জনজীবনকে দুর্বিষহ করতেই বিদ্যুৎ- জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করছে সরকার: রিজভী

Daily Inqilab নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:২৫ পিএম | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:২৫ পিএম

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মার্চে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম আবারো বৃদ্ধি করবে সরকার। জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত হবে অতীব নিষ্ঠুর। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি হলে এর চেইন রিঅ্যাকশনে জনসাধারণের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কৃষি শিল্প, কলকারখানা গভীর সংকটে পড়বে। এমনিতেই বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম হু-হু করে বাড়ছে।

 

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

 

রিজভী বলেন, গণবিরোধী সরকার জবাবদিহিতার ধার-ধারেনা। এই অবৈধ সরকারের পক্ষে কোনো গণরায় নেই। গত ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় জনগণের ওপর প্রতিশোধ নিতেই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বাড়ানো হচ্ছে। দখলদার সরকারেরা ঐতিহ্যগতভাবেই নিপীড়ক হয়। জনগণকে শত্রুপক্ষ ভাবে। তাই ক্ষমতা দখলে রেখে একের পর এক জনগণের উপর জুলুমের খড়্‌গ নামিয়ে আনে।

 

তিনি বলেন, মানুষ তার প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। এর উপরে এই দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের উপর চরম আঘাত আনবে। মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষরা এমনিতেই কঠিন কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছে। দেশে ৮০ শতাংশ মানুষের আয় বাড়েনি। অনাহারে-অর্ধাহারে কোনোরকম জীবন কাটাচ্ছে। তার উপর সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করে জনগণকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া হবে। সামনে রমজান মাস, তার আগেই এই দাম বৃদ্ধি হবে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।

 

বিএনপির এই নেতা বলেন, উন্নয়নের নামে দেশ-বিদেশ থেকে ব্যাপকহারে ঋণ নিয়ে জনগণের উপর বিপুল পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে ঋণের বোঝা। সরকারের হরিলুটের আর্থিক নীতির কারণে দেশের রাজকোষ প্রায় শূন্য হয়ে পড়েছে। এখন ডলার সঙ্কটের কারণে কয়লা উৎপাদনের খরচ বাড়ার কথা বলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সরকারের একটি অমানবিক খেলা বলে জনগণ মনে করে। জনগণের প্রশ্ন, ডলারের রিজার্ভ গেলো কোথায় ? উন্নয়নের ফানুস দেখিয়ে ডলার কারা আত্মসাৎ করেছে, কারা বিদেশে সম্পদ পাচার করেছে? অর্থ পাচার করেছে? বিশাল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছে তা জনগণ জানে।

 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, এখন বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে দাম বৃদ্ধি করা বিভিন্ন কায়দায় জনগণের রক্ত চুষে নেয়ার আরেকটি পৈশাচিক পন্থা। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দাম বৃদ্ধির উদ্যোগে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

 

বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা গতকাল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধির জন্য লম্বা-চওড়া বক্তৃতা দিয়েছেন। বর্তমান দখলদার শাষোকগোষ্ঠী বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য অন্তপ্রান দেখালেও বাস্তবে দেশকে পরিণত করা হচ্ছে ভিনদেশি ভাষা ও সংস্কৃতির পরিচর্যা কেন্দ্র হিসেবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আত্মনির্ভরশীলতার স্থলে পরনির্ভরশীলতাকে করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় নীতি। এখন ভারত থেকে কচুরমুখীও আমদানী করতে হয়। প্রকাশনা শিল্পকে ধ্বংস করে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক পর্যন্ত এখন ছেপে আসে ভারত থেকে। পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত অনেক প্রবন্ধ কবিতায় বানান ভুলে ভর্তি। বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের বাংলা ভাষার চর্চাকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য নানা কায়দায় পার্শ্ববর্তী দেশের রাষ্ট্রভাষার চর্চাকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে নিরন্তরভাবে।

 

তিনি আরও বলেন, নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতির বদলে ব্যাপকভাবে ভিনদেশি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটাতে তাদের গল্প, কবিতা ও কার্টুনের বইয়ের পাশাপাশি সিনেমা ও নাটকের ব্যাপক আমদানী করা হচ্ছে। এই সরকার বাংলাদেশের বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে অগ্রাহ্য করে পাঠ্যপুস্তকে ভিনদেশি চেতনা ঢোকানো হয়েছে। কোমলমতি শিশুদের মনে জাতীয় ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশের কবি সাহ্যিতিকদের

 

রিজভী আরও বলেন, দেশাত্মকবোধমূলক যে সমস্ত গল্প, কবিতা এবং বরেণ্য জাতীয় নেতৃবৃন্দে জীবনী পাঠ্যপুস্তক থেকে ক্রমান্বয়ে বাদ দেয়া হয়েছে, দলীয় এবং ভিনদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রভাবে। ইংরেজি ও হিন্দির মিশ্রণে বিকৃত বাংলা ভাষার চর্চায় এবং প্রযুক্তির বিকৃত ব্যবহার ও চর্চার ফলে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মৌলিক ভাষা ও সাংস্কৃতিক চেতনা।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বাড্ডায় পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদককে গুলি
একমাত্র পথ লাল সন্ত্রাস: ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি
লাল সন্ত্রাসের ডাক : মেঘমল্লার বসুকে গ্রেফতার দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
কম্বোডিয়ার পরিবর্তে অনৈতিক কাজে সউদী পাঠানোর প্রস্তাব পাসপোর্ট আটকে রেখে টাকা দাবি
ঢাবি প্রক্টরের সঙ্গে বাম ছাত্রনেতাদের মারমুখি আচরণ
আরও

আরও পড়ুন

ভারত তাদের চিরশত্রু পাকিস্তানকে দুর্বল করতেই মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছে : নুরুল হক নুর

ভারত তাদের চিরশত্রু পাকিস্তানকে দুর্বল করতেই মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছে : নুরুল হক নুর

সুদকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ

সুদকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ

বাড্ডায় পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদককে গুলি

বাড্ডায় পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদককে গুলি

গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দল অভিমত নিতে চিঠি দিচ্ছে সরকার

গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দল অভিমত নিতে চিঠি দিচ্ছে সরকার

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন, কাল মুক্তি ৯৫ ফিলিস্তিনির

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন, কাল মুক্তি ৯৫ ফিলিস্তিনির

১৮ মামলার আসামি আ.লীগ নেতা আজমল গ্রেপ্তার

১৮ মামলার আসামি আ.লীগ নেতা আজমল গ্রেপ্তার

ছাত্রশিবিরকে গুপ্ত রাজনীতি পরিহার করার আহ্বান জাবির ১০ শিক্ষকের

ছাত্রশিবিরকে গুপ্ত রাজনীতি পরিহার করার আহ্বান জাবির ১০ শিক্ষকের

একমাত্র পথ লাল সন্ত্রাস: ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি

একমাত্র পথ লাল সন্ত্রাস: ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি

লাল সন্ত্রাসের ডাক : মেঘমল্লার বসুকে গ্রেফতার দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

লাল সন্ত্রাসের ডাক : মেঘমল্লার বসুকে গ্রেফতার দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ

জাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে বাঁচাতে ছাত্রদল নেতার তদবির, ২ জনকে পুলিশে সোপর্দ

জাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে বাঁচাতে ছাত্রদল নেতার তদবির, ২ জনকে পুলিশে সোপর্দ

খুশদীলের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রংপুরের আটে আট

খুশদীলের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে রংপুরের আটে আট

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের ভিসা

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক দেশের ভিসা

মেডিকেল কলেজে শিক্ষক বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার

মেডিকেল কলেজে শিক্ষক বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি আজ

ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি আজ

গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন

গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে তাকিয়ে ইইউ

ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান

ভারতের উদ্বেগের মধ্যে হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছে পাকিস্তান

সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ

সান্ত¡না খুঁজে পাচ্ছেন না, দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ

দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড

দুর্নীতির মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির কারাদণ্ড

বিদেশে টাকা পাচারের রাজনীতি মানুষ চায় না : পীর সাহেব চরমোনাই

বিদেশে টাকা পাচারের রাজনীতি মানুষ চায় না : পীর সাহেব চরমোনাই