গ্রেফতার সেই পাষাণী মা
১৩ মার্চ ২০২৩, ১০:১৯ পিএম | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৬ পিএম
সন্তানের পায়ে পলিথিন বেঁধে তাতে আগুন ধরিয়ে দিতেন তিনি। একপর্যায়ে পলিথিনে দগদগে ঘা সৃষ্টি হতো পায়ে। সেই ক্ষত দেখিয়ে বেশি ভিক্ষা পেতো ১১ বছরের শিশু। অগ্নিদগ্ধ হয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করা সন্তানের ভিক্ষার সেই টাকা দিয়ে জুয়া খেলতেন মা। নিজের সন্তানকে এভাবে ভিক্ষার উপযোগী করে গড়ে তোলা সেই পাষাণী মাকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। ভয়ঙ্কর ওই নারীর নাম হোসনে আরা। গতকাল সোমবার রাঙামাটি সদর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ অভিযানে নেতৃত্ব দেয় পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর একটি বিশেষ দল। শিশুকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োগের অপরাধে শিশু আইন ২০১৩-এর ৭১ ধারায় চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় গত বছরের ১৯ নভেম্বর মামলাটি করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক নুরুল আলম।
এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রাম-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা পাঁচলাইশ থানা-পুলিশকে শিশুটির মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে পিবিআইয়ের একজন পরিদর্শককে দিয়ে তদন্তের আদেশ দেন আদালত।
এখন মামলাটির তদন্ত করছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার। তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে খবর পেয়ে রাঙামাটি থেকে ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। গত বছরের ২৭ এপ্রিল হোসনে আরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ শিশুটিকে অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন। এতে বলা হয়, নগরীর পাঁচলাইশ বদনাশাহ মাজারের সামনে থেকে তার মেয়েকে মাইক্রোবাসে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে আসামি করা হয় মেয়েটি যে বাসায় কাজ করত, সেই বাসার রাশেদুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা আলী চৌধুরীকে। মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর মেয়েটি গত বছরের ১ জুন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের খাস কামরায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তাতে মেয়েটি বলেছে, নগরীর প্রবর্তক মোড় বদনা শাহ মাজার গেটে সে মায়ের সঙ্গে ভিক্ষা করত। বেশি ভিক্ষা পেতে হোসনে আরা বেগম মেয়েটির পায়ে পলিথিন পেঁচিয়ে পুড়িয়ে ক্ষত করে দিতেন। আর ভিক্ষার টাকায় তিনি জুয়া হিসেবে ছক্কা (লুডু) খেলতেন। ছোট ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য হোসনে আরা বেগম গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মেয়েটিকে একটি বাসায় কাজে দেন। পরে আবার তাকে ভিক্ষা করার জন্য নিয়ে আসতে চান। কিন্তু মেয়েটি মায়ের কাছে যেতে চায়নি। আর এজন্য যাদের বাসায় কাজ করতে দিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা দায়ের করে দেন ওই নারী।
তদন্ত শেষে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জাহেদুজ্জামান চৌধুরী আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন গত সেপ্টেম্বর মাসে। এতে বলা হয়, শিশুটিকে অপহরণের অভিযোগ করা হলেও ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, শিশুটিকে ওই দম্পতির কাছে তুলে দেন হোসনে আরা বেগম। এ কারণে ওই দম্পতি জড়িত নন। এরপর আদালত পাঁচলাইশ থানা-পুলিশকে হোসনে আরার বিরুদ্ধে শিশুকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োগ করায় মামলা করতে নির্দেশ দেন। ১১ বছর বয়সী শিশুটি বর্তমানে চট্টগ্রামের ফরহাদাবাদে মহিলা ও শিশু কিশোরী নিরাপদ হেফাজতিদের আবাসনকেন্দ্রে (সেফ হোম) রয়েছে। গ্রেফতার হোসনে আরাকে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান পিবিআই কর্মকর্তা মর্জিনা আক্তার।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বিবর্ণ ফুটবলে ইউরোপা লীগেও জয়হীন ইউনাইটেড
চট্টগ্রাম টেস্টে নেই তাসকিন, এলেন খালেদ
রোহিঙ্গাদের দেশের মাটিতে পা রাখতে দিল না ইন্দোনেশিয়া
হাসিনার অবস্থান জানিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন
সুবিদ আলী ভুইয়া ও মৃণাল কান্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
তত্ত¡াবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল চায় ইসলামী ফ্রন্ট
যশোর আদ্-দ্বীন নার্সি ইনস্টিটিউটে নবীন বরণ ও গুনিজন সংবর্ধনা
নোয়াখালীতে মাদরাসা থেকে ফেরার পথে নসিমন চাপায় ছাত্রের মৃত্যু
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় নারায়ণগঞ্জে আনন্দ মিছিল
আকিজ বেকারিকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করলো নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ
ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ থেকে বাঁচতে সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আহŸান পীর সাহেব চরমোনাই’র
প্রেসিডেন্টের অপসারণ নিয়ে যে সিদ্ধান্ত হলো উপদেষ্টা পরিষদে
সাতকানিয়ায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলারী আ.লীগ নেতা গ্রেফতার
'কেটে গেছে সকল শংকা, নিশ্চিত হয়েছে ভেন্যু, উন্মুখ দর্শক,আতিফের অপেক্ষা'
টয়লেটের কাজ সেরে সঙ্গে সঙ্গে অজু করা প্রসঙ্গে।
বরিশাল অঞ্চলে ‘জরায়ুমুখ ক্যন্সার’ প্রতিরোধে ৫ লাখ কিশোরীকে ‘এইচপিভি’ টিকাদান কর্মসূচী শুরু
সাহিত্যসমাজে অবক্ষয়
যৌতুক
কবিতার বাঁক বদল এবং নতুন ধারা
মানুষের বিবর্তন