অপকর্মে অনুতপ্ত না হয়ে আরো ভয়ঙ্কর রূপে ফিরতে চায় ফ্যাসিবাদ: নেটিজেনদের যে উদ্বেগ

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক

১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১০ এএম | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১০ এএম

সম্প্রতি একটি ফাঁস হওয়া ফোনালাপে ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেওয়া স্বৈরাচারিনী শেখ হাসিনাকে আরো প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠার অঙ্গীকার করতে দেখা যায় এবং রীতিমতো হুমকি-ধামকি দিতে শোনা যায়। তার এই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আস্ফালন বাড়তে দেখা গেছে ফ্যাসিবাদের দোসরদের।

গণহত্যাকারী পতিত স্বৈরাচারের এই আস্ফালনে স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, ১৬ বছরের গুম-খুন, লুটপাট ও সর্বশেষ ভয়াবহ জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ঘটনায় অনুতপ্ত বা দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়াই আরো ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসতে চায় তারা। কিন্তু অপকর্মের বিচার ও শাস্তি হওয়ার আগেই ফ্যাসিবাদের এই ফিরে আসতে চাওয়াকে খুবই উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছে সাধারণ জনতা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুয়া আইডি থেকে দেওয়া বিভিন্ন পোস্টে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রায়ই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ক্ষমতাচ্যুত করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে উপদেষ্টাদের। ছাত্র সমন্বয়কদের বিরুদ্ধেও চালানো হচ্ছে প্রোপাগান্ডা। দেওয়া হচ্ছে নানা হুমকি-ধামকি।

অপকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের এভাবে ফিরে আসতে চাওয়া নিয়ে ফেসবুকে আল-আমিন শরীফ নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, আমি কোন আওয়ামীকে বলতে শুনিনি আবু সাঈদ, মুগ্ধ সহ শত শত নিরীহ ছোট ভাইদের করুণ মৃ'ত্যুতে তারা একটু অনুতপ্ত!! আমি কোন আওয়ামীকে বলতে শুনিনি দেশ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার হওয়াতে তারা খুবই দুঃখিত!! আমি কোন আওয়ামীকে বলতে শুনিনি যে, বিচার বহির্ভূত গুম, খু'ন বছরের পর বছর আটকে রেখে একজন মানুষের প্রতি নির্মম অবিচার খুবই দুঃখজনক!!
আমি শুধুই বলতে শুনেছি,,,,,"দেখবো ইউনুস কয়দিন চালায়"!"আগের সরকারই ভাল ছিল"!
"এই স্বাধীনতা কি জনগণ চেয়েছিল"! "দেশ ২০ বছর পিছিয়ে গেল"!

নজরুল লিখেছেন, প্রতিবিপ্লব এর ধোঁয়া তুলা এটা স্বৈরাচারীর ভুয়া স্বপ্ন ছাড়া কিছুই নয়। বাংলার মানুষ একবার ছুঁড়ে ফেলেছে আবার ফিরে আসতে চাইলে আবার ছুঁড়ে ফেলবে একেবারে নিঃস্ব করে দিবে তাঁরা। বুঝতেছে না মানুষ তাঁদের উপর কতটা ক্ষিপ্ত। মানূষ জীবন দিয়ে স্বৈরাচার হটিয়েছে প্রয়োজন এ আবার জীবন দেবে কিন্তু স্বৈরাচার ফিরে আসতে দিবে না এটা নিশ্চিত। সুতরাং আফসুস লীগ এর স্বপ্ন দেখে লাভ নেই।

জায়ান আল হাসান লিখেছেন, সরকার যদি আমাদের ক্ষতিও করে, তবুও এ সরকারকে টিকায়ে রাখতে হবে। কারণ এ সরকার পড়ে যাওয়া মানে ভারত টেকওভার করা।
আপাতত পুরোটা ফোকাস লীগের ওপর থাকতে হবে। গণমঞ্চ, নাগরিক মঞ্চ যে নামেই হোক, ছাত্রজনতাকে মাঠে থাকতে হবে, সেনাবাহিনীকে চাপে রাখতে হবে। সামনের দিনগুলো আগামীর বাংলাদেশের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করবে। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতায় যেই আসুক লীগের চেয়ে বেশি খারাপ হবে না। বলতে গেছিলাম লীগ ইবলিশের চেয়ে খারাপ,,,,।

আনিস জামান লিখেছেন, ভেবেছিলাম ওরা আসবে অনুতপ্ত হয়ে নিজেকে শুধরে, অতীতের ঘৃন্য কর্ম প্রত্যাখ্যান করে নতুন রূপে। কিন্তু না, এরা নিজের পরিণতি বুঝে নিতে বদ্ধপরিকর! সুতরাং এদের পাওনা এদেরকে বুঝিয়ে দেওয়াই উচিত হবে।

মেহেদী বিন রিয়াজ লিখেছেন, যারা প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখে তারা দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাতে চায়। তারা দেশের কল্যাণের কথা চিন্তা করে না। ইউনুস সরকার সাময়িক। তারা নির্বাচন দিবে, জনগণ যাকে ভোট দিবে সে দল দেশকে পরবর্তীতে পরিচালনা করবে। মানুষের ভোটের অধিকার ছিলো না, মানুষের কোনো মূল্যায়নও ছিলো না। এটার পরিবর্তন প্রয়োজন ছিলো। আল্লাহর ইচ্ছাই পরিবর্তন হয়েছে। ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হোক। দেশ একটি সম্মৃদ্ধ দেশে পথে অগ্রসর হোক।

জামিল হোসেন খান লিখেছেন, বিগত সরকার যে বিষাক্ত বীজ বপন করে গেছে এগুলো যতক্ষন পর্যন্ত উপড়ে ফেলা না হবে ততক্ষন কারো পক্ষে দেশ চালানো সম্ভব হবে না।
ডঃ ইউনুস থাকায় এই সরকার এখনোও ঠিকে আছে। চতুর্মুখী ঋন এবং রাজকোষ খালি থাকার কারনে বিপ্লবী সরকারের তাদের কৃতিত্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ভারত বিভিন্ন কুট কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামীলীগকে আবারও রাজনীতিতে সক্রিয় করার জন্য এবং বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেনতে চায়। পরিবর্তী যে সরকার আসুক না কেনো ভারত শান্তি দেশ চালাতে দিবে না। ভারত তাদের অনুসারী আওয়ামীলীগ ভালোবাসে তাদের স্বার্থের জন্য কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে নয়।

বিভাগ : মহানগর