হেফাজতের মামলা দ্রুত নিম্পক্তির নির্দেশনা
২০ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৭ এএম
সারাদেশে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো দ্রুত সময়ে নিম্পক্তি করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার এসব নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলে পুলিশ সদর দফতরের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি হেফাজত ইসলামী বাংলাদেশের সাথে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে মামলা হয়েছে। মোট ২০৩টি মামলায় হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। কিছু মামলার চার্জশীট দেওয়া হলেও বেশিরভাগ মামলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ওইসব মামলার কথা বলে হেফাজতকে জিম্মি করা রাখতো পুলিশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আশার আলো দেখছে হেফাজত। তারাও চাচ্ছেন দ্রুত সময়ের মামলাগুলোর প্রত্যাহার করতে। সরকারও আশ্বাস দিয়েছেন নেতাদের।
পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করার ইঙ্গিত মিলেছে। সেই জন্য পুলিশও কাজ শুরু করে দিয়েছে। সহিংসতার পর থানাগুলোর কার্যক্রম কিছুদিন বন্ধ ছিল। বর্তমানে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হওয়ায় মামলাগুলোর তদন্ত শুরু করে ফাইনাল প্রতিবেদন দিবে। আর যেসব মামলার চার্জশীট হয়েছে সেগুলোও আদালতের মাধ্যমে সুরাহা করা হবে।
এই প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, হেফাজতের মামলাগুলো নিয়ে আমাদেরই কিছু কর্মকর্তা নাটক করেছেন। তারা সরকারকে খুশি করতে এসব মামলা করে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের নানাভাবে হয়রানী করেছেন। এখন সময় এসেছে যেকোনো হয়রানী করা থেকে পুলিশ বিরত থাকবে। হেফাজতের মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে সিগন্যাল এসেছে। আশা করি আগামী ৩ মাসের মধ্যে সবকটি মামলা প্রত্যাহার হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, হেফাজতের কোন নেতা বা কর্মী কারাগারে থাকলে তারা জামিন নিয়ে মুক্তি পাবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় যেসব শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার হয়েছিল তারা সবাই মুক্ত হয়েছে। এবং মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তাছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মামলাও প্রত্যাহার হচ্ছে। আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করে মামলার কয়েকজন তদন্তকারী কর্মকতা জানিয়েছেন, মামলাগুলো দ্রুত সময়ে নিম্পক্তি করতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বেশকিছু নির্দেশনা এসেছে। এই নিয়ে আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে মামলাগুলোর নিস্পত্তি না হওয়ায় সমালোচনা হচ্ছে সবখানে। এগুলোর দ্রুত সুরাহা চাচ্ছি আমরাও। ২০১৩ সালের ৬ মে বাগেরহাটে হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে হেফাজতের দুজন কর্মী মারা যান। ওই ঘটনায় ফকিরহাটে ৪টি ও সদর থানায় দুটি মামলা করে পুলিশ। এতে হেফাজত, জামায়াত, স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীসহ অন্তত ১২ হাজার জনকে আসামি করা হয়। তারমধ্যে একটি মামলার বিচার হয়েছে। রায়ে আসামিরা খালাস পেয়েছেন। ২০১৩ সালের ৫ মে তাণ্ডবের পর ঢাকাসহ ৭টি জেলায় ৮৩টি মামলা হয়। এসব মামলায় ৩ হাজার ৪১৬ জনের নামসহ ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনকে আসামি করা হয়। দুটি মামলার অভিযোগ প্রমাণ করতে না পেরে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। আর ১৮টি মামলার অভিযোগপত্র দিলেও এর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। ওই কর্মকর্তারা আরো বলেন, শাপলা চত্বরের ঘটনার পর ২০২১ সালে বেশি মামলা হয়েছে হেফাজতের বিরুদ্ধে। তারমধ্যে ঢাকার মতিঝিল, পল্টন ও যাত্রাবাড়ী থানায় ১৪টি মামলা