শহীদ হওয়ার ১২ দিন পর পাওয়া গেলো চা বিক্রেতা হতভাগা সজিবের লাশ
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে হেলিকপ্টার-যোগে শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পলায়নের খবর ছড়িয়ে পড়লে যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এদিকে পুলিশ থানার মধ্যে আটকে পড়লে এলোপাথাড়ি গুলি-টিয়ার-শেল ছুড়তে থাকে। এই সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সজিব হাওলাদার নামে এক ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা। বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সজিব প্রায়ই বলতো স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে না পারলে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে।
রাজধানীর ডেমরা মিরপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন হতভাগা সজিব। তার স্ত্রী রাবেয়া এবং মো. আব্দুর রহমান (২ বছর) ও মো. আহাদ (৭ মাস) নামে দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। সজিব শরিয়তপুর জেলার বেদরগঞ্জ উপজেলার চর কুমারিয়া, মাঝি কান্দি গ্রামের নজরুল হাওলাদারের ছেলে। আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে নিখোঁজ সজিবকে আর জীবিত পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের ১২ দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরিবার সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। চা বিক্রয়ের ফাঁকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পানি-বিস্কুটসহ বিভিন্ন শুকনো খাবার বিতরণ করেছে। ওই দিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনরত আহতদের সহযোগিতা করতে দেখা যায় তাকে। নিখোঁজের পর বহু খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান না পেয়ে নিরাশ হয় পরিবারের সদস্যরা।
তবে নিখোঁজের ১২ দিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে একটি ভাসমান অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে সোনারগাঁও থানার পুলিশ। লাশের জিন্স প্যান্টের পকেটে একটি নষ্ট মোবাইল ফোন পায় তারা। পুলিশ ওই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই খুঁজে পায় সজিবের পরিবারকে। পরে স্ত্রী রাবেয়া খাতুন লাশটি তার স্বামীর বলে দাবি করেন। নিহতের ভাই রানা গণমাধ্যমকে জানান, লাশে অনেকগুলো ক্ষত চিহ্ন ছিল। আন্দোলনের বিরোধী শক্তির লোকজন হয়তো তার লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেয়।
তিনি আরও জানান, আমার ভাই এই দেশটাকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে প্রায় ফোনে আমার সাথে কথা হতো। দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হলেও অথৈই সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে তার পরিবারকে। তার স্ত্রীসহ দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের একজনের বয়স দেড় বছর ও অন্য জনের বয়স সাত মাস। স্ত্রী রাবেয়া খাতুন গণমাধ্যমকে জানান, আন্দোলনে যেতে আমি নিষেধ করলেও শোনেনি। চা বিক্রির অজুহাত দিয়ে আন্দোলনে যেত। ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে ফোনে আর তাকে পাওয়া যায়নি। এখন আমি বাচ্চা দুটোকে নিয়ে কিভাবে চলবো? তিনি বলেন, এখন আমি চারদিকে অন্ধকার দেখছি।
সজিবের মা গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে ফোন করে বলতো এই আন্দোলনে না গেলে আমাদের আল্লাহ কাছের জবাব দিতে হবে। এখন দেশ স্বাধীন হলেও আমার ছোট দুটি নাতির জীবন পড়ছে অন্ধকারের মধ্যে। বড্ড অসহায় হয়ে গেলো ওরা। আহত ও নিহতদের পরিবার বিভিন্নভাবে সহযোগিতা পেলেও আমার ছেলেকে কেউ একটু খোঁজ নেয়নি, কোন সহযোগিতা পায়নি তার পরিবার। দেশবাসী ও সরকারের কাছে আমার দাবি, এই এতিম অসহায় শিশু দুটির দায়িত্ব যেন তারা নেন।স্থানীয় লোকজন জানান, স্বামীকে হারিয়ে মানবেতর জীবন পার করছে রাবেয়া। দুটি শিশুর চোখে রয়েছে করুণ চাহনি।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রাসূল (সা.) বিশ^জগতের জন্য রহমত স্বরূপ
গাছ লাগানোর বিষয়টি আত্মায় ধারণ করা উচিৎ : পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা
সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেকে দূরে থেকে বাদাম বেচে খেলেও ভালো করতাম- রাজশাহীতে শীর্ষ সন্ত্রাসী রুবেল
বাংলাদেশে কোন সংখ্যালঘু নেই, আমরা সবাই বাংলাদেশী : মাওঃ রফিকুল ইসলাম খাঁন।
সাবেক ২ মেয়র ও কাউন্সিলরসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বিশ্ব দক্ষতা প্রতিযোগিতায় ইরানি শিক্ষার্থীদের ৯ পদক
গ্রিসে ফার্স্ট গ্লোবাল চ্যালেঞ্জের আগে বাংলাদেশি রোবোটিক্স দলের ভিসা প্রত্যাখ্যান
সিলেটে অর্ধকোটি টাকার চিনির চালান জব্দ
যে কারণে ইউক্রেনকে যুদ্ধের মধ্যে রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা
চীন সফরে যাচ্ছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম
সন্ত্রাসী হামলার অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে মালির সামরিক বাহিনী
যুক্তরাষ্ট্রের ৯টি সামরিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দখল বন্ধ করতে ইসরাইলকে চীনের আহ্বান
রূপালী ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনে প্রশাসক নিয়োগের পরেও কাটেনি স্থবিরতা
কেন ২০০ হাতি মেরে ফেলছে জিম্বাবোয়ে?
কে হতে চলেছেন বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার জানেন?
অনলাইনে যেভাবে দেখা যাবে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ
সিংগাইর সড়ক র্দুঘটনায় নিহত ১,আহত ১
কৃষি গবেষণা নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সাত উদ্যোগ