খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা প্রধানমন্ত্রী-আইনমন্ত্রীর হিংস্র বৃত্তে আটক : রিজভী
০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:১৯ পিএম | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:১৯ পিএম
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসাসহ সবকিছু প্রধানমন্ত্রী আর আইনমন্ত্রীর তামাশার হিং¯্র বৃত্তে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন সোমবার দেশনেত্রীর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কিন্তু তার ৩-৪ দিন আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী ভয়েস অব আমেরিকায় দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন যে, বেগম জিয়াকে বিদেশে যেতে হলে প্রথমে জেলে গিয়ে আদালতে আবেদন করতে হবে। রোববার দেশনেত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে না দেয়ার যে সিদ্ধান্ত আইনমন্ত্রী দিয়েছেন সেটি আসলে প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্রে দেয়া বক্তব্যেরই বাস্তবায়ন।
রোববার (০১ অক্টোবর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনে আইনমন্ত্রী যে শেখ হাসিনার বিশ^স্ত দোসর হবেন এটাই তো স্বাভাবিক। কারণ দেশে এখন চলছে জয়বাংলার আইন। এই আইনে সুশাসন ও ন্যায়বিচার কঙ্কালে পরিণত হয়েছে। অপপ্রচার, অসত্য ও বানোয়াট কাহিনী কুৎসিত প্রচারণা চালানোর পরেও দেশনেত্রীর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে তাঁর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মর্যাদায় চিড় ধরাতে না পেরে শেখ হাসিনা আক্রোশের নানামুখী প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন। আর এজন্য তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটকিয়ে রেখেছেন এবং এখন তাঁর উন্নত চিকিৎসায় বাধা দিয়ে দুনিয়া থেকে সরানোর নীলনকশা বাস্তবায়ন করছেন। বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে আইন মন্ত্রণালয়ের নেতিবাচক সিদ্ধান্ত মানবতা বিরোধী, বর্বর ইচ্ছা পূরণ ও অবিচারের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। এই সিদ্ধান্ত, ক্ষমতা জোর করে আঁকড়ে রাখতে শেখ হাসিনা পথের কাঁটা সরানোর দিগন্তবিৃস্তৃত লালসা পূরণের নিষ্ঠুর প্রজেক্ট। এটি পূর্বপরিকল্পিত এবং একটি গভীর মাষ্টারপ্ল্যানেরই অংশ।
তিনি বলেন, এই অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধান শক্তি জনগণ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রীতি সমাধিস্থ করে কর্তৃত্ববাদের নতুন আদর্শ, নতুন ভাবধারা ও নতুন নতুন রচিত নীতির মাধ্যমে দেশবাসীকে নির্বাক করে বন্দী করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে জনগণ পথে পথে অবরোধ করবে। পচা, গলিত একদলীয় নব্য বাকশালের হিং¯্র দুঃশাসনকে প্রবল গতিতে প্রতিরোধ করবে জনগণ।
রিজভী বলেন, নাৎসী জার্মানির ‘সিক্রেট স্টেট পুলিশ’ যার সংক্ষিপ্ত নাম ‘গেষ্টাপো’র ন্যায় বাংলাদেশে আওয়ামী ‘গেষ্টাপো’ হিসেবে পরিচিত আদালত, পুলিশ ও প্রশাসন দিয়ে জনগণের সামনে মৃত্যুর খাঁড়া ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। গেষ্টাপো’রা বেঞ্জামিন ইনজেকশন দিয়ে তাদের প্রতিপক্ষ বন্দীদের হত্যা করতো। বাংলাদেশেও এখন তা চলছে। দেশনেত্রীকেও গ্রেফতার করার পরে বিভিন্ন কায়দায় বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে বলে জনগণ বিশ^াস করে। চারিদিকে পৈশাচিক প্রবৃত্তির যে ছবি দৃশ্যমান হচ্ছে সেটি বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলতে জনগণ আজ অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত আক্রোশে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বন্দী এবং উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। প্রধানমন্ত্রী তালুতন্ত্র তৈরী করেছেন, রাষ্ট্রশক্তিকে হাতের তালুর মধ্যে নিয়ে বিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধ্বংস