্তেই ২১ আগষ্টের মুখ্য চরিত্র গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার মুফতি হান্নান। বিএনপি সরকারের আমলেই ২০০৫ সালের পহেলা অক্টোবর মুফতি হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ২০০৫ সালের ৯ জুন গ্রেফতার হয় জজ মিয়া নামে একব্যক্তি। গ্রেফতার হওয়ার সপ্তাহ দুয়েক পর ২৫ জুন 'জজ মিয়া' ২১ আগস্ট মামলায় নিজেকে জড়িয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। 'জজ মিয়া'র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে 'মুফতি হান্নানের নাম ছিল না। আপনাদের অনেকেরই হয়তো মনে আছে, চাঞ্চল্যকর মামলাগুলো তদারকি করার জন্য বিএনপি সরকারের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি 'জাতীয় মনিটরিং সেল' করা হয়েছিল। জজ মিয়া'র জবানবন্দির আলোকে মামলা এগিয়ে নেয়ার জন্য তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা দু'দফায় জাতীয় মনিটরিং সেলের কাছে নির্দেশনা চেয়েছিলো। কিন্তু ২১ আগস্ট মামলার তদন্ত চলাকালে তৎকালীন বিএনপি সরকার শুধু 'জজ মিয়া'র জবানবন্দির উপর তদন্ত সীমাবদ্ধ রাখেনি। বরং জাতীয় মনিটরিং সেলের পক্ষ থেকে আরো গভীরভাবে তদন্ত এগিয়ে নেয়ার জন্য পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়। এরই জের ধরে 'জজ মিয়া' গ্রেফতারের পর তিন মাসের মাথায় মুফতি হান্নানের গ্রেফতারে প্রমাণিত হয়, বিএনপি সরকারের তদন্ত সঠিকভাবেই এগুচ্ছিলো। 'জজ মিয়া'কে ব্যবহার করে ২১ আগস্ট মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাইলে বিএনপি সরকারের সময় মুফতি হান্নানকে গ্রেফতারের প্রয়োজন ছিল না। 'জজ মিয়া'কে ব্যবহার করে মামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাইলে বিএনপি সরকারের আমলেই পুলিশ 'জজ মিয়া'কে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দিতে পারতো।
তিনি বলেন, ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলা মামলাটিকে জাতীয় স্বার্থেই বিএনপি সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিল। তদন্ত পুরোপুরি শেষ না হওয়ায় তাড়াহুড়ো করে বিএনপি সরকারের আমলে ২১ আগস্ট হামলা মামলার কোনো চার্জশীট দাখিল করা হয়নি। যেখানে 'জজ মিয়া'কে অভিযুক্ত করে কোনো চার্জশিটই দাখিল করা হয়নি, যেখানে মামলার ১ নম্বর অভিযুক্ত মুফতি হান্নানকে বিএনপি সরকার-ই গ্রেফতার করেছে। সেখানে 'জজ মিয়া'কে ইস্যু বানিয়ে ২১ আগস্ট মামলার তদন্ত সম্পর্কে বিএনপির বিরুদ্ধে জনগণকে বিভ্রান্ত করার পেছনে আওয়ামী লীগের অবশ্যই ভিন্ন কারণ রয়েছে। সুতরাং, ২১ আগস্টের ভয়ঙ্কর হামলার নেপথ্য কারণ বের করতে হলে 'জজ মিয়া' থেকে বেরিয়ে এসে আরো অনেক প্রশ্নের জবাব খুঁজে পেতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশ রাজধানীর 'মুক্তাঙ্গনে' হওয়ার কথা ছিল। সমাবেশের জন্য ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ লিখিতভাবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন থেকে 'মুক্তাঙ্গন' বরাদ্দ নেয়। 