ছাইয়ের ওপর দাঁড়িয়ে কাঁদছেন ব্যবসায়ীরা
০৫ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪১ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:০১ পিএম
বঙ্গবাজারের ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা মালামাল সরাচ্ছেন। অনেকেই কিছু পণ্যসামগ্রী অক্ষত থাকতে পারে-এ আশায় পোড়া ছাই আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন। জীবনের শেষ সম্বল হারানো হাজারও ব্যবসায়ী ঘুরে ঘুরে তা দেখছেন আর স্মৃতিচারণ করছেন। ছাইয়ের ওপর দাঁড়িয়ে কাঁদছেন অনেক অসহায় ব্যবসায়ী। গতকাল বুধবার বুধবার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গবাজারে গিয়ে এমন সব দৃশ্য দেখা গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বঙ্গবাজারের আগুনের ঘটনায় কোনো সংস্থার যদি অবহেলা থাকে তবে তা তদন্ত কমিটির মূল্যায়নে উঠে আসবে। কমিটির মূল্যায়ন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং তাদের বিচার হবে। এ জন্য সবাইকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
অন্যদিকে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সসংলগ্ন এনেক্সকো টাওয়ার শপিং কমপ্লেক্সে গতকাল সন্ধ্যায়ও থেমে থেমে আগুন ও ধোঁয়া দেখা গেছে। সেখানে আগুন পুরোপুরি নেভাতে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের সদস্যরা। যদিও অগ্নিকান্ডের পর গত মঙ্গলবার বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গতকাল পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ না ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতি মনে করছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
গতকাল বুধবার বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঈদের আগে এমন একটা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যে কষ্ট-কান্না, তা সহ্য করা যায় না। এরইমধ্যে আমি বলে দিয়েছি, তাদের যতটুকু পারি সাহায্য করব এবং কার কেমন ক্ষতি হয়েছে, এটা দেখব। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরে হামলাকারিদের ছাড় দেয়া হবে না। চিহ্নিত করে নেয়া হবে ব্যবস্থা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আগুনের প্রকৃত উৎস আমরা এখনও খুঁজে বের করতে পারিনি। মালামাল বের করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে এখনও কোথাও কোথাও আগুন জ্বলছে, ধোঁয়া বের হচ্ছে। পুরোপুরি নেভাতে না পারলেও আগুন সম্পর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আমাদের ফায়ার ফাইটারা রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি জায়গায় তারা অবস্থান করছে। ভবন থেকে মালামাল বের করতে তারা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। সব মালামাল বের করতে পারলেই আমরা আগুন সম্পর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবো।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির পঞ্চম থেকে সপ্তম তলায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ করছেন। মার্কেটের ওই তিনটি তলায় মূলত কাপড়চোপড় রাখা গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ওই তিনটি তলায় বিভিন্ন জায়গায় থেমে থেমে ধোঁয়া তৈরি হচ্ছে। কখনো কখনো আগুনও জ্বলে উঠছে। আর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তা পানি ছিটিয়ে নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ইনকিলাবকে বলেন, বঙ্গবাজারে আগুনের পেছনে একটি চক্র জড়িত রয়েছে। তদন্ত করে এদের বের করা হউক। ওই চক্রের সদস্যদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জড়িতদের বের করা সম্ভব বলে তারা মন্তব্য করেন।
নিজের দোকানের ছাইয়ের ওপর দাঁড়িয়ে কাঁদছেন ব্যবসায়ী: মল্লিকা গার্মেন্টস নামে নূর আলমের বঙ্গবাজারে দোকান ছিল। তিনি মূলত থ্রিপিস, শাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের জামা বিক্রি করতেন। গত মঙ্গলবারের আগুনে তার দুটি দোকানের ৮০ লাখ টাকার সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়েছে। সব হারিয়ে পুড়ে যাওয়া দোকানে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন নূর আলম। বন্ধু-বান্ধব,আশপাশের দোকানদার কেউ তার কান্না থামাতে পারছে না।
নূর আলম বলেন, এই মার্কেটে আমার দুটি দোকান ছিল। এখন একটি দোকানও নেই। নগদ টাকা যা ছিল বস্তায় ভরেছিলাম। সব কিছু পুড়ে ছাই, এখন কিছু নেই। ঈদ ঘিরে স্ত্রীর গহনা, জমি বন্ধক এবং ব্যাংক ঋণ নিয়ে ৬০ লাখ টাকার মালামাল কিনেছিলেন তিনি। সব মিলে দোকানে এক কোটি টাকার মালামাল ছিল। এখন আর কিছু নেই।
বঙ্গবাজারের শ্রমিকরা পাগল প্রায়:বঙ্গবাজার মার্কেটসহ আশপাশের মার্কেটে কুলির কাজ করা আক্কাস আলী পাগল প্রায়। এদিক সেদিক ছুটছেন। তিনি বললেন, সবার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কোন ক্রেতা বিক্রেতার কোন ব্যস্ততা নেই। আমরাও আজ বেকার, সবার ক্ষতি। অথচ একদিন আগেও সব দোকানে কাস্টমারদের ভিড় লেগে থাকতো, আমরা তাদের মালামাল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এনে দিতাম।
বঙ্গবাজারের আরেক শ্রমিক রহিজ উদ্দিন জানালেন, ঈদের বাজারে আমাদের ব্যস্ততা বেশি থাকত। মার্কেটে মানুষে গমগম করতো। বিক্রেতারা পাইকারি মাল নিতে আসতো। কিন্তু আজ সব থেমে আছে, চারদিক থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে।
