আ. লীগে আনোয়ারের এক ছাতার নিচে সর্বস্তরের নেতাকর্মী
০৮ মে ২০২৩, ১০:৩৬ পিএম | আপডেট: ০৯ মে ২০২৩, ১২:০৪ এএম
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ল-ভ- হয়ে যায় সিলেট। বছর বছর বন্যা হলেও ২০২২ সালের বন্যার ভয়াবহতা ছিল অবিশ^াস্য। অনেকটা সেরকম ঘটনা ঘটেছে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে। বছরের পর বছর ধরে আওয়মী লীগের রাজনীতি ও নেতৃত্ব দেখছে সিলেটের নেতাকর্মীরা। সেই নেতৃত্ব থেকেই বাঁচাই হবে সিসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। সেকারণে দীর্ঘদিন ধরে জনগনের সাথে মিলেমিশে চলছিলেন একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশি। রুটিনকাজে পরিনত হয়েছিল এ অনুশীলন। বিগত করোনা, বন্যাকালে মহানগর এলাকার বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে ছিলেন তারা। দুঃখ-কষ্ঠ লাগবে চেষ্টা করেছেন রাজনীতিক অনুসারী-অনুগামী নিয়ে। সেকারণে মানুষের মুখে মুখে আওয়ামী লীগের দুই এক প্রার্থীর নাম মেয়র পদে জপ উঠেছিল। কিন্তু স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়া ভেঙে দেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
দীর্ঘদিন ধরে মেয়র পদে নির্বাচনের প্রত্যাশায় স্থানীয় নেতাদের ত্যাগ-তীতিক্ষা ল-ভ- করে দেন বিগত বন্যার ভয়াবহতার মতো। বন্যার দাপটের কাছে সিলেটবাসী ছিল যেমন অসহায়, ঠিক তেমনি আনোয়ারুজ্জামানের রাজনীতিক শক্তিমত্তার কাছে অসহায় হয়ে পড়েন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। বলতে গেলে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করেন মনোনয়ন প্রত্যাশি নেতৃবৃন্দ। আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে সিলেটিদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হলেন আনোয়ারুজ্জামান, এমনটিই মনে করেন রাজনীতিক বিশ্লেষকরা। তার প্রমানও দেখিয়েছেন অনায়াসে মনোনয়ন নিশ্চিত করে। আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে তার ঈর্ষণীয় প্রভাবের বিরুদ্ধে কারো দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই বিষয়টি এখন সুস্পষ্ট। তাই মনোনয়ন প্রত্যাশিসহ দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। সেকারণে তার পক্ষে শক্তিশালী হচ্ছে দলীয় ঐক্য। সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয়ের পুনরাবৃত্তি চায় না দলটি। তাই সিলেটে এসে কেন্দ্রীয় নেতারা কড়া বার্তা দিয়ে গেছেন দলের নেতা-কর্মীদের। কেন্দ্রীয় নেতাদের কঠোর হুঁশিয়ারি ও আনোয়ারুজ্জামানের তৎপরতায় এক ছাতার নিচে আসতে শুরু করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। মনোনয়নবঞ্চিতরাও দাঁড়িয়েছেন তার পক্ষে।
এ ছাড়া মেয়র পদে জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি হিসাব মেলাচ্ছেন নানা সমীকরণের। শেষ পর্যন্ত আরিফুল প্রার্থী না হলে নৌকা বিরোধী ভোট কোথায় যাবে সে হিসাবই এখন তাদের কাছে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আরিফুল এখনো নির্বাচন নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেননি। ২০ মে সমাবেশ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর কথা তার। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে মাঠে নামার পরও অনেকটা অস্বস্তিতে ছিলেন আনোয়ার। দলের মনোনয়ন বঞ্চিতরা এড়িয়ে চলছিলেন তাকে। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পদবিধারী বেশির ভাগ নেতাও দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন। কিন্তু আনোয়ার নানাভাবে তাদের মান-অভিমান ভাঙাতে সক্ষম হন। তবে মনোনয়নবঞ্চিত নেতারা কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও সংশয় ছিল তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে। ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা নৌকার পক্ষে কতটুকু সক্রিয় থাকবেন তা নিয়ে দেখা দেয় শঙ্কা। তাই তিনি এক্ষেত্রে যাতে কামরানের ফলাফলের পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে ব্যাপারে আগেভাগেই কেন্দ্র থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর আরামবাগে একটি কনভেনশন হলে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মিসভা আহ্বান করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনসহ প্রায় এক ডজন কেন্দ্রীয় নেতা। সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা গতবার বদর উদ্দিন আহমদের পরাজয়ের জন্যখন্দকার মোশতাক অনুসারীদের দায়ি করেন।
সভায় জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মোশতাক বাহিনীর কারণেই বিগত দিনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে হারতে হয়েছে। দলে খন্দকার মোশতাকের অনুসারী যেমন রয়েছে, তেমনি মুজিব আদর্শের লড়াকু এবং ত্যাগী কর্মীরাও রয়েছেন।
এদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জাতীয় পার্টির নেতা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেছেন, দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি করা হলেও কোনো ধরনের সাক্ষাৎকার ছাড়াই সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে নজরুল ইসলাম বাবুলের নাম ঘোষণা করা হয়। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার ছাড়া দলীয় প্রার্থী ঘোষণা অসাংগঠনিক বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ ব্যাপারে রওশন এরশাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
অপরদিকে, সিসিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে এখনো নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত অনেক আগেই জানিয়েছে বিএনপি। দলীয় এ সিদ্ধান্তের কারণে আরিফের প্রার্থী হওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এরমধ্যে আরিফ জানান, নির্বাচনে প্রার্থী হতে নগরীর সাধারণ মানুষের চাপ রয়েছে। তবে দিন দিন নির্বাচনী পরিবেশও নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। প্রার্থীতার বিষয়টি পরিষ্কার করার আগেই সিলেটে নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করা হচ্ছে। প্রশাসনে রদবদল চলছে। সবকিছু মিলিয়ে ২০ জুন রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ করে নির্বাচন নিয়ে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ইন্টারনেটের ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন উচ্চতায় চীন
মধ্যরাতে রাজধানীর সড়কে সড়কে সেনা চেকপোস্ট
বিপন্ন মেরু ভালুককে গুলি করে হত্যা, তোপের মুখে আইসল্যান্ডের পুলিশ
বাড়িতে ঢুকে আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
নদীতে মেহেদী রাঙা হাতে ‘আই লাভ ইউ’ লেখা যুবতীর লাশ উদ্ধার
গান গেয়ে উল্লাস করে যুবককে পিটিয়ে হত্যা, সমালোচনার ঝড়
বড় জয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল দ. আফ্রিকা
গোল উৎসবে বার্সার ছয়ে ছয়
রোনালদোর দ্রততম শত গোলের রেকর্ড ছুঁলেন হল্যান্ড
ঘটনাবহুল ড্রয়ে শেষ আর্সনাল-সিটি মহারণ
বায়তুল মোকাররমের ঘটনার জেরে ইফা মহাপরিচালক প্রত্যাহার
কোর্ট ম্যারেজ করা প্রসঙ্গে?
এখনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের রেখেছেন কেন? - রিজভী
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে
রাষ্ট্র গঠনে যা করা জরুরি
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে একটি প্রস্তাবনা
ঈশ্বরদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তুহিনসহ যুবদল নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
ইসরাইল এখনো সন্ত্রাসীর মতো হামলা চালাচ্ছে
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন অতিশী
ওরা পার্বত্য অঞ্চলকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়