ঢাকা   শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সেমিনারে রাশেদ খান মেনন

সামরিক-বেসামরিক আমলার হাতে দেশের রাজনীতি-অর্থনীতি বন্দি

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:০৩ পিএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৩, ১২:২০ এএম

দুর্নীতির কারণে দেশে দারিদ্র্যসীমা ও বৈষম্যের ফারাক তুলনাহীন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাষ্ট্র সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে বন্দি হয়ে গেছে। পাশাপাশি দারিদ্র্যসীমা ও বৈষম্যের ফারাক তুলনাহীন জায়গায় চলে গেছে। গতকাল রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও শামীম আলম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কোনো দান বা খয়রাত নয়। এটা নাগরিকের অধিকার। সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে শুরু হয়েছিল। বর্তমান সরকারের আমলে ২০১৫ সালে ভাতার প্রচলন শুরু হয়। এটাকে রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি হিসেবে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। দারিদ্র্যসীমা কমিয়ে আনতে পারলেও বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়ে তা তুলনাহীন জায়গায় চলে গেছে। বৈষম্যের বিষয়টি অনেকে স্বীকার করতে চায় না। তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে আমাদের রাষ্ট্র এখন অতিক্ষুদ্র ধনিক গোষ্ঠি আর সামরিক ও বেসামরিক আমলাদের হাতে বন্দি হয়ে গেছে। দারিদ্র্যসীমা ও বৈষম্যের ফারাক অনেক বেশি হয়ে গেছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, নগরের অভাবগ্রস্তর লাখ লাখ মানুষ কারো নজরে আসে না। রাজধানী ঢাকার হরিজনদের ক্যাম্পে গেলে প্রকৃত চিত্র দেখতে পাবেন। নগরের অভাবগ্রস্তদের আমরা খেয়ালই করি না। ঢাকা শহরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মাঠ দখল হয়ে যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের অবস্থা কী? এই জায়গায় গবেষণা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে দুর্নীতি কমিয়ে জরিপের মাধ্যমে যোগ্য অ-সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে ভাতার আওতা বাড়ানোর দাবি জানায় সিপিডি। সিপিডি মনে করে, বর্তমানে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার ক্ষেত্রে মাসে ৫০০ টাকা ও শিক্ষা উপবৃত্তির জন্য মাসে ১৫০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। সামাজিক ভাতাপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ বয়স্ক ও ৩৩ শতাংশ বিধবা অযোগ্য সুবিধাভোগী রয়েছে। এদের মধ্যে আবার প্রায় ১২ শতাংশ পেনশন, ভিজিডি বা অন্যান্য ভাতা নিচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা অযোগ্য সুবিধাভোগীদের জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। যা প্রতিরোধ করা প্রয়োজন। তাই প্রকৃত দুস্থ ও আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বলদের চিহ্নিত করতে দারিদ্র্য প্রবণ এলাকায় একটি কার্যকরী পারিবারিক জরিপ করা উচিত।

অন্যদিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করা ও যথাযথ কাগজপত্রের অভাবে ৫ থেকে ৩০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাদেরকেও ওই সুবিধার আওতায় আনা প্রয়োজন।

সিপিডির তথ্যানুযায়ী, যোগ্য অ-সুবিধাভোগীদের ভাতার আওতায় আনতে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৩০২ কোটি টাকা প্রয়োজন। এদিকে অযোগ্যদের পেছনে ১৫০০ কোটি টাকা অপব্যবহার হচ্ছে। তা রোধ করে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ যোগ্যদের পেছনে ব্যয় করা যেতে পারে। আর এই ১৫০০ কোটি টাকার মাধ্যমে প্রকৃত যোগ্য এমন ৪৫ শতাংশ ব্যক্তিকে ভাতার আওতায় আনা সম্ভব। ##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা
কপ২৯-এর এনসিকিউজি টেক্সট হতাশাজনক : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
পর্তুগালে ইউএনএওসি গ্লোবাল ফোরামে অংশ নেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ভোগান্তিতে ৬ লাখের বেশি আবেদনকারী
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-বেনাপোল ট্রেন চলাচল শুরু ২ ডিসেম্বর
আরও

আরও পড়ুন

রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

রানআউট হজ,লুইসের ব্যাটে এগোচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?

জমকালো 'কনটেনন্ডার সিরিজ',কে কার বিপক্ষে লড়বেন?

তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল

তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল

অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার

অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার

'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা

'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা

দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান

দেশনেত্রীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা ও সম্মান

বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল

বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনসহ সরকারের কাজের পরিধি বিশাল

অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি

অদক্ষ ফার্মাসিস্ট দ্বারাই চলছে ফার্মেসি

নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু

নির্বাচন কমিশন গঠন : গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু

বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস

বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস

দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম

দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম

মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই

মসজিদে পরে এসে ঘাড় ডিঙিয়ে সামনের কাতারে যাওয়া জায়েজ নেই

দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ

দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সুন্দর জীবন এবং কৃতজ্ঞতাবোধ

যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি

যুগে যুগে জুলুম ও জালিমের পরিণতি

সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ

সালাম ইসলামী সম্ভাষণ রীতির এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ

করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?

করিমগঞ্জের নাম কি আদৌ শ্রীভূমি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ?

বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন

বিশাল স্বর্ণখনির সন্ধান পেলো চীন

মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ

মাছ ধরার নৌকার সঙ্গে ভারতীয় সাবমেরিনের সংঘর্ষ

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়

যৌন পর্যটনের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠছে টোকিও : বাড়ছে ভিড়

‘হাই অ্যালার্টে’ লন্ডন, মার্কিন দূতাবাসের সামনে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ

‘হাই অ্যালার্টে’ লন্ডন, মার্কিন দূতাবাসের সামনে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