করার ধারাবাহিকতার প্রথম ও প্রধান টার্গেট করা হয়েছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। কারণ বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ জিয়া, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারকারী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানসহ জিয়া পরিবারের প্রতি জাতক্রোধ শেখ হাসিনার। এই কারণেই দেশনেত্রীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতেই চলছে বহুমাত্রিক নিষ্ঠুর আয়োজন। আইন মন্ত্রণালয়ের এই বেআইনী সিদ্ধান্ত দেশনেত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে বাধা দেয়ারই অংশ। আইন মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছি। জনগণ এই সিদ্ধান্ত ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে।
মার্কিন ভিসা নীতি শেখ হাসিনাকে টেনশনে ফেলেছে মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বিঘেœ দুঃশাসন চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভিসা নীতি ঘোষিত হওয়ায় শেখ হাসিনা ¯œায়বিক প্রতিক্রিয়ায় বিহব্বল হয়ে পড়েছেন। লুন্ঠন, সম্পদ পাচার, পুঁজি পাচার, সরকারঘনিষ্ঠ ধনাঢ্যদের বিদেশে ‘অবৈধ স্বর্গ’ গড়ে তোলা হয়েছে সেটি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীরও ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে বছরের পর বছর ফেরত না দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন তারা হলেন স্বেচ্ছাঋণখেলাপী। এরাই ঋণের টাকা লুটপাটকারীর ভূমিকা পালন করছে। এরা সবাই সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজন। এরাই অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, কানাডার টরেন্টো ও দুবাইসহ বহু দেশে গড়ে তুলেছেন বেগমপুর বা বেগমপাড়া। এই সমস্ত গড়ে তোলা অবৈধ স্বর্গ থেকে বিদায় হওয়ার দুঃস্বপ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন উদ্ভ্রান্ত হয়ে মরণকামড় দিতে দেশনেত্রীর মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসায় বাধা দেয়াসহ দেশব্যাপী নতুন নতুন নিপীড়ণ-নির্যাতনের পদ্ধতি অবলম্বন করছে।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কুলাউড়ায় পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনতাই
রোববার থেকে নগর ভবনে দাপ্তরিক কাজ করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
গণহত্যার টপ কমান্ডারদের বিচার এক বছরের মধ্যে শেষ হবে: চিফ প্রসিকিউটর
কনস্টাস কাণ্ডে কোহলির দোষ দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার বোর্ড প্রধান
চরমোনাই মাদরাসা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অস্থায়ী ক্যাম্প: মাসুম বিল্লাহ
বগুড়ায় বালু ব্যবসায়ী হত্যা, লাশ নিয়ে বিক্ষোভ
মাগুরার শ্রীপুরে জোড়া শিশুর জন্ম
রিক্সা ভ্যানে চলন্ত ট্রাকের ধাক্কায় বাবা মেয়ে সহ নিহত ৩
পদ্মা নদীর ভয়ঙ্কর আগ্রাসনে হুমকির মুখে কুষ্টিয়া-রাজশাহী মহাসড়ক
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা: চালকসহ গ্রেপ্তার ২
গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেডের আরএমও জেল -হাজতে
বিপ্লবকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না, প্রয়োজনে আবারও মাঠে নামতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
সাংবাদিক আনিসুর রহমানের মৃত্যু
নিউজিল্যান্ডের কাছে শ্রীলঙ্কার অবিশ্বাস্য পরাজয়
রাশিয়ার উপর আজারবাইজানের বিমান ভূপাতিতের অভিযোগ : যুক্তরাষ্ট্রের ইঙ্গিত
ফিরে দেখা ২০২৪: সংস্কারের বছরে মাঠের ক্রিকেটে হতাশা
মানুষ সুন্দর ও কল্যাণের অপেক্ষায় আছে : হাজী ইয়াছিন
সিএনজি স্টেশন খোলা রাখার সময় বাড়ছে
সাবেক এমপি কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ দেশে ফিরেছেন
ঘাটাইলে ইসলামী ব্যাংকের ৪০০তম শাখার উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর