ধ্বংসস্তূপে ব্যবসায়ীদের বিলাপ
০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৪ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩০ এএম
বঙ্গবাজার আগুনে পুড়ে ছাই হওয়ার খবর শুনেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন মোহাম্মদ আলী। গত মঙ্গলবার ভোরে আগুনে পুড়ে গেছে তার সাতটি। তার তিন কোটি টাকা মূল্যের গড়ে তোলা সম্পদ নিমিষেই শেষ হয়। জ্ঞান ফিরে পাবার পরক্ষণেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ অবস্থাতেই কর্মচারী সুজনকে নিয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে পুড়ে যাওয়া দোকান দেখতে আসেন। এ সময় মোহাম্মদ আলীর কান্নায় উপস্থিত সকলের চোখেও পানি চলে আসে।
তিনি জানান, ২০ বছর আগে বঙ্গবাজারে কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। সেখান থেকে প্রথমে একটি দোকান নেন, পরে ধীরে ধীরে ৭টি দোকান গড়ে তুলেন তিনি। মার্কেটে তিনটি দোকান কিনেছেন তিনি আর চারটি দোকান ভাড়া নিয়েছেন। এ ৭টি দোকানে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার কাপড় ছিল। আর দোকানসহ সব কিছু মিলে ছিল তার প্রায় তিন কোটি টাকার সম্পদ। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি এখন রাস্তার ফকির, আমার এখন কিছু নাই। আমার সারাজীবনের অর্জন এখানে কাজে লাগাইছি। আর কিছু করি নাই।’
আট বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল শুক্রবার ধ্বংসস্তূপ থেকে কিছু একটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিলেন ব্যবসায়ী মাসুম। জিজ্ঞাসা করতেই জানালেন, দোকানের সব পুড়ে গেছে। কিছুই অবশিষ্ট নেই। দোকানের বাকির খাতাটি খুঁজছেন তিনি, যদি পাওয়া যায়। ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার মালামাল তিনি বাকিতে দিয়েছিলেন। খাতাটি পেলে হয়তো সেই পাওনা টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করতে পারতেন। যারা মাছুমের কাছ থেকে বাকিতে মালামাল নিয়েছেন, তাদের মুঠোফোন নম্বরসহ বিস্তারিত লেখা ছিল ওই খাতায়। তিনি বলেন, দারিদ্র্যের কারণে অষ্টম শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করতে পারেননি। এক মামার হাত ধরে ২০০৩ সালে তিনি বঙ্গবাজারে কাপড়ের দোকানে কাজ নেন। ১০ বছর পর ২০১৩ সালে তিনি একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। বঙ্গবাজারে চারটি দোকানে তার বিনিয়োগ ছিল প্রায় এক কোটি টাকা। তার সব কটি দোকানই মাছুম নিউ কালেকশন নামে।
মোহাম্মদ আলী ও মাসুমের মতো অনেক ব্যবসায়ী পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপের সামনে এসে কান্না ধরে রাখতে পারেননি। সেখানে ধ্বংসস্তূপের পাশে বিলাপ করছিলেন মো. হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, তার বাসা ধানমন্ডিতে। ঘটনার পর আর বাসায় যাননি। হোসেন বলেন, ‘সব শেষ হয়ে গেছে। বাসায় গিয়ে কী হবে। সামনে ঈদ, কীভাবে কী করব, কিছুই বুঝতে পারছি না। দোকানে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল ছিল। ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ধার করে দোকানে মালামাল তুলেছিলাম। সব পুড়ে গেছে।’
ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকায় ব্যবসায়ীরা বিলাপ করছিলেন। তাদের দাবি, ধ্বংসস্তূপ থেকে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার পর ব্যবসায়ীদের যেন সেখানে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হয়। কারণ, সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয় ঈদুল ফিতরের সময়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
দেশবাসীকে আশ্বস্ত করছি, আমরা বসে নেই: পিনাকী ভট্টাচার্য
৪১ বছর ইমামতি করা ইমামকে রাজকীয় বিদায়
ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে বিদেশি কর্মী, ভিসা নিয়ে বিতর্ক
আজও ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
মাদারীপুরের মুখে গামছা বাঁধা অবস্থায় শিশু শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
বাংলাদেশের মানুষ ভারতের আধিপত্যবাদ রুখে দিবে: মিজানুর রহমান আজহারী
টেনিস বল ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে নেপাল গেল সৈয়দপুরের দল
আকাশ মণ্ডল থেকে ইরফান, তদন্তে জানা গেলো আসল পরিচয়
পর্তুগালে জাসাসের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
আজারবাইজানের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ইউক্রেনকে দায়ী করলেন রুশ বিমান প্রধান
প্রকাশ্যে এলো হানি-বাদশার দ্বন্দ্ব, গুরুতর অভিযোগ হানির
বন্ধ হয়ে গেলো গাজার শেষ হাসপাতালটিও
মনমোহন সিংহ,ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া এক সাহসী ও দৃঢ় সংকল্পের নেতা
জনগণের অংশগ্রহণেই নির্ধারিত হবে আমরা আসলে কী চাই : জোনায়েদ সাকি
নাগরিক কমিটির ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট ‘নির্বাহী কমিটি’ ঘোষণা
সচিবালয়ের কাগজ ভেবে দুটি ট্রাক আটকালো জনতা
মাত্র সাত মাসেই হাফেজ হলেন ১০ বছরের আব্দুল্লাহ
সিরিয়ায় আসাদের পতন, ঘরে ফিরছে ৩০ হাজার শরণার্থী
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত
ভুল তথ্যে চায়ের দোকানে ফায়ার সার্ভিস, অথচ পানের বরজ পুড়ে ছাই