পোড়া স্তূপে ভালো কাপড় খুঁজছে নি¤œআয়ের মানুষেরা: আগুনে পুড়ে যাওয়া কাপড় চোপড় মধ্যে থেকে ভালো কিছু কাপড় বের করতে বা খুঁজতে এসেছেন আশপাশের এলাকার অনেকেই। সেই সঙ্গে ছিন্নমূল ও নি¤œ আয়ের মানুষেরাও বেশ ভিড় জমিয়েছেন পুরো বঙ্গবাজার এলাকায়। তাদের মধ্যে অনেকে দুই একটা শাড়ি, প্যান্ট ও শার্ট জাতীয় পোশাক পেয়েছেন। যার মধ্যে কিছু পোড়া, আবার কোনো কোনটা অল্প কিছু ভালো আছে। এমন লাখ লাখ পোড়া কাপড় মিলে পুরো বঙ্গবাজার পরিণত হয়েছে যেন স্তূপে।
বঙ্গবাজার সংলগ্ন আনান্দবাজার বস্তি ফাতেমা বেগম বলেন, অনেকে খবর দিলো এখানে পোড়া জিনিসের মধ্যে দুই একটা ভালো কাপড় পাওয়া যাচ্ছে, তাই এসেছি। দুই একটা পাইছি কিন্তু অর্ধেক অংশে পোড়া দাগ আছে। পাশের এলাকার করিম বলেন, ভালো কিছু কাপড় পাওয়া যায় কি না দেখছি । আমাদের কেউ বাধা দেয়নি। আমরা গরিব মানুষ তাই কেউ কিছু বলছে না।
এ বিষয়ে বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, এগুলো মূলত বঙ্গ মার্কেটের পোড়া মালামাল। এখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আশপাশের দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষরা এসে এসবের মধ্যে বেছে দেখছে ব্যবহার করার মত ভালো কিছু পাওয়া যায় কি না। আমারা এসব পোড়া মালামাল সরিয়ে এক জায়গায় করে রাখছি, সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি এসে এগুলো নিয়ে যাবে।
সরকারের সহায়তায় বঙ্গবাজারেই ফিরতে চান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা: বুধবার বঙ্গবাজারে গিয়ে দেখা যায়, আগুনের লেলিহান শিখা থেকে কোনও মালামাল বেঁচে গেলো কিনা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন অনেকে। ছাইয়ের স্তূপ ঘাঁটছেন তারা। যেখানে আগুনে সব মাল পুড়ে যায়নি, সেখান থেকে ভালো পণ্যগুলো বেছে বের করছেন ব্যবসায়ীরা। পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় রাস্তার পাশেই রাখতে হচ্ছে এসব মালামাল। এগুলো নিয়ে অনেককে বেকায়দায়ও পড়তেও দেখা গেছে। মালগুলো এখন কোথায় নেবেন, কী করবেন, বিক্রি হবে কিনা এমন নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে তাদের মাথায়।
এনেক্সকো মার্কেটের চার তলার রকি স্টলের মালিক গোলাম মুস্তফা বলেন, আমার ১০ লাখ টাকার মাল বেঁচে গেছে। এখনও বের করা শেষ হয়নি। বের করে রাস্তার পাশেই রাখছি। বস্তায় পানি ঢুকছে, মালামাল কতটুকু ভালো আছে বস্তা খুলে পরে বোঝা যাবে। এতোগুলো মালামাল এখন কোথায় রাখবো? বিভিন্ন জেলা থেকে যে ব্যবসায়ীরা আসতো তারা এখন আসবে না। এখন আবার এই মার্কেটে ফিরে আসতে পারবো কি না জানি না।
দুই ভাই তোয়া ফারুকী ও ইমন ২০০৪ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থেকে রাজধানীর বঙ্গবাজার এসেছিলেন সংসারের হাল ধরতে। প্রথমে দুই ভাই বঙ্গবাজারে কাঠের মার্কেটে দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে ২০১৫ সালে ‘পলক কালেকশন’ নামে ছোট একটি দোকান নিয়ে নিজেরাই ব্যবসা শুরু করেন। তারা বিক্রি করতেন মেয়েদের ওয়ান পিস কাপড়। ঈদকে সামনে রেখে স্বজনদের কাছ থেক ১৫ লাখ টাকা ধার করে একটু বেশি করে মাল তুলছিলেন এবার। আগুনে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন তারা।
বঙ্গবাজার কাঠের মার্কেটের মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের কাছে লোক পাঠায়েছেন। তারা এসে আমাদের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চেয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে আজ একটি বৈঠক করবো। এরপর আমরা তাদের তালিকা দেবো।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেবে সিটি করপোরেশন: তাপস বঙ্গবাজারে অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। মেয়র শেখ তাপস বলেন, এই অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যাতে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যাপ্ত অনুদান দেবেন। পাশাপাশি, আমরাও আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অনুদান দেব। সেজন্য আমরা যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, আপনারা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে আগামী শনিবারের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করুন। আমরা আপনাদের পাশেই আছি।
বঙ্গবাজারে অগ্নিকা-ের কারণ অনুসন্ধানে সিআইডি: বঙ্গবাজারে অগ্নিকা-ের ঘটনায় কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অগ্নিকা-ের পরদিন বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ সময় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (ডিএমপি দক্ষিণ) আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অগ্নিকা-ের ঘটনায় পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ফায়ার সার্ভিস।
অগ্নিকা-ে ক্ষয়ক্ষতিতে প্রেসিডেন্টের দুঃখ প্রকাশ: বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। বুধবার এক বার্তায় রাষ্ট্রপ্রধান অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রতি সহমর্মিতা জানান।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম