ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে বিশ্রামাগার উদ্বোধন চলতি মাসেই

নিরাপদ হবে মহাসড়ক

Daily Inqilab কামাল আতাতুর্ক মিসেল

১৩ মে ২০২৩, ১০:৩৯ পিএম | আপডেট: ১৪ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে টেকসই ও নিরাপদ মহাসড়ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে পণ্যবাহী গাড়িচালকদের জন্য পার্কিং সুবিধাসহ বিশ্রামাগার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। তারই অংশ হিসেবে দেশের প্রথম পণ্যবাহী গাড়িচালকদের জন্য ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমসারে গড়ে তোলা হয়েছে একটি অত্যাধুনিক বিশ্রামাগার। এই বিশ্রামাগারটির শেষ মূহুর্তের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলমান রয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র বলছে, বিশ্রামাগার চালু হলে দেশের সড়ক মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমে যাবে এবং মহাসড়ক হবে নিরাপদ। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় চলতি মাসের শেষ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, দেশের মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে দূরপাল্লার পণ্যবাহী চালকদের কথা চিন্তা করে নির্মাণ করা হয় আধুনিক বিশ্রামগারটি। আধুুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দ্বিতল বিশিষ্ট বিশ্রামগারটিতে চালকদের নানাবিধ সুযোগ সুবিধা থাকবে। এখানে দূরপাল্লার পণ্যবাহী ট্রাক চালকরা সুবিধা ভোগ করতে পারবে। এখন উদ্বোধনের পর প্রতিষ্ঠানটি পাবলিক ইজারার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছে সওজ।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এক জেলা থেকে অন্য জেলায় চলাচলরত দূরপাল্লার পণ্যবাহী যানবাহন চালকরা সড়কে একটানা ৫ ঘন্টার বেশি গাড়ি চালানোর ফলে চালকদের একঘেয়েমিসহ ঘুমঘুমভাব তৈরি হয়। এতে মহাসড়কে নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়ে। তাই সরকারি ব্যবস্থাপনায় আধুনিক সুবিধা সম্বলিত বিশ্রামাগারগুলো নিমার্ণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এসব বিশ্রামাগারে দূরপাল্লার ট্রাক চালকরা বিশ্রাম নেয়ার জন্য দ্বিতল শয়নকক্ষে চালকদের রাত্রিযাপন, পণ্যবাহী গাড়ি পার্কিং, বিনোদন পয়েন্ট, ক্যান্টিন, গোসলখানা, নামাজের জায়গা, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা কক্ষ, গাড়ি মেরামতের জন্য ওয়ার্কশপ, ওয়াশজোন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, আধুনিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা, দুটি লেক, সবুজায়ন ও নিরাপত্তাপ্রাচীরে সীমিত আকারে খেলার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। যাতে চালকরা এই বিশ্রামাগারে বিশ্রাম নিয়ে সহজেই দূরবর্তী গৌন্তব্যে পৌঁছতে পারে।

এছাড়াও প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সড়কের দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। মহাসড়ক হবে নিরাপদ। এই বিশ্রামাগার স্থাপনের মাধ্যমে গাড়ি চালকদের মানসিক ও শারীরিক উৎকন্ঠা দুরীভূত করে আবারও তারা পরিপূর্ণভাবে গাড়ি চালনায় মনোনিবেশ করতে পারবে। এই প্রকল্পের আওতায় কুমিল্লাসহ সিরাজগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মাগুরা জেলায় আরে চারটি বিশ্রামাগার স্থাপন করা হচ্ছে। এইসব আধুনিক চারটি বিশ্রামাগার তৈরী করতে সরকারের দু’শ ২৬ কোটি ২১ লাখ টাকা নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে।

কুমিল্লার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান আলাউদ্দিন ট্রেডিং কোং লিমিটেডের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. আমান বিশ্বাস দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আধুনিক বাস টার্মিনালটি নির্মাণে যাবতীয় মান বজায় রেখে কাজ করা হয়েছে। বিশ্রামাগারের মূল কাজ মার্চ মাসেই শেষ হয়েছে। এখন সৌন্দর্যের কাজ চলছে।
এদিকে মহাসড়কের পাশে সরকারি এমন স্থাপনা নির্মাণে খুশি দূরপাল্লার পণ্যবাহী চালকরা। তারা বলছেন সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দেশের সড়ক মহাসড়কে দুঘর্টনা কমে যাবে। চালকরা নিবির্ঘেœ যাতায়াত করতে পারবে। দূরপাল্লা সড়কে নিয়মিত চলাচলরত ট্রাক চালক আলমগীর স্বপন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, প্রধান সড়কে নির্ধারন করা গাড়ী পার্কিং করার কোন জায়গা নেই আমাদের। তাই আমরা বাধ্য হয়েই এতদিন মহাসড়কেই পাশে গাড়ী রেখে বিশ্রাম নিতে হতো। এখন বিশ্রামগারটি চালু হলে আমরা বিশ্রাম নিতে পারবো। বিশ্রামের ফলে আমাদের শরীরও ভালো থাকবে আমাদের গাড়ীও নিরাপদে থাকবে। অপর চালক মমতাজ উদ্দিন বলেন, সরকার ভবনটি আমাদের জন্য নির্মাণ করায় এখন বিশ্রাম নেওয়া যাবে এবং সড়কে দুর্ঘটনাও কমে যাবে বলে জানান তিনি।

কুমিল্লার হাইওয়ে রিজিয়নের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, সরকারের এমন উদ্যোগের ফলে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুমিত চাকমা বলেন, ভবন নির্মার্ণের কাজ শেষ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, এখানে শুধু গাড়ী পার্কিং ও বিশ্রামগার নয় এখানে গাড়ী মেরামতের জন্য সুযোগ সুবিধাও থাকবে। এখানে খাওয়া, গোসল এবং নামাজ পড়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পার্কিংয়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় চলতি মাসের শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

জাকিরের পর ফিরলেন সাদমানও

জাকিরের পর ফিরলেন সাদমানও

খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার

খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার

জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান

ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের

গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের

পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন

পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি   - মুশফিকুর রহমান

আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা

মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ

মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ

কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত

কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত

চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ

শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ

ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ

ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ

রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ

সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল

আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু

আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু

বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি

বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি