একদফা দাবিতে সারাদেশে গণমিছিল কাল

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া জনতার রুদরোষ থামবে না- সমাবেশে মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম

Daily Inqilab স্টাফ রিপোটার

০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৭ পিএম | আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৭ পিএম




রক্ত ঝরেছে আবু সাইদ, মুগ্ধসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুর। রক্ত দেয়া শুরু হয়েছে কত রক্ত প্রয়োজন শেখ হাসিনার। আর কত লাশ ও রক্তের প্রয়োজন। রক্ত দেয়া যেহেতু শুরু হয়েছে, শেখ হাসিনার পতন না হওয়ার পর্যন্ত ছাত্র-জনতার এ আন্দোলন শেষ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই। রাজপথে যেহেতু নারী-পুরুষ, ছাত্র, অভিভাবক, ডাক্তার, আইনজীবী, আলেম-ওলামা, ত্বলাবা, নায়ক-গায়কসহ সকল স্তরের মানুষ নেমে এসেছে, শেখ হাসিনার পতনই হবে এর একমাত্র সমাধান। জনতার রুদ্ররোষ শেখ হাসিনা বুঝতে চেষ্টা করুন। ছাত্র-জনতার একটিই দাবি তা হলো হাসিনার পদত্যাগ। অন্যথায় জনগণ ঘরে ফিরে যাবে না। মুফতী ফয়জুল করীম আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টায় এক দফা দাবিতে ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে জমায়েত শেষে গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একইসাথে সারা দেশে জেলা ও মহানগরে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার গণমিছিলে নেতৃত্ব দিবেন দলের আমীর হযরত পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেন, আজকের জনতার টর্নেডো রাজপথে দেশবাসী দেখতে পাবে।
আজ রোববার ৩টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক গণমিছিল পূর্ব জমায়েতে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সহকারি মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, যুবনেতা মাওলানা নেছার উদ্দিন, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, ডা. শহিদুল ইসলাম, মুফতী মানুসর আহমদ সাকী. ছাত্রনেতা মুন্তাছির আহমদ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম।
বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে একটি বিশাল মিছিল মুফতী ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে পল্টন মোড় হয়ে প্রেসক্লাব কদম ফোঁয়ারা হয়ে শাহবাগ গিয়ে পৌঁছলে এক অন্যরকম পরিবেশের সষ্টি হয়। ছাত্র-জনতা ইসলামী আন্দোলনের মিছিলটিকে অভিনন্দন জানান এবং বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে মুফতী ফয়জুল করীমকে ফুলের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। শাহবাগ চত্বরে ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেন, আমরা ছাত্রদের সকল আন্দোলন সংগ্রাম ও কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেছি। তিনি বলেন, এখন আর ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যে সীমব্ধ নেই। এই আন্দোলন সকল শ্রেণি, পেশা ও সাধারণ মানুষের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। জাতি এখন দু’ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষে দেশের সকল শ্রেণি-পেশা ছাত্র-জনতাসহ সাধারণ মানুষ, অপরপক্ষে শুধু। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন বিজয় সন্নিকটে। চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন শেষ হবে না। তিনি ছাত্রদের সকল কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে বলেন, আমরা ছাত্রজনতার আন্দোলন সংগ্রামে আছি এবং থাকবো।
তিনি বলেছেন, সরকারের নির্দেশে সকল বাহিনী নামিয়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করেছে, লাখো মানুষের রক্ত ঝড়িয়েছে, হাজার হাজার বাচ্চা এতিম, অনেককে বিধবা, প্নগু, অন্ধ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ অসহায় যন্ত্রণায় হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। মানুষ ঘরে থাকতে পারছে না। ঘরে থেকেও গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, বাচ্চারা খেলতে পারছে না গুলিবিদ্ধ হচ্ছে। ছাদে গেলেও গুলি, বাসায় জানালা দিয়েও গুলি। এ সরকার রক্তের নেশায় মত্ত হয়ে উম্মাদ হয়ে গেছে। বাসা-বাড়ীতে থাকতে পারছে না পুলিশ গ্রেফতার করছে। অনেক বাবা, ভাই লাশ গ্রহণ করতে পারছে না পুলিশ ও সরকারের সন্ত্রাসীদের ভয়ে। এজন্য শত শত লাশ বেওয়ারিশ দাফন করা হয়েছে। সরকার জনগণের মন থেকে শান্তি কেড়ে নিয়ে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। মুফতী ফয়জুল করীম পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব, সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের টাকায় কেনা গুলি জনগণের ওপর আর একটি মারবেন না। জনগণের কাতারে নেমে আসুন। তাহলে আপনাও ভাল থাকবেন, আমরাও ভাল থাকবো।
সারা দেশের ত্বলাবা, ওলামা, শ্রমিক-জনতা, প্রশাসনের কর্মচারি, কর্মকর্তা,ছাত্র-শিক্ষকসহ সর্বন্তরের জনগণকে আন্দোলনে নেমে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা মরার জন্য একসাথে হলে কেউ আমাদেরকে মারতে পারবে না। আর বাচাঁর জন্য ছিন্নভিন্ন হলে কেউ বাঁচবো না। কাজেই একসাথে থাকবো, একসাথে আন্দোলন গড়ে তুলবো। ছাত্র-জনতার বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ।