'মুক্তাঙ্গন' বরাদ্দ পাওয়ার পর তৎকালীন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিলন ২০০৪ সালের ১৭ আগস্ট লিখিতভাবে ঢাকা মহানগর পুলিশকে জানায়। ঢাকা মহানগর পুলিশ যথারীতি আওয়ামী লীগকে ১৯ আগস্ট লিখিতভাবে 'মুক্তাঙ্গনে' সমাবেশের সম্মতিপত্র দিয়ে দেয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রায় সকল জাতীয় পত্রিকায় 'আজ মুক্তাঙ্গনে আওয়ামী লীগের সমাবেশ' শিরোনামে সংবাদও প্রকাশিত হয়। ২১ আগস্ট নির্ধারিত সমাবেশের দিন বেলা ১২ টার মধ্যেই পুলিশ প্রশাসন 'মুক্তাঙ্গন' ও এর আশেপাশের এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা 'মুক্তাঙ্গনে' দায়িত্ব পালনের জন্য আসার সময় নিয়মানুযায়ী মতিঝিল থানায় জিডি করে। তবে পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা 'মুক্তাঙ্গনে'র আসার কিছু সময় পর জানতে পারেন সমাবেশের স্থান কাউকে না জানিয়েই হঠাৎ করেই 'মুক্তাঙ্গন' থেকে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে স্থানান্তর করা হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী থানায় ফিরে গিয়ে ভেন্যু স্থানান্তরের বিষয়ে বেলা দেড়টার দিকে মতিঝিল থানায় জিডি করে। প্রশ্ন হলো, যেই সমাবেশের প্রধান অতিথি সেই সময়কার বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা, সেই সমাবেশের 'ভেন্যু' কার সিদ্ধান্তে পরিবর্তন করা হয়েছে ? কে পরিবর্তন করেছে? তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেয়া হয়, ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে হামলার আশংকায় 'মুক্তাঙ্গনে'র পরিবর্তে সমাবেশের স্থান তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তন করে 'বঙ্গবন্ধু এভিন্যু' এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। তাহলে সেই 'ভেন্যু' পরিবর্তনের তথ্য কি আইন শৃংখলা বাহিনীকে জানানো হয়েছিল? তিনি বলেন, ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে হামলার ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অবশ্যই অত্যন্ত ভয়ঙ্কর এবং নৃশংস ঘটনা। এমন একটি ভয়ঙ্কর হামলার ঘটনা সাধারণত 'পূর্ব পরিকল্পনা ও নিখুঁত নিশানা নির্ধারণ' ছাড়া হতে পারেনা। সেক্ষেত্রে সমাবেশে গ্রেনেড হামলাকারীদের অবশ্যই 'ভেন্যু' সম্পর্কে আগেভাগেই স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট ধারণা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। পুলিশ এবং হামলাকারিদের জবানবন্দির বরাতে পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, 'আবু জান্দাল এবং কাজল' সমাবেশে প্রথম গ্রেনেড ছুড়ে মারে। আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলাকারীদের কয়েকজনের জবানবন্দির আলোকে 'যারা যেভাবে পরিকল্পনা ও হামলা করেছিল' শিরোনামে ২০১৮ সালের ২১ আগস্ট দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রিপোর্টে বলা হয়, 'হামলার আগের দিন ২০ আগস্ট কাজল ও আবু জান্দাল 'বঙ্গবন্ধু এভিন্যু'তে গিয়ে এলাকা পর্যবেক্ষণ (রেকি) করে আসেন'। রহস্যটি এখানেই। হামলাকারী জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা সমাবেশেস্থল 'মুক্তাঙ্গনে'র পরিবর্তে কেন 'বঙ্গবন্ধু এভিন্যু' পর্যবেক্ষণ করলো? ২১ আগস্ট দুপুরে হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের সমাবেশের ভেন্যু 'মুক্তাঙ্গন' থেকে পরিবর্তন করে 'বঙ্গবন্ধু এভিন্যু'তে নেয়া হলো? তাহলে হামলাকারীরা আগেই কিভাবে জানলো, 'মুক্তাঙ্গনে' নয় 'বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’তে সমাবেশ হবে? হামলাকারীদেরকে ভেন্যু পরিবর্তনের তথ্য আগেই কে জানিয়ে দিয়েছে?
