বিএনপি বিহীন নিরুত্তাপ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ফুরফুরে মেজাজে
১১ মে ২০২৩, ১১:০৩ পিএম | আপডেট: ১২ মে ২০২৩, ১২:০১ এএম
আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। তবে রাজপথের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না নির্বাচনে। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আছে ফুরফুরে মেজাজে। নির্বাচনে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নির্বাচনে নেই কোনো উত্তাপ।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে সদ্য সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক পুনরায় দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় প্রতিদিন ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি মেয়র পদে নির্বাচন না করলেও দলটির মাঠ পর্যায়ের অনেক নেতা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করবেন। তাদের যুক্তি স্থানীয় নির্বাচনে এলাকা ভিত্তিক অবস্থার ধরে রাখতে তারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেয়ে নির্বাচন করবেন। বিশেষ করে কয়েকটি ওয়ার্ডে বর্তমান এবং সাবেক কয়েকজন জনপ্রিয় কাউন্সিলর রয়েছেন। তারাও আছেন দোটানায়। একদিকে দলের নির্দেশনা উপেক্ষা করা তাদের পক্ষে যেমন ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে, তেমনি স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধির চেয়ারটি রক্ষা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, কেসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও মেয়র পদে এখন পর্যন্ত বিএনপি’র কোনো নেতার পক্ষে প্রার্থিতার বার্তা আসেনি। তবে মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, সাম্যবাদী দলসহ বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তফসিল অনুযায়ী, খুলনা সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৬ মে, বাছাই ১৮ মে, প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ মে ও ভোট ১২ জুন।
ইতোমধ্যে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরিবহন মালিক নেতা সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গফফার বিশ্বাস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও নগর সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের খুলনা জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য প্রকৌশলী সৈয়দ কামরুল ইসলাম, সাবেক বিএনপি ও জাপা নেতা এস এম মুশফিকুর রহমান মুশফিক, আগুয়ান-৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় আহবায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী। বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় খুলনায় আওয়ামী বিরোধী ভোটের দিকে তাকিয়ে আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। প্রতিটি ওয়ার্ডে অসংখ্য কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় ভোটারদের বিভিন্ন প্রকারে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন বলে আশ্বাস দিচ্ছেন তারা। তখন আওয়ামী বিরোধী ভোটাররা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভোট দেবে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনা বলেন, সিটি নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই আমাদের। আমরা এখন আন্দোলনে আছি। এসব নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। আমাদের কথা স্পষ্ট আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে তারপর এসব স্থানীয় নির্বাচন।
নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেয়র প্রার্থী ও ইসলামী আন্দোলনের মহানগর সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, বর্তমান দেশের সিংহভাগ মানুষের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয়ভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচন জাতীয় সরকারের অধীনে করার দাবি করে আসছে এবং সে অনুযায়ী তাদের কর্মসূচিও রয়েছে। তবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনটি স্থানীয় নির্বাচন। স্থানীয় নির্বাচনটিও জাতীয় নির্বাচনের আন্দোলনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। তিনি বলেন, এ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা এবং বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় তা ভোটারদের বুঝানোর জন্য আমরা নির্বাচনে অংশ নেব। কোনো ধরনের কারচুপি বা অনিয়ম হলে সেটা মেনে নেয়া হবে না। বরং এই ইস্যুতে আমাদের আন্দোল চলবে।
তিনি আরো বলেন, খুলনা নগরবাসী অনেক অধিকার থেকে আজ বঞ্চিত। তিনি বলেন, নগরীতে মাদক, জুয়াসহ নানা ধরনের অনৈতিক কাজ চলছে। এসব অনৈতিক কাজ বন্ধ করার জন্য আমরা পদক্ষেপ নেব। তিনি বলেন, শিল্প নগরী খুলনা এখন শিল্পহীন। তাই বেকারদের কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়া হবে। তিনি বিজয়ী হলে পরিকল্পিত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, সড়ক, ড্রেনসমূহ পরিবেশ সম্মত উন্নয়ন এবং সুশাসনের মাধ্যমে উন্নত নাগরিক সেবা নিশ্চিত করবেন।
মেয়র প্রার্থী ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য প্রকৌশলী সৈয়দ কামরুল ইসলাম বলেন, খুলনা নগরীর ট্রাফিক জটমুক্ত, দুর্নীতি, উন্নততর সড়ক, নগরবাসীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। মেয়র প্রার্থী ও আগুয়ান-৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নগরবাসীর অধিকারগুলোকে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আগুয়ান-৭১ এর তরুণরা রাজনীতিতে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিগত ৫০ বছরের গতানুগতিক রাজনীতি এবং দেশের এখন নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে আপত্তি থাকলেও আমরা মনে করি নির্বাচনকে তরুণদের একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়া উচিত। আমরা বিশ্বাস করি, এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান খুলনার রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করবে। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান বলেন, খুলনা সিটিকে উন্নয়নের মডেল বলে কেউ কেউ। কিন্তু আসলে কি সঠিক উন্নয়ন হয়েছে? এ প্রশ্ন আজ হাজারও মানুষের। সরকার ও দাতা সংস্থা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে শত শত কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু সেই উন্নয়ন আগামীতে জনভোগান্তিতে রূপ নিচ্ছে। প্রায় ১৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা নগরীর ড্রেনেজ ও সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে। অপরিকল্পিত এ প্রকল্প খুব শিগগিরই জনভোগান্তিতে রূপ নেবে। তিনি বলেন, আমাকে সুযোগ দিন, আমি বদলে দেবো। খুলনাকে এগিয়ে নিতে চাই।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
চীনের অবিশ্বাস্য সামরিক উত্থানে টনক নড়েছে ভারতের
পারমাণবিক বোমা সজ্জিত নতুন যুদ্ধজাহাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন কিম
ধর্ষণের প্রতিশোধে বাবাকে হত্যা, গ্রেফতার ২ কিশোরী
আমাকে ধর্ষণ করার ভিডিও দেখে স্বামী
হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই
ফিলিপাইনে ৪০০ বিদেশি অনলাইন প্রতারক গ্রেফতার
ইসরাইলি ৪শ’ সেনা নিহত গাজায় স্থল অভিযানে
কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক
জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করতে হবে
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ
ভোলায় শীতার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ
গাজীপুরে বিএনপি নেতার উপর হামলা
চাঁদপুরে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা জসিম গ্রেপ্তার
বিভিন্ন বিভাগ ছোট হচ্ছে পাকিস্তানে
আশুলিয়ায় চাঁদার দাবিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে দোকানীকে গুলি
গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি নিয়ে ট্রাম্পকে সতর্ক করল জার্মানি-ফ্রান্স
৪ ভূখ-কে অন্তর্ভুক্ত করে ইসরাইলি মানচিত্র প্রকাশ
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
চলতি বছর বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমার পূর্বাভাস
যুক্তরাষ্ট্রের নাম মেক্সিকান আমেরিকা রাখার পরামর্শ