গারো পাহাড়ে চাষ হচ্ছে রকমেলন
১১ মে ২০২৩, ১১:০১ পিএম | আপডেট: ১২ মে ২০২৩, ১২:০১ এএম
গারো পাহাড়ে এবার চাষ হচ্ছে মরুভূমির দেশ সউদী আরবের ফল হিসেবে খ্যাত সাম্মাম বা রকমেলন ফল। গারো পাহাড় ঝিনাইগাতী উপজেলার তরুণ উদ্যোক্তা পরীক্ষামূলকভাবে এ ফল চাষে সফল হয়ে বাণিজ্যিকভাবে রকমেলন বা সাম্মাম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। ইতোমধ্যেই আরব দেশের ফল চাষের খবর পেয়ে আশপাশের গ্রামসহ শেরপুর জেলার বিভিন্ন স্থানের মানুষ তার ফল বাগানে ভিড় করছেন দেখার জন্য। গাছের ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে গোল গোল সাম্মাম বা রকমেলন। বাইরে দেখতে বাতাবি লেবু ও ভেতরে তরমুজের মত রসালো এই ফল। প্রায় প্রতিটি গাছই ভরপুর ফল ও ফুলে।
বাঁশের বাতা আর নেট ব্যাগ বা জালের ফাঁকে ফাঁকে পুরো ক্ষেত যেন ফুলে-ফলে ভরে গেছে। সাম্মাম বা রকমেলন ফল খুবই পুষ্টিসমৃদ্ধ। বহির্বিশ্বে এ ফলের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। দেশে এ ফলের প্রচলন এখনো অনেক কম। এই ফলকে সউদীতে সাম্মাম বলে, তবে বিভিন্ন দেশে এটি রকমেলন, সুইট মেলন, মাস্ক মেলন ও হানি ডিউ নামেও পরিচিত। সাম্মামের দুটি জাত রয়েছে। সবুজ জাতের সাম্মাম বাইরের অংশ সবুজ আর ভেতরের অংশ লাল, আর বাদামি জাতের সাম্মাম বাইরের অংশ হলুদ এবং ভেতরের অংশ লাল। তবে খেতে দুই ধরনের ফলই খুব মিষ্টি ও রসালো।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় নককুড়া ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা গ্রাম গোমরা। এ গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মো. আনোয়ার হোসেন প্রথমে ইউটিউবে দেখে সাম্মাম ফল খুবই উচ্চমূল্যের একটি ফল। তাই তিনি পরীক্ষামূলকভাবে এ ফল চাষে স্থানীয় বীজ ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে সবুজ জাতের সাম্মাম বীজ সংগ্রহ করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তার পৈতৃক ১০ শতক জমিতে ওই বীজ রোপণ করেন। মাত্র ৩০ দিনের মাথায় গাছে ফুল আসতে শুরু করে। এরপর পরাগায়ণের আরো ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যেই ফুল থেকে ফল এবং সর্বশেষ এপ্রিল মাসের শেষ দিকে সে ফল পাকতে শুরু করেছে। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসেই এ ফল খাওয়া ও বাজারে বিক্রয় উপযোগী হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো।
আনোয়ারের এ ফল চাষে এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। আর ফল বিক্রি করার লক্ষ্য রয়েছে লক্ষাধিক টাকা। প্রতিটি ফল প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের হয়েছে। পাইকারি বাজারমূল্য ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি হিসেবে প্রতিটা ফল প্রায় দু-তিনশ টাকায় বিক্রি করা যাবে বলে তার ধারণা।
এব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, মরুভূমির এ ফল চাষ সম্প্রতি বাংলাদেশে শুরু হলেও শেরপুরে এটিই প্রথম। তবে ফলন দেখে মনে করা হচ্ছে উচ্চ মূল্যের এ সাম্মাম চাষ গারো পাহাড়ের পতিত জমিতে চাষাবাদে লাভবান ও আগ্রহ সৃষ্টি করবে স্থানীয় চাষিদে মধ্যে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আল মাসুদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, মরুভূমির দেশ সউদী আরবের ফল সাম্মাম চাষে ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই নতুন উদ্যোক্তা বা চাষি। ফলন ও বাজারমূল্যে তিনি বেশ লাভবান হচ্ছেন। দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে চাষিগণ আসছেন এবং সবাই এই ফল চাষে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছেন। যা প্রসংশনিয় ও অনুকরনীয়। পুষ্টি সমৃদ্ধ এই ফল চাষ দ্রুত প্রসার ঘটবে এবং কৃষক যেমন লাভবান হবেন তেমনই পুষ্টি পূরণে জনগণও উপকৃত হবেন বলে আমার বিশ^াস।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
চীনের অবিশ্বাস্য সামরিক উত্থানে টনক নড়েছে ভারতের
পারমাণবিক বোমা সজ্জিত নতুন যুদ্ধজাহাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন কিম
ধর্ষণের প্রতিশোধে বাবাকে হত্যা, গ্রেফতার ২ কিশোরী
আমাকে ধর্ষণ করার ভিডিও দেখে স্বামী
হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই
ফিলিপাইনে ৪০০ বিদেশি অনলাইন প্রতারক গ্রেফতার
ইসরাইলি ৪শ’ সেনা নিহত গাজায় স্থল অভিযানে
কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক
জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করতে হবে
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ
ভোলায় শীতার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ
গাজীপুরে বিএনপি নেতার উপর হামলা
চাঁদপুরে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা জসিম গ্রেপ্তার
বিভিন্ন বিভাগ ছোট হচ্ছে পাকিস্তানে
আশুলিয়ায় চাঁদার দাবিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে দোকানীকে গুলি
গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি নিয়ে ট্রাম্পকে সতর্ক করল জার্মানি-ফ্রান্স
৪ ভূখ-কে অন্তর্ভুক্ত করে ইসরাইলি মানচিত্র প্রকাশ
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
চলতি বছর বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমার পূর্বাভাস
যুক্তরাষ্ট্রের নাম মেক্সিকান আমেরিকা রাখার পরামর্শ