দলের শীর্ষ নেতার বরাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ‘স্মৃতির পাতা থেকে জানা-অজানা দুই একটি কথা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল জাতীয় প্রেসক্লাবে। ২০২১ সালের ২০ আগস্ট অনুষ্ঠিত সভায় সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলার ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে। সভায় সাঈদ খোকন অন রেকর্ড বলেছে, '২০০৪ সালে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে হামলার কথা তারা দুই দিন আগেই জানতে পেরেছিলেন'। জানার সঙ্গে সঙ্গেই পিতা মোহাম্মদ হানিফের নির্দেশে সাঈদ খোকন নিজে সুধাসদনে গিয়ে শেখ হাসিনাকে দুই দিন আগেই হামলার আশংকার তথ্যটি পৌঁছে দিয়েছেন'। প্রশ্ন হলো- মরহুম মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলার কথা জানতে পেরেছিলেন সেটি কোন ভেন্যুতে? 'মুক্তাঙ্গন' নাকি 'বঙ্গবন্ধু এভিন্যু? শেখ হাসিনাকে তার সমাবেশে হামলার আশংকার কথা দুই দিন আগে জানানোর পর শেখ হাসিনা কি পদক্ষেপ নিয়েছিলো? এমন ভয়ঙ্কর তথ্য জানার পর শেখ হাসিনা তথ্যটি কি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছিল? শেখ হাসিনা, মরহুম মেয়র মোহাম্মদ হানিফ কিংবা সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন কিংবা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কেউ কি আওয়ামী লীগের সমাবেশে হামলার আশংকার তথ্যটি জানিয়ে থানায় জিডি করেছিলেন? এমন একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সম্পর্কে সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন? ২১ আগস্টের ঘটনার নেপথ্য কারণ জানতে হলে এইসব প্রশ্নের জবাব জানা প্রয়োজন। হীন দলীয় স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থ বড় করে না দেখলে কখনোই এ সব প্রশ্নের জবাব মিলবেনা।
তিনি বলেন, সরকার সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার পর একযুগ পেরিয়ে গেলেও বর্তমান মাফিয়া সরকার একটি তদন্ত প্রতিবেদনও এখন পর্যন্ত আদালতে দাখিল করতে সক্ষম হয়নি। আট বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ফান্ড ডাকাতি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি কিংবা করেনি। অথচ, ২১ আগস্টের মতো ভয়াবহ হামলা মামলার প্রধান আসামি মুফতি হান্নানকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে মাত্র বছর দু'য়েকের মধ্যেই তৎকালীন বিএনপি সরকার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিলো। মেয়াদ শেষে বিএনপি সরকারের পদত্যাগের পর ষড়যন্ত্রের পথ ধরে ক্ষমতা দখল করে কথিত ওয়ান ইলেভেন সরকার। বিএনপি সরকার 'জজ মিয়া'র জবানবন্দী আমলে না নিয়ে ২১ আগস্ট হামলা মামলার সঠিক তদন্ত অব্যাহত রেখেছিলো। একইভাবে বিএনপি পরবর্তী সরকারও 'জজ মিয়া'র জবানবন্দী আমলে নেয়নি। সুতরাং, 'জজ মিয়া'কে বাদ দিয়ে মুফতি হান্নানকে এক নম্বর আসামি করে ২০০৮ সালের ৯ জুন আদালতে ২১ আগস্ট হামলা মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়। এতে মোট ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। ওই চার্জশিটের উপর ভিত্তি করে ২১ আগস্ট হামলা মামলার বিচার কার্যক্রমও শুরু হয়। বিচার শুরুর পর কমপক্ষে ৬১ জনের সাক্ষ্যও গ্রহণ করা হয়। এ পর্যায়ে কথিত ওয়ান ইলেভেন সরকারের বিদায়ের পর ২০০৯ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা মাঝপথেই আদালতে ২১ আগস্ট হামলা মামলার চলমান বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ২১ আগস্ট হামলা মামলার অভিযোগপত্র নিজেদের ইচ্ছেমতো বানাতে কিশোরগঞ্জের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাহহার আকন্দকে পুলিশে ফিরিয়ে এনে তাকে ২১ আগস্ট মামলার অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। চাকরি থেকে অবসরে গিয়ে আব্দুল কাহহার আকন্দ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় হয়েছিল। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নও চেয়েছিলো। আওয়ামী লীগ তাকে 'এমপি' না বানালেও ক্ষমতায় এসে পুলিশের 'এসপি' বানায়। 