লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম
০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৪ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৩ এএম
আল্লাহ তায়ালা বলেন : ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। রাসূলে কারিম (সা.) বলেছেন : ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদরকে তালাশ করো। (মুসলিম)। গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, রমজান পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস। এ মাসে বেশি বেশি নেক আমল করতে হবে। এখলাসের সাথে দোয়া করলে কোনো দোয়াই বিফলে যায় না। সকল প্রকার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করে নেক বান্দাদের সাথে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করতে হবে। পেশ ইমাম বলেন, জাহান্নামের আগুন থেকে আমরা বাঁচতে চাই এবং জান্নাত পেতে চাই। ঈমানদার ব্যক্তিরা রাত কাটায় সেজদায়। তাহাজ্জুত নামাজ আদায় করতে হবে। পরিবারের সদস্যরা মাহে রমজানের ইবাদত-বন্দেগি যথাযথভাবে পালন করছে কী-না তা দেখাও দ্বীনি দায়িত্ব। জমিনে চলতে গিয়ে বিনম্রভাবে চলতে হবে। ঈমানদারদের চলা ফেরায় কোনো অহমিকা প্রকাশ পাবে না। মাহে রমজানের হক আদায় করে সবাইকে রহমত মাগফিরাত ও নাজাত নসিব করুন। আমিন।
মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বারিধারায় বিধৌত হয়ে পাপের পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন ও শুদ্ধ হওয়ার মাস রমজান চলছে। এই মাস কোরআন নাজিলের মাস। খায়র ও বরকতের মাস। তাকওয়া অর্জনের মাস। আমলে অগ্রগামী হওয়ার মাস। নেকী হাসিলের মাস। গুনাহ বর্জন করার মাস। ক্ষমা লাভের মাস। প্রবৃত্তির লাগাম টেনে ধরার মাস। সংযম-সাধনার মাস। ভ্রাতৃত্ব চর্চার মাস। সহানুভূতির মাস। দেহমন শুদ্ধ ও পবিত্র করার মাস। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। জাহান্নামের কপাটগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। গুনাহের তাড়না দমিত হয়। এ মাসে শয়তান শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকে। তার ওয়াসওয়াসা ও কুমন্ত্রণা নিস্ক্রিয় হয়। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্ত করে থাকেন জাহান্নামের আগুন থেকে। অতএব এ মাস হলো আল্লাহমুখী হওয়া, তার প্রিয়পাত্র হওয়া, তাকওয়া হাসিল করা এবং গুনাহ থেকে পাক-সাফ হয়ে তার নৈকট্য অর্জনের মোক্ষম সময়।
খতিব বলেন, রমজানের গুরুত্বপূর্ণ শেষ দশক আমাদের সামনে সমাগত। শেষ দশকে ইতিকাফের মাধ্যমে একজন গোনাহগার বান্দা আল্লাহর কাছে সম্মানিত হয়ে যায়। জাহান্নাম থেকে মুক্তির মহা নেয়ামত অর্জিত হয় শেষ দশকের ইতিকাফের মাধ্যমে। ইতিকাফ একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যম-িত ইবাদত। ইতিকাফের মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে আক্ষরিক অর্থেই আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যায়। ইতিকাফ করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়াহ। কোনো মসজিদ মহল্লায় কয়েকজন বা কোনো একজন আদায় করলে সবাই পাপমুক্ত হবেন। আর কেউই আদায় না করলে সবাই গোনাহগার হবেন। তবে যিনি আদায় করবেন, শুধু তিনিই সওয়াবের অধিকারী হবেন। হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারীম (সা.) আজীবন রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। তার ইন্তেকালের পর তার স্ত্রীগণও ইতিকাফ করতেন। (বুখারি, মুসলিম)। নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করবে, তার জন্য দু’টি হজ ও দু’টি ওমরার সওয়াব রয়েছে। (বায়হাকি)। খতিব আরও বলেন, ইতিকাফের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো শবে কদর প্রাপ্তি। রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করলে শবে কদর প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়ে যায়। ‘শবে কদর’ কথাটি ফারসি। শব মানে রাত বা রজনী আর কদর মানে সম্মান, মর্যাদা, ভাগ্য ইত্যাদি। শবে কদর অর্থ হলো মর্যাদার রাত বা ভাগ্যরজনী। শবে কদরের আরবি হলো লাইলাতুল কদর। পবিত্র কোরআন যে রাতে নাজিল হয়েছে, সে রাতই লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তায়ালা বলেন : ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। আপনি কি জানেন, লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর তথা মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ এবং রূহ (হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম) প্রত্যেক কাজের জন্য তাদের পালনকর্তার নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে অবতরণ করেন। এটা নিরাপত্তা, যা ফজর উদিত হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। (সূরা আল কদর)।
খতিব বলেন, হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত জেগে ইবাদত করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (বুখারি)। শবে কদর রমজানের মধ্যেই। রাসূলে কারিম (সা.) বলেছেন: ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে শবে কদরকে তালাশ করো। (মুসলিম)। হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.), আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে আমি ওই রাতে আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব? রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তুমি বলবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফা’ফু আন্নি’। অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন’। (সুনান ইবনে মাজা) মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন, আমীন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল
‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের
সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই
নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি
স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন
গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন
চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ
সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে
নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন
ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা
আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের অধিকার খর্ব হবে না: সেলিম উদ্দিন
গাছে গাছে আফ্রিকান জায়ান্ট শামুক
ঈশ্বরগঞ্জে মহাসড়কে কাঁচাবাজার
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রসহ আরসা সন্ত্রাসী গ্রেফতার