 


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গভীর রাতে গরিব অসহায় শীতার্ত  মাঝে ইউএনও'র কম্বল বিতরন

গভীর রাতে গরিব অসহায় শীতার্ত মাঝে ইউএনও'র কম্বল বিতরন

বরিশালে ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে

বরিশালে ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে

সেবা বঞ্চিত হলে অভিযোগ করা যাবে ইসির বিরুদ্ধে

সেবা বঞ্চিত হলে অভিযোগ করা যাবে ইসির বিরুদ্ধে

এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরও ৩ হাজার শিক্ষক

এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরও ৩ হাজার শিক্ষক

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নবনিযুক্ত সচিব ছাগলনাইয়ার সন্তান সামছু উদ্দিন

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নবনিযুক্ত সচিব ছাগলনাইয়ার সন্তান সামছু উদ্দিন

বাংলাদেশে শনাক্ত হলো 'রিওভাইরাস’, রোগটি সম্পর্কে যা জানা যায়

বাংলাদেশে শনাক্ত হলো 'রিওভাইরাস’, রোগটি সম্পর্কে যা জানা যায়

আন্দোলনের মুখে পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লো ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি

আন্দোলনের মুখে পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লো ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি

মাসের শেষে আবারো আসছে শৈত্যপ্রবাহ

মাসের শেষে আবারো আসছে শৈত্যপ্রবাহ

বর্ষসেরা ফটোগ্রাফার হিসাবে পুরস্কার পেলেন, আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক মুগনিউর রহমান মনি

বর্ষসেরা ফটোগ্রাফার হিসাবে পুরস্কার পেলেন, আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক মুগনিউর রহমান মনি

রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ

রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ

বেড়া কৈটোলা নির্মাণ বিভাগের অফিসিয়াল ও উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

বেড়া কৈটোলা নির্মাণ বিভাগের অফিসিয়াল ও উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বাইডেন-নেতানিয়াহুর ফোনালাপ

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বাইডেন-নেতানিয়াহুর ফোনালাপ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

না ফেরার দেশে নির্মাতা রায়হান রাফির বাবা

না ফেরার দেশে নির্মাতা রায়হান রাফির বাবা

এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা, গ্রেপ্তার ২

এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা, গ্রেপ্তার ২

ছাগলনাইয়ায় খালে ভাসছিল নারীর অর্ধগলিত লাশ

ছাগলনাইয়ায় খালে ভাসছিল নারীর অর্ধগলিত লাশ

ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় ৫ দিনে গাজায় নিহত ৭০ শিশু

ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় ৫ দিনে গাজায় নিহত ৭০ শিশু

ঘরে বসে মাত্র ১০ দিনেই মিলবে থাইল্যান্ডের ভিসা

ঘরে বসে মাত্র ১০ দিনেই মিলবে থাইল্যান্ডের ভিসা

মিয়ানমারের কাচিনে জান্তার বিমান হামলা, শিশুসহ নিহত ১৫

মিয়ানমারের কাচিনে জান্তার বিমান হামলা, শিশুসহ নিহত ১৫

আজ বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা

আজ বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা