গ্যাসের আগুনে দগ্ধ আনোয়ারা পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেলেন। আগুনে পুড়ে অসহ্য যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে আজ সকালে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন তিনি। জানা যায়, মৃত আনোয়ারার রয়েছে এক পুত্র ও এক কণ্যা সন্তান।তার গ্রামের বাড়ি জামালপুর।
স্থানীয়রা দাবি করছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অনভিজ্ঞ ঠিকাদারের অবহেলার কারণে এ দূর্ঘটনা ঘটেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরি। উত্তরার উত্তরখান থানাধীন ভূইয়া বাড়ি বাঁশতলা এলাকায় মশার কয়েল জ্বালাতে গিয়ে গতকাল বুধবার ভাড়া বাসায় আগুনে দগ্ধ হয়েছে ময়নুল ও আনোয়ারা নামে স্বামী স্ত্রী দুইজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গতকাল রাত ১২ টার দিকে এ দূর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ময়নুল একজন রিক্সা চালক, তার স্রী মৃত আনোয়ারা একজন গার্মেন্টস কর্মী ছিলো। গত ১ বছর যাবত ভূইয়া বাড়ি বাঁশতলা হামিদ উল্যাহর বাড়িতে তারা বসবাস করতো। দূর্ঘটনার খবর পেয়ে গভীর রাতে তিতাস গ্যাস কর্মকর্তা ফারুক তার টিম নিয়ে ফেঁটে যাওয়া গ্যাস লাইন বন্ধ করে দেয়।এতে সাময়িক সময়ের জন্য গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় এলাবাসী গ্যাস সংকটে পড়ে।
সুত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ১২ টার দিকে পুরো এলাকার বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর মৃত আনোয়ারা তাদের ভাড়া বাসায় ঘুমানোর প্রস্তুতি নিতে মশার কয়েল জ্বালানোর চেষ্টা করে। গ্যাস লাইট দিয়ে কয়েল জ্বালানোর সাথে সাথে তার শরীরে আগুন লেগে যায়। এতে তার শরীর ও মুখ মন্ডল পুরে যায়। আশপাশের লোকজন রাতেই তাদেরকে নিয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার অবস্থার বেগতিক দেখে সেখান থেকে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় আজ সকালে আনোয়ারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন।
এ সময় উত্তরখান থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউর রহমান ইনকিলাবকে বলেন,চিকিৎসরত অবস্থায় আজ সকালেই আনোয়ারার মৃত্যু হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন মামলা করতে এখনো কেউ থানায় আসেনি। পরিবারের কেউ আসলে তারা মামলা নিবে।
জানা যায়, গ্যাসের আগুনে পুড়ে জীবন মরণ সংকটে থাকা তার ময়নুলের অবস্থাও সংকটাপন্ন। স্থানীয়রা বলছেন গত কয়েক দিন যাবত এ সড়কে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ সুয়ারেজ লাইন- পানি নিষ্কাশনের পাইপ বাসানো কাজ করছে।
ভেকু দিয়ে মাটি কাটার সময় ঔ বাসার গ্যাস লাইন ফেঁটে গিয়ে গত কয়েক দিন যাবত গ্যাস বের হতে থাকে। তারা বিষয়টি দায়িত্বরত ঠিকাদার ও শ্রমিকদের জানালে ও তারা কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে উল্টো লাইন ঠিক করার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা নেয়। পরবর্তীতে লাইন ঠিক হয়েছে বলে চলে যায়।
এসময় বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেন মিঠু বলেন, ভূইয়া বাড়ী এলাকায় গ্যাসের আগুনে মানুষ পুড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তারা সেখানে ছুটে আসেন । সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারে সড়কে সুয়ারেজ লাইনের কাজ করতে গিয়ে ভেকুর আঘাতে ঔখানকার গ্যাসের পাইপ ফেঁটে যায়। ফাঁটা গ্যাস লাইন থেকে গত কয়েকদিন যাবত গ্যাস বের হতে থাকে। একাজে ঠিকাদারের দায় ও দায়িত্বে অবহেলা আছে কিনা জানতে চাইলে, তিনি বলেন,আগুনে পুরে মানুষ মারা গেছে। ঠিকাদার দায় এড়াতে পারে না
স্থানীয় লোকজন বলেন, সড়কে যে ঠিকাদার কাজ করছে তার যথেষ্ট অবহেলা ছিলো। ঘনবসতিপূর্ন এ এলাকায় রয়েছে অসংখ্য বাড়ি ঘর।এ সব বাড়ী ঘর ও লোক জনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না করেই অপরিকল্পিত খুঁড়াখুঁড়ি শুরু করেন তারা।
ভেকুর আঘাতে ফেঁটে যাওয়া গ্যাস লাইন ঠিক না করে পলিথিন দিয়ে পাইপ পেঁছিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা আরো বলছেন এ কাজে ঠিকাদারে অবহেলা রয়েছে সবচেয়ে বেশি।