বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচনায় বক্তরা
১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৬ এএম
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা। বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর শুক্রাবাদে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম (পিজিডি) ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গীভূত বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনেরা এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ। সম্মানিত আলোচক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও লেখক মফিদুল হক।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশে ফিরে আসার মাধ্যমে বাঙালির স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছে। সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রে সবকিছুই অনিশ্চিত ছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন করেছেন। ওই সময়ে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে টিকে থাকতে পারবে না। বলা হয়েছে- বাংলাদেশ যদি উন্নয়ন করতে পারে তাহলে বিশে^ আর কোনো দেশে উন্নয়ন অসম্ভব হবে না। তেমনই একটি বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে সকল আশঙ্কাকে দূরে ঠেলে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে পুনর্গঠন করেছেন বঙ্গবন্ধু। এই সময়ে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব না দিলে অস্ত্র উদ্ধার সম্ভব হত না। ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সৈন্যরা সহসা দেশে প্রত্যাবর্তন করত না। বাংলাদেশ অবকাঠামোগত যে উন্নয়ন লাভ করেছে তার কোনোটিই অর্জিত হত না।’
উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. হারুন-অর-রশিদ আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণেই সকল সংশয়, শঙ্কা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালেই বলেছিলেন বাংলাদেশ সকল সমস্যা কাটিয়ে একদিন বিশে^ উন্নয়নে বিস্ময় হবে। আজকে সেটিই প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ বিশে^ উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ বহু পূর্বেই উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হত। এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।’
সভাপতির বক্তব্যে ভিসি ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ঐতিহাসিক গুরুত্বসহ নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে ৯ মাসের লড়াইয়ে যে গেরিলা যোদ্ধা পোষাক পরিহিত পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে পরাস্ত করেছে বঙ্গবন্ধু তার অনুপ্রেরণা। সেই মহামানব ফিরে না আসা পর্যন্ত গেরিলা যোদ্ধাদের ছিল অধীর আগ্রহ। পিতা মুজিব ফিরে আসায় মুক্তির স্বাদ পূর্ণতা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার মধ্য দিয়ে ফিরে এসেছে বাঙালির আস্থা ও ভালোবাসা। ফিরে এসেছে বিশে^ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা। বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার মধ্য দিয়ে ফিরে এসেছে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা।’
জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় ভিসি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ গঠনের যে অভিযাত্রা ছিল সেটি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিস্তব্ধ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনকে স্থায়ীভাবে নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়েছে। ঘাতকেরা জানতো না ক্যারিশমেটিক লিডারকে হত্যা করলে তাঁর গুণাবলি আরও বেশি শক্তি নিয়ে ফিরে আসে। বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে বারংবার তাঁর প্রত্যাবর্তনের জায়গাটি স্পষ্ট করেন। যখনই আমাদের চেতনায় শাণিত হওয়া প্রয়োজন হয়, বাংলাদেশ চর্চার প্রয়োজন হয় তখনই আমরা সুকান্ত, নজরুল, রবীন্দ্রনাথ এবং বঙ্গবন্ধুর কাছে ফিরে যাই- শক্তি সঞ্চয় করি।’
দেশের প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিশ^মোড়লের যে থাবা পড়েছিল, যেসব ভাষা উচ্চারিত হয়েছিল- বাংলাদেশ তার কাছে মাথা নত করলে আমাদের স্বাধীনতা নিমজ্জিত হত। আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর শক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে পাওয়া। বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করলে একটি দুর্নীতিমুক্ত, আদর্শবাদী, শক্তিশালী আত্মমর্যাদার বাংলাদেশ তৈরি করতে পারব। যাতে কোনো রাষ্ট্র বাঙালির দিকে, বাংলাদেশের দিকে চোখ রাঙাতে না পারে। জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস পড়িয়ে জাগরণ সৃষ্টি করেছে। আগামী দিনে তথ্যপ্রযুক্তি, সফ্টস্কিল, অন্ট্রাপ্রেনারশিপ এবং ল্যাংগুইজে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে মানবিক বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে পারব।’
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভিসি স্থপতি প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ডিস্ট্রিংগুইশড প্রফেসর ড. এ কে এম নুর-উন-নবী, প্রফেসর ড. আখতার হোসেন, প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান শাহীন, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিন কাশেম, প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিন, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনসহ বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান, চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিবৃন্দ।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
লিটনকে সেরা ছন্দে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাতে চাই: প্রধান নির্বাচক
লক্ষ্মীপুরে রঙ-কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে শিশুখাদ্য, ২ ফ্যাক্টরি সিলগালা
উৎসব মুখর পরিবেশে পালিত হলো জাবির ৫৪ তম দিবস
কুষ্টিয়ায় স্কুল কমিটি নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ৩০
জুলাই বিপ্লবে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ির চাকার পিষ্ট হয়ে নিহত মাহবুব আলমের পরিবারের পাশে তারেক রহমান
ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রকারী বিএনপির ক্ষতি করতে পারবে না : আমিনুল হক
যায়যায়দিন পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হলেন খুরশীদ আলম
বিধ্বংসী শতকে লিটনের জবাব, ঝড়ো সেঞ্চুরি তানজিদেরও, বিপিএলে রেকর্ড
ফরিদপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন দিনে মোট ১১ জন নিহত, আহত ৩৫
চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না
ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ
পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১
ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন
ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ
শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বৈষম্যমৃলক চূক্তি করেছিলেন-মৌলভীবাজারে সারজিস আলম
শেখ হাসিনার চোখ ছিল শুধু ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত : সারজিস
স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব
চকরিয়ায় পুলিশ-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি: বসতবাতিতে আগুন, ওয়ার্ড মেম্বারসহ আহত ২
শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে আইনি নোটিশ
সউদী-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক হজ চুক্তি স্বাক্ষরিত