রাষ্ট্র মেরামতের কাজে সরকারকে সময় দেয়া প্রয়োজন
০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম | আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
জাতীয় রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের আয়োজনে "ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে জাতির প্রত্যাশা' শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আজ অক্টোবর রবিবার সকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিনের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন সংগঠনের মহাসচিব স উ ম আবদুস সামাদ। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একেকটা নতুন ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে। গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতে তিনি ছাত্রজনতার আন্দোলনে শাহাদতবরণকারী প্রত্যেক শহীদকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। তিনি আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের পূনর্বাসনের দাবি জানিয়ে বলেন- ছাত্রজনতার এ আন্দোলনকে কয়েকটি রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় অর্জন বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। অথচ বিগত সরকারের দলীয় অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ব্যতীত দেশের দলমত নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণে এ বিজয় অর্জিত হয়েছে, যা কারো একক অর্জন নয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সূচনা হতে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের সহযোগী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা পুরা আন্দোলনে রাজপথে ছিল। বিগত ৫ জুলাই ছাত্রসেনার পক্ষ হতে জেলা-সমমান এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় পরিষদের পক্ষ থেকে নির্দেশ।দেয়া হয় এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ১৭ জুলাই তারিখ হতে ছাত্রসেনা ৪ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে দেশব্যাপি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। সক্রিয় আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে সরকারি দল ও পুলিশের হামলায় শতাধিক ছাত্রসেনাকর্মী আহত হন ও গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্তৃত্ববাদী সরকারের মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে ১৮ জন ছাত্রসেনার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। লিখিত বক্তব্যে মহাসচিব স উ ম আবদুস সামাদ বলেন -গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী যে কোন দেশে সুযোগসন্ধানী, স্বার্থন্বেষী মহল ও দুষ্কৃতিকারীরা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে শান্তি-শৃঙ্খলা সস্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে, ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। আমাদের দেশেও বর্তমান দুষ্কৃতিকারীরা গণঅভ্যুত্থানের সুযোগে দুষ্কর্ম করে যাচ্ছে, যে কারণে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকারের দেশ গড়ার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে । পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশী মদদপুষ্ট অস্ত্রধারীরা দেশের আঞ্চলিক অখন্ডতা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে বিষোদগার করে শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এসব কিছুর মাধ্যমে দুষ্কৃতিকারারী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, সরকার অস্থিতিশীল ও জাতীয়-আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা বলে আমরা মনে করি। এক্ষেত্রে সরকারকে আমরা পূর্ণ সহযোগিতা দিতে চাই। তাই যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে দ্রুত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি ওইসব দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসী উগ্রবাদী গোষ্ঠিদের আইনের আওতায় আনতে হবে।তিনি বলেন- সাম্য, স্বচ্ছতা, সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় বিশ্বাস, সুশাসন, ন্যায় বিচার, নেতৃত্বের জবাবদিহীতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ প্রভৃতির মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব। বর্তমানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৃষ্ট অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট জাতির অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। বিগত একদলীয় সরকারের আমলে বিদেশে পাচারকৃত দেশের সব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। এতে রিজার্ভ সংকট দূর হবে।
স্বীকৃত দুর্নীতিবাজ, বিদেশে বেগমপাড়া গড়া অর্থপাচারকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের মুখোমুখি করতে হবে। এতে ভবিষ্যতে কেউ দুর্নীতি করতে সাহস করবে না। সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ করে দেশের কার্যকর সংস্কার করার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান বর্তমান সরকারকে যে ১৮মাস সময় দেওয়ার কথা বলেছেন, আমরা তা সমর্থন করছি। দেশে সংস্কারে পর্যাপ্ত সময় প্রয়োজন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সৃষ্ট ছাত্র-জনতার বিজয়কে কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠি কুক্ষিগত করে দলীয় এজান্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা যেন না হয়, এজন্য সরকারের উপদেষ্টা, ছাত্র-জনতাসহ সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বৈষম্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে নিরলস কাজ করে যেতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্তর্বতীকালীন সরকারকে দাবি-দাওয়া দিয়ে বিব্রত করতে চাই না। আমরা তাদের সহযোগিতা করতে চাই। প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য সময় দিতে চাই। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশ হবে দুর্নীতি ও বৈষম্যমুক্ত।
বৈঠকে নেতারা সব রাজনৈতিক দলের সাথে সমন্বয় করে দেশের প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে অবাধ, সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহবান জানান। গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব রাখেন,বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মো.হাবিবুর রহমান হাবিন, কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য খাজা হাসান আলী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নেতা পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, এডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, মুহাম্মদ সোলায়মান ফরিদ, সৈয়দ মোজাফফর আহমদ মোজাদ্দেদী, শাহজালাল আহমদ আখঞ্জী, পীর কাজী শাহেদুর রহমান হাশেমী, এডভোকেট মুহাম্মদ ইকবাল হাসান, বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা কেন্দীয় পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ আকতার হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও শাহেদুল আলম।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চীনের অবিশ্বাস্য সামরিক উত্থানে টনক নড়েছে ভারতের
পারমাণবিক বোমা সজ্জিত নতুন যুদ্ধজাহাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন কিম
ধর্ষণের প্রতিশোধে বাবাকে হত্যা, গ্রেফতার ২ কিশোরী
আমাকে ধর্ষণ করার ভিডিও দেখে স্বামী
হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই
ফিলিপাইনে ৪০০ বিদেশি অনলাইন প্রতারক গ্রেফতার
ইসরাইলি ৪শ’ সেনা নিহত গাজায় স্থল অভিযানে
কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক
জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করতে হবে
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ
ভোলায় শীতার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ
গাজীপুরে বিএনপি নেতার উপর হামলা
চাঁদপুরে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা জসিম গ্রেপ্তার
বিভিন্ন বিভাগ ছোট হচ্ছে পাকিস্তানে
আশুলিয়ায় চাঁদার দাবিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে দোকানীকে গুলি
গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি নিয়ে ট্রাম্পকে সতর্ক করল জার্মানি-ফ্রান্স
৪ ভূখ-কে অন্তর্ভুক্ত করে ইসরাইলি মানচিত্র প্রকাশ
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
চলতি বছর বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমার পূর্বাভাস
যুক্তরাষ্ট্রের নাম মেক্সিকান আমেরিকা রাখার পরামর্শ