হয়। তাছাড়া চট্টগ্রামে ১১টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ বাদি হয়ে সদর থানায় ১২টি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ৩৭টি, সরাইল থানা পুলিশ বাদী হয়ে ২টি, আশুগঞ্জ থানা পুলিশ বাদি হয়ে ১টি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পক্ষ থেকে ৩টি ও আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশ ১টি, নারায়ণগঞ্জে ৮টি, মুন্সিগঞ্জে ১০টি, কিশোরগঞ্জে ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। আশা করি এসব মামলাগুলো চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে দ্রুত সময়ের মধ্যে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, ২০১৩ সালের শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলাকালে কথিত নাস্তিক বøগারদের শাস্তিসহ ১৩ দফা দাবিতে সক্রিয় হয় হেফাজতে ইসলাম। ওই বছরের ৫ মে ঢাকার ৬টি প্রবেশমুখে অবরোধ করে। এক পর্যায়ে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয় তারা। এসময় হেফাজতের বিপুল-সংখ্যক কর্মী-সমর্থক বিভিন্ন স্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে যানবাহন ভাংচুর করে এবং বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব সহিংসতায় হতাহতের ঘটনা ঘটে। আবার ২০২১ সালে মার্চ মাসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম-শতবর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে আসেন। এই সময় তার সফরের বিরোধিতা করে মাঠে নামে হেফাজতে ইসলাম। ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এলাকায় বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামের হাটহাজারী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। সংঘর্ষে ১৯ জনের মৃত্যু ও পুলিশসহ সর্বাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয় সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায়। এসব ঘটনায় সারাদেশে ১৫৪টি মামলা দায়ের করা হয়। তবে কোন মামলারই তদন্তের পাশাপাশি
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
চিরিরবন্দরে ধর্ষণ মামলা ধামাচাপা দিতে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা
মুরাদনগরে একাডেমিক ভবন সংকটে ভর্তি হতে পারেনি দুইশতাধিক শিক্ষার্থী
আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টরে চাঁদাবাজি মুক্ত করতে চাই
ছাত্র জনতার উপর হামলা মামলায় ৮ আইনজীবী কারাগারে
আটঘরিয়ায় সরিষা খেতে মৌবাক্স
সরকারি বীজ সার বিক্রয়ের সময় জনতার হাতে আটক কৃষি কর্মকর্তা
খুলনাকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিল সিলেট
আসছে বাংলাদেশি শরণার্থীদের গণহত্যামূলক সিরিজ 'ফেউ'
ভারত দলে ফিরলেন শামি
কলাপাড়ায বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার শুভ উদ্বোধন
বদলগাছীতে সেলোমিশিন চালিত ট্রলির চাকায় পিষ্ট হয়ে হেল্পার জয় নিহত
সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতি : ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্রসচিবের দপ্তরে ডেকেছে সরকার
ফরিদপুরে আবারও সড়ক দুর্ঘটনা ৫ ঘন্টার ব্যবধানে দুই মটরসাইকেল আরোহী নিহত
আগামী নির্বাচনকে ইতিহাসের সেরা ও ঐতিহাসিক করতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা
রাবিতে চার হলে পবিত্র কোরআন পোড়ানো: তদন্ত কমিটি, সর্বোচ্চ শাস্তির হুঁশিয়ারি
রামগড় স্থলবন্দরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শনে - উপদেষ্টা ব্রি:জে:(অব) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন
বগুড়ায় বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ
দুমকীতে বিএনপি অফিস ভাংচুর মামলায় ছাত্রলীগ নেতা আটক
তারেক রহমানের ৩১ দফা ছড়িয়ে দিতে রাষ্ট্রসংস্কারে-আরিফুল ইসলাম বিলাত
বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, জনগণের স্বপ্ন পূরণে নতুন পুলিশ সদস্যরা কাজ করবে- অ্যাডিশনাল আইজি