বিচারকের লিখে দেয়া বক্তব্যে স্বাক্ষী দিচ্ছে পুলিশ: রিজভী
০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৩৫ পিএম | আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩০ পিএম
বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকের লিখে দেয়া মুখস্থ বক্তব্যে স্বাক্ষী দিচ্ছে পুলিশ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল রিজভী। তিনি বলেন, পুলিশ আমাদের আটক করছে, ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের একটা আশা উচ্চ আদালতে বিচার পাবো। কিন্তু সেই আশাও শেষ। উচ্চ আদালতে যাওয়া মানে আরো বিপদাপূর্ণ হওয়া। আমাদের প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক একটি সুনামধন্য মিডিয়ায় একটি প্রতিবেদন করেছে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে নীরবে গণতন্ত্রের পতন। যে প্রতিবেদনে বলেছে বিএনপি'র ২৫ লাখ নেতাকর্মী প্রতিদিন আদালতে যাওয়া আসা করছে।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৬তম কারামুক্তি দিবস উত্তরাঞ্চল ছাত্রফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, আমরা নিজের চোখেই দেখছি যখন আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী আনা হচ্ছে অধিকাংশই পুলিশ। সেই পুলিশের ৪/৫ কর্মকর্তা আগে জজ সাহেবের রুমে ঢুকে অনেকক্ষণ ধরে আলোচনা করে। আর যে সমস্ত পুলিশ আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয় তারা মোবাইলে পড়ছেন এবং জজ সাহেবের সামনে সাক্ষী দিচ্ছেন। অর্থাৎ ওই পুলিশরা সাক্ষী দিচ্ছে তাকে যেভাবে লিখে দেওয়া হয়েছে, সেই ভাবেই বিচারকের সামনে বলছে। আর পুলিশ অফিসাররা বিচারককে বলে আসছে বিচার কি হবে। এটা আমাদেরকে কেউ বলেছে এমন নয়, আমাদের চোখের সামনে এসব ঘটনা ঘটছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করে আরও বলেন, বিভিন্ন কলেজের প্রভাষকরা যারা পাঁতানো নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হতে না চায় তাদেরকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শেখ হাসিনার পাতানো নির্বাচনে অনেকেই থাকতে চান না। তাদেরকে প্রিজাইডিং অফিসার বানানোর জন্য গোয়েন্দা পুলিশদেরকে কাজে লাগানো হচ্ছে। অনেকেই অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করেছেন কালো টাকা উপার্জন করেছেন তারা হয়তো এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহায়তা করবেন। কিন্তু আমি বলে যাচ্ছি যারা এই সরকারের পাতানো নির্বাচন খেলায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন তারা কিন্তু কালো তালিকাভুক্ত হতে থাকবেন জনগণের কাছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন, প্রিজাইডিং অফিসারসহ যারা এই সরকারের পাতানো নির্বাচনে নিজেকে নিয়োজিত করবে তারা জনগণের কাছে সন্ত্রাসী অপরাধী হিসেবে কালো তালিকায় থাকবে। এটা যেন তারা স্মরণ রাখে।
তারেক রহমানকে সরকারের টার্গেট করার কারণ উল্লেখ করে দলটির এই নেতা বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন সেদিন টার্গেট হয়েছিল? কেন তিনি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন? শুধু গ্রেফতার হয়ে বন্দি নয় তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে এ পর্যন্ত অনেক জাতীয় নেতা কারারুদ্ধ হয়েছিল। মহাত্মা গান্ধী বলেন মাওলানা ভাসানী বলেন। কিন্তু কারাগারে বন্দী হওয়ার পরে কেউ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এই দৃষ্টান্ত খুবই কম। তারেক রহমান নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তাহলে তারেক রহমান কারো লক্ষ্যবস্তু। কার লক্ষ্যবস্তু? শুধু দেশীয় নয় আন্তর্জাতিক ও দেশীয় অপশক্তির লক্ষ্যবস্তু ছিল তারেক রহমান।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে সেদিন ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা এখনো শেষ হয়নি। সে সময় তারেক রহমানকে শারীরিকভাবে ক্ষতি করতে চেয়েছিল যাতে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদীর যে শক্তি এই শক্তির প্রতিনিধি না থাকে। এরকম একটা রাষ্ট্র তৈরি করার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৭ সাল থেকে চক্রান্ত করে আসছে শেখ হাসিনা। সুতরাং একটি ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আছি।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার আতঙ্ক কিসে জানেন? পুলিশের বন্দুকের গুলি যখন ফুটে তারপরও বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীর মুখ থেকে স্লোগান হচ্ছে এটা কেন? ৫০ লাখ মামলা, হামলা তারপরও বিএনপির নেতাকর্মীদের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে শেখ হাসিনা তুই কবে যাবি। আর এই কারণেই শেখ হাসিনা ভয় পাচ্ছে। এবং নতুন নতুন চাল চালছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এখনও খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বেঁচে আছেন। কিভাবে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করা যায়, সকল চেষ্টাই শেখ হাসিনা করে যাচ্ছে। কারণ শেখ হাসিনা দিয়ে বিদেশিদের যে স্বার্থ নিতে পারবে কিন্তু খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দিয়ে তো এমন স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, আমি কখনো দেখিনি, বিচারপতিরা এতো আগ্রহ নিয়ে বিচার কাজ করছে, যাতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাঁজা অতি দ্রুত সম্পূর্ণ করা যায়। আমাদের এমন কোর্টে প্রতিনিয়ত যেতে হচ্ছে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে অঙ্গীকার করবো, যে আমাদের বিজয় না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে যাবো না।
বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন,ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি প্রকাশ, বাংলাদেশের প্রথম প্রতিপক্ষ ভারত
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
আগামী নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরু
রিহ্যাব মেলায় গতকাল আশিয়ান সিটি’র ১৩ নং স্টলে ছিল ক্রেতাদের ভীড়।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
‘বিক্ষোভ আর কালো পতাকায়’ রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বরণ!
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ২৬ নারী-পুরুষ ও শিশু
লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফরহাদ হোসেন ইমন গ্রেফতার
আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরও এক মাস বাড়ল
দূর্নীতিগ্রস্ত লুটেরা মাফিয়াদল যাতে বাংলাদেশে আর ফেরত না আসতে পারে: মেজর হাফিজ
শতভাগ দলীয়করণে ক্রীড়াঙ্গন আজ তলানিতে : আমিনুল হক
দৌলতদিয়ায় বড়দের আদলে ছোটদের জমজমাট নির্বাচন
বাজারে সিন্ডিকেট এখনও সক্রিয় রয়েছে: নূর
খতমে নবুওয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল্লামা সাজিদুর, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ
প্রকৃত তথ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সংবাদ করুন: প্রেস সচিব
কুষ্টিয়ায় ভেড়ামারায় দুই প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা ও কারাদন্ড
‘চাঁদাবাজ দখলবাজরা জুলাই অভ্যূত্থানের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করছে’
মানিকগঞ্জে আগামীকাল তিনদিন ব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ
আটঘরিয়ায় দলীয় পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ
প্রত্যেক ধর্মের শান্তির বাণী নিজের মধ্যে স্থাপন করতে হবে: ড. ইউনূস