'এসপি' পদ পেয়ে আব্দুল কাহহার আকন্দ '২১ আগস্ট মামলা'কে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। ২০১১ সালের ৩ জুলাই আদালতে পুনরায় ২১ আগস্ট মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে। সেখানে ২২ জনের পরিবর্তে এসপি আকন্দ চার্জশিটে ৫২ জনের নামে অভিযোগ আনে। ৫২ জনের নামের তালিকায় এসপি আকন্দ ২০১১ সালে তারেক রহমানের নামও জড়িয়ে দেয়। বিএনপি পরবর্তী ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময়ে প্রথমবারের মতো দায়ের করা ২১ আগস্ট হামলা মামলার চার্জশীটে তার নাম জড়ানো হয়নি। এমনকি মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ৬১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল। এই ৬১ জনের মধ্যেও কেউ তারেক রহমানের নাম উল্লেখ করেনি। ২১ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে তারেক রহমানকে জড়িয়ে কেউ কোনো অভিযোগ তুলেনি। অথচ, অধিকতর তদন্তের নামে এসপি আকন্দ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নাম জড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি শেষ পর্যন্ত এসপি আকন্দের সাজানো কল্প-গল্প অনুসারে বিচারের নামে প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। ২১ আগস্ট হামলা মামলায় কোনভাবেই তাকে জড়ানোর কোনো তথ্য প্রমাণ না পেয়ে শুধুমাত্র এই মামলায়ই এসপি আকন্দ মুফতি হান্নানকে ৪১০ দিন রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডের নামে আকন্দের নির্যাতন সেল থেকে মুক্ত হয়ে ২০১১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আদালতকে মুফতি হান্নান লিখিতভাবে জানায়, নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে তার কাছে ২১ আগস্ট মামলায় তার মুখ থেকে তারেক রহমানের নাম আদায় করা হয়েছে। শুধুমাত্র ২১ আগস্ট মামলায় নামটি যেকোনোভাবে জড়ানোর জন্যই 'এমপি না বানিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা তার বিশ্বস্ত কর্মী আব্দুল কাহহার আকন্দকে এসপি' বানিয়েছে। অপ্রিয় বাস্তবতা হচ্ছে, একমাত্র মুফতি হান্নানের মুখ থেকে জোর করে তারেক রহমানের নাম বের করে ২১ আগস্ট মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে। এটি অবশ্যই তদন্তের নামে অনাচার ও একটি পরিকল্পিত ফরমায়েশী সাজা দেয়ার চক্রান্ত। রুহুল কবির রিজভী বলেন, যার মুখ থেকে আমার নাম বের করে ২১ আগস্ট মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে, সেই মুফতি হান্নানকে অবশ্যই আদালতের কাঠগড়ায় আইনজীবী 'ক্রস এক্সামিন' করার সুযোগ পাবে, এটিই আইনের নিয়ম। ২১ আগস্ট মামলায় তারেক রহমানের আইনজীবীকে আদালতের কাঠগড়ায় 'মুফতি হান্নান'কে 'ক্রস এক্সামিন' করার সুযোগ না দিয়ে কি কারণে অন্য একটি মামলায় মুফতি হান্নানকে তড়িঘড়ি করে ফাঁসি দেয়া হলো?
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বার্মিংহামের সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারে কাতারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মহিন উদ্দিন
উন্নয়নের প্রতিটি ধাপে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিতই সরকারের লক্ষ্য : রিজওয়ানা হাসান
খুঁটির জোর কোথায়? আওয়ামী ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজ করে বিল নেয়ার অভিযোগ!
দুমকী উপজেলা জমিয়তে হিজবুল্লাহ সভাপতির ইন্তেকাল
সাদপন্থীদের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের দাবিতে শেরপুরে বিক্ষোভ
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে চা শ্রমিক গোপাল হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন
ছাগলনাইয়ায় ফসলি জমির মাটি কাটায় দুইটি এক্সেভেটর জব্দ
আব্দুল্লাহ শফিকের অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড
সৈয়দপুরে সাদপন্থি তাবলীগ জামায়াতের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ
স্বেচ্ছাসেবক লীগনেতা ফুয়াদ হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী জেসমিন আক্তার কারাগারে
বাংলাদেশে আইওটি ইকোসিস্টেম উন্মোচন করেছে ওয়ানপ্লাস
শীতার্তদের মাঝে উষ্ণতা ছড়ালো ইবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
সড়কে ছয় লেনের কাজ এগিয়ে চলছে গাড়ি চলবে ১০০ কি.মি গতিতে
আটঘরিয়ায় ঘন কুয়াশায় বিনা চাষে রসুনের জমি পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত কৃষক
সীমান্তে বিজিবির গুলি ১৬ বস্তা ভারতীয় ফেনসিডিল ফেলে পালালো চোরাকারবারীরা
সখিপুরে পৃথক পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু
রামগড়ে ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ৪ লক্ষ টাকা জরিমানা
আমতলীর ইউএনও’র বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন
নবীনগর ও কসবায় বিভিন্ন রকমের মাদকসহ তিন যুবক গ্রেপ্তার